আন্দোলনে তৃণমূল, কংগ্রেসকেও ডাক সূর্যের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
বেকারদের চাকরির দাবিতে আন্দোলনে ঝান্ডা ছেড়ে সামিল হওয়ার জন্য তৃণমূল এবং কংগ্রেস যুবদের কাছে আহ্বান জানানো হল বামফ্রন্টের মঞ্চ থেকে। রাজ্যে যে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করছেন, শিল্প না-হলে তার কিছুই সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বাম নেতারা। এবং সেই সূত্রেই তৃণমূল ও কংগ্রেসের যুব কর্মী-সমর্থকদের কাছে তাঁদের আহ্বান, চাকরির দাবিতে ঝান্ডা ছেড়ে তাঁরাও আন্দোলনে নামুন।
অবসরপ্রাপ্তদের পুনর্নিয়োগের প্রতিবাদে খাদ্য ভবনের সামনে সম্প্রতি সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের অবস্থানে লাঠি চালিয়েছিল পুলিশ। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বামপন্থী ১২টি ছাত্র-যুব সংগঠন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে রাজভবনে দাবিপত্র দিতে গিয়েছিল। ওই বিক্ষোভ সমাবেশেই ম্যাটাডোর-মঞ্চ থেকে বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক হবে। যাঁরা তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে রাজনীতি করেন, তাঁদের এক জনেরও ওই ব্যাঙ্ক থেকে চাকরি হয়েছে কি?” বামপন্থী ছাত্র-যুবদের প্রতি সূর্যবাবুর পরামর্শ, “তৃণমূলের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলে বলবেন, চাকরি হলে তাঁরা তৃণমূলের ঝান্ডা ধরেই যুগ যুগ জিও বলুন। না-হয়ে থাকলে ঝান্ডা ছেড়ে তাঁদের আসতে বলুন আপনাদের আন্দোলনে।”
সূর্যবাবুর ঠিক আগেই ফরওয়ার্ড ব্লকের যুব সংগঠন যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরী কংগ্রেসের যুবদের কাছে আবেদন জানান কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য।
চাকরির কথা বলতে গিয়েই সূর্যবাবুর প্রশ্ন, “কর্মসংস্থান হবে কোথায়? শিল্প, কল-কারখানা কোথায়? রেলে লক্ষ লক্ষ চাকরির কথা বলা হয়েছিল। রেলমন্ত্রী চাকরি দেবেন কী করে? এক জন রেলমন্ত্রীরই চাকরি চলে গেল! রেলের ওই লৌহ কপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট এটাই এখন স্লোগান হয়ে দাঁড়িয়েছে!” রাজ্য বামফ্রন্টের আইন অমান্যের কর্মসূচি রয়েছে ১৭ জুলাই। তা উল্লেখ করে সূর্যবাবু বলেন, “বিধানসভার ভিতরে-বাইরে লড়াই হবে। কোথাও বিচার না-পেলে আইন ভাঙতে হবে!”
বিধানসভায় প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্যানেলে যাঁদের নাম আছে, তাঁদের চাকরি দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে সমস্যার সুরাহা হয়নি, সে কথাও বলেন বিরোধী দলনেতা। আর অনির্বাণবাবু বলেন, “বামফ্রন্ট আমলে ওই পরীক্ষা হয়েছিল বলে যদি তা অবৈধ হয়, তা হলে বামফ্রন্ট সরকার থাকতে থাকতে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে জিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তা-ও অবৈধ!” ডিওয়াইএফআইয়ের আভাস রায়চৌধুরী, প্রতিম ঘোষ, এসএফআইয়ের সায়নদীপ মিত্রেরা সমাবেশে বক্তা ছিলেন। প্রসঙ্গত, পিএসসি-র প্যানেলভুক্ত হয়েও যাঁরা চাকরি পাননি, তাঁরা শীঘ্রই মানবাধিকার কমিশনে যাবেন। |