চাপ বাড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে নেই শরদরা
ফের কংগ্রেসকে প্রবল চাপে ফেলে আজ বিদায়ী রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের সম্মানে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে গরহাজির থাকলেন শরদ পওয়ার। প্রধানমন্ত্রী নিজে পওয়ারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেও তাঁকে রাজি করাতে পারেননি।
এনসিপি নেতারা আজ ফের জানিয়েছেন, তাঁরা ইউপিএ-তে আছেন এবং থাকবেন। কিন্তু ইউপিএ না ছেড়েও সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থনের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন তাঁরা। দলের নেতা প্রফুল্ল পটেল জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত তাঁরা কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন না। সেই মতো পওয়ার-সহ এনসিপি-র কোনও মন্ত্রীই আজ প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজে যাননি। নিজেদের দফতরেও তাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন।
এনসিপি সূত্রের খবর, আজ পওয়ারকে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, তাঁর দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখতে আরও কয়েক দিন সময় প্রয়োজন। এ বিষয়ে সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলও এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আজ বিদায়ী রাষ্ট্রপতির সম্মানে সংসদে চা চক্রের সময় প্রফুল্ল পটেলকে সনিয়া বলেন, কিছু করুন। পাশ থেকে সুষমা স্বরাজ বলেন, প্রফুল্ল, কিচ্ছু করবেন না!
দুই দলের নেতারাই মানছেন, সমস্যা যতখানি না কেন্দ্রে, তার থেকে অনেক বেশি মহারাষ্ট্রে। এনসিপি শিবিরের মূল অভিযোগ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চহ্বাণকে নিয়ে। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকেই সরানোর দাবি তুলেছে এনসিপি। কারণ, তিনি রাজ্যের এনসিপি-র মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন। আজও মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপি-র মন্ত্রীকে সেচ দফতরের দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। শুধু সেচ দফতর নয়, দিল্লিতে মহারাষ্ট্র সদন তৈরি ও আদর্শ আবাসনের দুর্নীতির ক্ষেত্রেও এনসিপি-র গায়ে যাতে আঁচ না লাগে, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন এনসিপি নেতৃত্ব। কংগ্রেসের একটা অংশও পৃথ্বীরাজকে সরাতে আগ্রহী। সেই সুযোগও নিতে চাইছে এনসিপি। কংগ্রেস নেতারা তাই বলছেন, ‘ছোট আগুন নেভাতে গিয়ে বড় আগুন লাগিয়েছেন পওয়ার।’
কেন্দ্রে পওয়ারকে আরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেওয়া, জোটের ক্ষেত্রে আরও বেশি সমন্বয় বা এনসিপি-কে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদ দেওয়ার মতো দাবিও রয়েছে। সঙ্কট কাটাতে এখন মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস নেতৃত্বকেও এনসিপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে। সেই মতো প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানিকরাও ঠাকরে আজ এনসিপি নেতা মধুকর পিছাড়কে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, জোটে সমন্বয় বাড়াতে তাঁরা আলোচনায় প্রস্তুত।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, সমস্যাটা অন্য জায়গায়। এনসিপি-র সঙ্গে যে সমঝোতা হবে, তার অনেক কিছুই প্রকাশ্যে ঘোষণা করা সম্ভব হবে না। কিন্তু তাতে এনসিপি-র লাভ কী? তারা তো চাইবে, তাদের যে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটা দেখাতে কিছু আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তও নেওয়া হোক। সব রকম সম্ভাবনাই তাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কংগ্রেসের কোন প্রস্তাব মানা হবে, কোনটা হবে না, তা নিয়ে আজ বিকেলে পওয়ার তাঁর বাসভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে দলের নেতা প্রফুল্ল পটেল বলেন, “আমরা গোটা বিষয়ে কাল-পরশুর মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। কেন্দ্রের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের কিছু বিষয়েও উদ্বেগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সনিয়াকে লেখা চিঠিতে এই সবই জানিয়েছেন পওয়ার।” তবে তাঁরা দুর্নীতির তদন্ত এড়াতে চাইছেন, এমন কোনও অভিযোগ মানতে নারাজ প্রফুল্ল। তাঁর দাবি, “এনসিপি দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। আমরাও স্বচ্ছ সরকার চালাতে চাই।”
পওয়ারের আর এক মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছেন পি এ সাংমার কন্যা আগাথা সাংমা। সাংমা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়তে এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন। আগাথাও বাবার সঙ্গে প্রচারে গিয়েছিলেন। দলে দাবি উঠেছে, আগাথাকে সরিয়ে পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে মন্ত্রী করা হোক। আগাথা পওয়ারের সঙ্গে দেখা করে জানিয়ে এসেছেন, দল যে সিদ্ধান্ত নেবে, তিনি তা মেনে চলতে রাজি। প্রয়োজনে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতেও তৈরি আছেন।
কংগ্রেস নেতারা অবশ্য মনে করছেন, এনসিপি-র পক্ষে চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ মহারাষ্ট্র হোক বা দিল্লি, একলা চলার শক্তি এনসিপি-র নেই। প্রফুল্লও জানিয়েছেন, “লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই কংগ্রেস এনসিপি-র জোট রয়েছে। আগামী দিনেও থাকবে।” কংগ্রেস নেতা জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, “জোটে এই ধরনের ওঠানামা চলতেই থাকে। আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.