লন্ডনে পৌঁছে অলিম্পিক রেঞ্জে এ বার পাল্টে যাবে অনুশীলনের ধারা।
এত দিন জার্মানিতে হয়েছে টেকনিককে আরও ধারালো করার প্রস্তুতি। এ বার লন্ডনে চলবে, চাপের মুখে গুলি চালানোর প্রস্তুতি। সব সময় কানের কাছে বলা হবে, কেন জেতাটা দরকার। ব্যর্থ হলে কী জুটবে ভাগ্যে।
এক দিন বাকি মাঝখানে। সোমবারই অলিম্পিকে অংশ নিতে রওনা হচ্ছেন নাগের বাজারের ছেলে জয়দীপ কর্মকার। বাংলার ক্রীড়াবিদদের মধ্যে লিয়েন্ডার পেজ বাদে একমাত্র তাঁর নামই সম্ভাব্য পদকজয়ীদের মধ্যে রয়েছে।
জয়দীপ অবশ্য চাপ বাড়াতে রাজি নন বলেই মুখে বলছেন, বাস্তবে পদক জেতার সম্ভাবনা নেই তাঁর। বললেন, “পদকের কথা ভাবছি না। তবে ইদানীং কালে পারফরম্যান্স ভাল হয়েছে। জীবনের সবচেয়ে ভাল প্রস্তুতি নিয়েই লন্ডনে যাচ্ছি।”
অভিনব বিন্দ্রার জার্মান কোচের কাছে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এতদিন। কোচ তাঁকে দেখে বলেছেন, “এত তাড়াতাড়ি যে আমার কোচিংয়ে মানিয়ে নিতে পেরেছ, এটাই খুব ভাল লেগেছে। ছোটবেলা থেকে নানা কোচের কাছে শিখেও এই মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা দারুণ।” জার্মানিতে শেষ ট্রেনিং করেছেন ৩ তারিখ। তার পরে আর শ্যুটিং রেঞ্জের ধারেকাছে ঘেঁষছেন না। শনি, রবিও বাড়িতে পুরো বিশ্রাম। শুটিং শুরু করবেন ১৭ বা ১৮ তারিখে অলিম্পিকে রেঞ্জে পৌঁছে।
জার্মানিতে কেমন প্রস্তুতি হয়েছে? জয়দীপ যা হিসেব দিলেন, তাতে ৫৯২ থেকে ৫৯৮ পয়েন্ট তুলেছেন। গতবার এই প্রোন ইভেন্টে ৫৯৮ পয়েন্টে সোনা ছিল অলিম্পিকে। প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন? জয়দীপ বিশ্ব শ্যুটিংয়ের ‘গড অফ প্রোন’ বলে পরিচিত বেলারুশের সের্গেই মার্টিনভের কথা বললেন। মার্টিনভ দীর্ঘদিন শুটিং সার্কিটে রয়েছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন অনেক দিন। কিন্তু অলিম্পিকে ব্রোঞ্জের বেশি পাননি। দু’বছর আগে জয়দীপ সিডনি বিশ্বকাপে রুপো জেতেন মার্টিনভকেই হারিয়ে। “অলিম্পিকে কোনও পদক পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত শুধু মার্টিনভ। আমরা বাকিরা শুধু দিনের পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করব। সে দিন কে কেমন করে।” |
৩ অগস্ট সেই দিন। স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় যোগ্যতা অর্জনকারী রাউন্ড। সাড়ে চারটেয় ফাইনাল রাউন্ড। তিন তারিখের ওই তিন ঘণ্টাই জীবন পাল্টে দিতে পারে জয়দীপের। বললেন, “কোচ বলেছেন, যদি তুমি পারফরম্যান্সে আমায় খুশি করতে পারো, তা হলেই আমি খুশি। আর কিছু ভেবো না। সেটাই ভাবছি।”
লন্ডন ডাকছে। বাঙালির ছেলে তৈরি। |