পাহাড়ে জিটিএ-র নির্বাচন থেকে তৃণমূল সরে দাঁড়াবে বলে দলের অন্দরে আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। শনিবার ধর্মতলার সমাবেশ থেকে তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা ও বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রীর উপস্থিতিতে মমতা বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পাহাড়ে জিটিএ ভোটে প্রার্থী প্রত্যাহার করব।” আগামী ৪ অগস্ট পাহাড়ে নতুন জিটিএ বোর্ড শপথ নেবে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজে যাচ্ছেন। তাঁর অনুরোধে যাচ্ছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে আসতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। চিদম্বরম সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছেন।
জিটিএ ভোটে তৃণমূলের ১৭ জন প্রার্থী ছিলেন। তাঁরা অবশ্য সরকারি ভাবে এখনও ভোটের ময়দানে আছেন। কিন্তু মমতার ঘোষণার পর তাঁরা যে ‘সক্রিয়’ থাকবেন না, তা বলাই বাহুল্য। এ দিন প্রার্থীদের ‘ধন্যবাদ ও অভিনন্দন’ জানিয়ে মমতা বলেন, “ইতিমধ্যেই বিমল গুরঙ্গের নেতৃত্বাধীন মোর্চা জিটিএ ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে। তাঁদের সেলাম জানাই।” পাশাপাশিই তিনি বলেন, “তৃণমূল শুধু রাজনীতির জন্য লড়াই করে না। বাংলাকে ভাল রাখার জন্যে লড়াই করে। হরকা বাহাদুরদের সঙ্গে আমরা সংঘাতে যেতে চাই না। আমরা চাই পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের সম্পর্ক ভাল হোক।” |
তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না-দেওয়ায় পাহাড়ের তৃণমূল প্রার্থীরা কিছুটা ‘ক্ষুন্ন’। কিন্তু দলীয় নেতৃত্ব তাঁদের বুঝিয়েছেন, তৃণমূল নেত্রীর ‘জনভিত্তি’ তৈরি হচ্ছে বলে মোর্চার নেতৃত্বের মধ্যে একটা ‘আশঙ্কা’ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভোটের ফলাফল তৃণমূলের অনুকূলে না গেলে, বিশেষত, দলীয় প্রার্থীদের যদি ‘জামানত জব্দ’ হয় তাহলে দলনেত্রীর ‘ভাবমূর্তি’ই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। সেই কারণেই তৃণমূল নেতৃত্ব কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের ‘সুসম্পর্ক’ গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বেশ কয়েকবার দার্জিলিং সফর করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনঘন পাহাড় সফরে তাঁরা যে খুশি, তা জানিয়ে হরকা বলেন, “যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, তৃণমূলের সরকার থাকবে, ততদিন দার্জিলিংও রাজ্যে উন্নয়নের কাজ একসঙ্গে করবে।”
ম্যালে শপথ নেবে মোর্চা: দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তায় খোলা মঞ্চ বানিয়ে (জিটিএ)-এর সদস্যদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। শনিবার দার্জিলিঙে রাজ্যের মুখ্য সচিব সমর ঘোষ, স্বরাষ্ট্র সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোর্চা নেতাদের বৈঠকের পরে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৯ জুলাই জিটিএ-এর ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা। তার পরে ২ অগস্ট ফল প্রকাশ হবে। সব ঠিক থাকলে দু’দিনের মাথায় ৪ অগস্ট জিটিএ সদস্যদের শপথ নেওয়ার কথা। মোর্চার তরফেই ম্যালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। |