ভুয়ো রেশন কার্ড নিয়ে অভিযোগ দিনের পর দিন জমা পড়ছেই। ‘নানা কারণে’ এতদিন ভুয়ো রেশন কার্ড ধরার কাজে নামতেই পারেনি খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। দেড় দশক বাদে শিলিগুড়িতে ভুয়ো রেশন কার্ড ধরতে অভিযানে নামল খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। দু’সপ্তাহ আগে মহকুমার বাছাই পাঁচটি রেশন দোকানে শুরু হয়েছে ভুয়ো কার্ড বাছাইয়ের কাজ। মহকুমা খাদ্য নিয়ামক কুন্দন সুব্বা দাবি করেন, “কর্মীর অভাবেই এতদিন অভিযান সম্ভব হয়নি। কর্মীর সমস্যা না-মিটলেও এ বার মহকুমা খাদ্য ও সরবরাহ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযান শুরু হয়েছে।” প্রাথমিক ভাবে ৮-৯ হাজার উপভোক্তার রেশন সরবরাহ করা হয় এমন পাঁচটি দোকানে তল্লাশি চলছে। তার মধ্যে মাটিগাড়া ব্লকের পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সিপিএম ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির রেশন দোকানও রয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ তুলে সরব হয় কংগ্রেস ও তৃণমূল। মঙ্গলবারও এই ব্যাপারে খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের রাজ্য দফতরেও তৃণমূল অভিযোগ জানায়। মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বেশি রেশন কার্ড রয়েছে এমন ৫টি দোকানে গত দু’সপ্তাহ ধরে অফিসাররা প্রতিটি কার্ড পরীক্ষা করছেন। আরও দু’সপ্তাহ অভিযান চলবে। কুন্দন জানান, অভিযান চলাকালীন মৃত ব্যক্তির কার্ড ফেরত নেওয়া এবং পরিবারের নতুন সদস্যের জন্য নয়া কার্ড বিলির কাজও একই সঙ্গে হচ্ছে। ২০১১ সালের জনগণনার যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে মহকুমার জনসংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষাধিক। মহকুমা খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের দাবি, রেশন কার্ডের সংখ্যাও কমবেশি তেমনই। যদিও রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, মহকুমার সিপিএম ঘনিষ্ঠ ডিলারদের দোকানে প্রচুর ভুয়ো কার্ড রয়েছে। মাটিগাড়ার সিপিএম ঘনিষ্ঠ ডিলারের দোকানেই প্রায় ৯০১টি বিপিএল তালিকাভুক্ত উপভোক্তার নাম নথিভুক্ত রয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। দলের নকশালবাড়ি ব্লক সভাপতি গৌতম কীর্তনীয়া অভিযোগ করেছেন, “ওই দোকানে কেবল বিপিএল, অন্নপূর্ণা এবং অন্ত্যোদয় প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ৩৬৩৬ জন। সপ্তাহে ওই দোকানে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর ১১০ কুইন্টাল খাদ্যশস্য সরবরাহ করে। সন্দেহটা এখানেই।” মহকুমা খাদ্য ও সরবরাহ আধিকারিকের বক্তব্য, কোন এলাকায় কতজনকে বিপিএল তালিকাভুক্ত করা হবে তা চূড়ান্ত করেছে পঞ্চায়েত দফতর। ওই তালিকা অনুযায়ী খাদ্যশস্য সরবরাহ হচ্ছে। তৃণমূলের তদন্তের দাবিকে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের শিলিগুড়ি মহকুমা কমিটির সম্পাদক ধীরেন সিংহও। |