মগরাহাটে হারা ফকিরের মৃতদেহ যে দিন উদ্ধার হয়, তার আগের দিন ট্রেনযাত্রীদের হাতে তিনি গণপিটুনি খেয়েছিলেন বলে পুলিশ-সূত্রে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি হারার অপমৃত্যুর ঘটনায় তাঁরা নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি বলে পরিবারের দাবি।
মগরাহাট থানা ও স্থানীয় সূত্রের খবর: মগরাহাট বিলন্দপুর ফকিরপাড়ার বাসিন্দা হারার বিরুদ্ধে ট্রেনে ছিনতাইয়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে বারুইপুর ও ডায়মন্ড হারবার জিআরপি’তে। ছিনতাইয়ের মামলায় বেশ ক’বার তিনি গ্রেফতারও হন। দু’বছর আগে, ২০১০-এর ১৭ জুলাই সকালে মগরাহাট স্টেশনের কিছু দূরে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। মাথায় ও সারা শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। তদন্তে প্রকাশ, আগের দিন, অর্থাৎ ১৬ জুলাই বিকেলে মগরাহাট স্টেশনে এক মহিলার গলার হার ছিনতাই করতে গিয়ে যাত্রীদের হাতে ধরা পড়েন হারা ফকির। স্টেশনে তিনি গণপিটুনি খান। তদন্তকারীরা হারার স্ত্রী সালমা ও ভাই মুরারি ফকিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশ-সূত্রের খবর: তাঁরাও কারও দিকে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগের আঙুল তোলেননি। বরং সালমা স্বীকার করেন, তাঁর স্বামী নানা অসামাজিক কাজে জড়িত থাকতেন। নিয়মিত নেশা করতেন।
ময়না-তদন্তে জানা যায়, মারধরের কারণেই হারার মৃত্যু হয়েছে। তার পরে, গত মে মাসে মগরাহাট থানা অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। সালমাকে ফের থানায় তলব করা হয়। পুলিশের দাবি, হারার স্ত্রী তখনও নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ করেননি। উপরন্তু গত ৪ জুন সালমা ডায়মন্ড হারবার আদালতে বিচারকের কাছে যে জবানবন্দি (১৬৪সিআরপিসি) দেন, তাতেও তিনি স্বামীর মৃত্যুর জন্য কারও বিরুদ্ধে নালিশ জানাননি। হারার ভাই-সহ অন্য আত্মীয়দের ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের কাছ থেকেও কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না-পেয়ে পুলিশ শেষমেশ ‘অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের’ বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে। ইতিমধ্যে স্থানীয় মানুষের সাহায্যে মগরাহাট স্টেশনে দোকান দিয়েছেন সালমা। বছরখানেক আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের বাস্তুভিটেতেই বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন। |