|
|
|
|
অভিযোগ এইচডিএ’র |
অধিকারে না থাকা জমি অবৈধ লিজে, বিপাকে তমালিকা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
লক্ষ্মণ শেঠ নন্দীগ্রাম নিখোঁজ-কাণ্ডের মামলায় আপাতত জামিনে মুক্ত। এ বার বিপাকে তাঁর স্ত্রী, হলদিয়ার পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডাশেঠ। সিপিএম পরিচালিত ওই পুরসভার বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে জমি লিজে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ)। পুর-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সোমবার বিকেলে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছেন এইচডিএ-র মুখ্য-নির্বাহী আধিকারিক (সিইও) পি উলগানাথন। আর সকাল থেকেই তৃণমূল কাউন্সিলরেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন পুরভবনের সামনে। তমালিকাদেবী-সহ বাম কাউন্সিলরেরা এ দিন পুরভবনে ঢুকতেই পারেননি। |
|
হলদিয়া পুরসভার গেটে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। ছবি: আরিফ ইকবাল খান |
অভিযোগ, দেভোগে সুভাষ সরোবর সংলগ্ন ৯.৬৮ একর জমি (জেএল নম্বর ১৪৯) পুরসভা ‘সিরাজ খান ফিশারি’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থাকে বছরে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ৩০ বছরের লিজে চুক্তিতে দিয়েছে। ২০১০ সালে ওই জমি দেওয়া হয়েছে। সৌন্দর্যায়ন ও বাণিজ্যিক কাজের জন্য জমি লিজে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০০৯-এর ১১ ডিসেম্বর। বিজ্ঞপ্তিতে বোটিং, রিসর্ট-কটেজ, রেস্তোরাঁ, বুকশপ, বলরুম নির্মাণও প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এইচডিএ-র দাবি, সে সময়ে ওই জমির উপর পুরসভার কোনও অধিকারই ছিল না। সিরাজ খান ফিশারির মালিক সিরাজ খানের দাবি, “আমি তিন বছর ধরে ওই জমির জন্য ভাড়া বাবদ টাকা দিচ্ছি। কিন্তু এ বার চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ করতে গেলে বাধা আসে এইচডিএ-র কাছ
থেকে। আমি বুঝতে পারছি না, এখন কী করব।”
ওই জমির আসল মালিক কে? উলগানাথনের বক্তব্য, “ওই ৯.৬৮ একর জমি আসলে এইচডিএ-রই। পুরসভা অবৈধ ভাবে জমি লিজে দিয়েছিল। আমরা পুরসভার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছি।” সোমবার বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উজ্জ্বল ভৌমিক এবং এসডিপিও অমিতাভ মাইতি এইচডিএ অফিসে যান। সেখানেই তাঁদের হাতে অভিযোগপত্র তুলে দেন এইচডিএ-র সিইও। এসডিপিও জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা নথিভুক্ত হবে ভবানীপুর থানায়। পুরপ্রধান তমালিকাদেবীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে উপ-পুরপ্রধান নারায়ণচন্দ্র প্রামাণিক বলেন, “আমি যতটুকু জানি, ওই জমি এইচডিএ পুরসভাকে চুক্তিতে দিয়েছিল।” তাঁর দাবি, “দীর্ঘমেয়াদি লিজের জন্যও চুক্তি হয়েছে। তারপরেই আমরাও একটি সংস্থাকে লিজে দিয়েছি।”
কিন্তু জেলা প্রশাসনেরও বক্তব্য, জমিটি এইচডিএ-রই। ১৯৯৪ সালে লক্ষ্মণবাবু যখন এইচডিএ-র চেয়ারম্যান, তখন ১০ বছরের চুক্তিতে ওই জমি পেয়েছিল হলদিয়া পুরসভা (তখন অবশ্য ‘নোটিফায়েড অথরিটি’)। তারপরে ২০০০ সাল নাগাদ জমিটি দীর্ঘমেয়াদি লিজে পাওয়ার জন্য এইচডিএ-তে আবেদনও করেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তখন এইচডিএ কিছু শর্তের কথা জানালে পুরসভা আর এগোয়নি। তাই ২০০৪ সালেই লিজের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। সে সময়েও এইচডিএ-র চেয়ারম্যান লক্ষ্মণবাবুই এবং পুরপ্রধান তাঁর স্ত্রী তমালিকাদেবীই। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমন হাওলাদারের বক্তব্য, “যতটুকু জানি, পুরসভার সঙ্গে ২০০৪-এর পর ফের আর চুক্তি হয়নি এইচডিএ-র। তাই জমিটির এখন মালিক এইচডিএ-ই।” |
|
|
|
|
|