খনির দেওয়াল ভেঙে ঢুকল নদী, আটক ১৬ শ্রমিক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
কয়লা পাওয়ার আশায় পরিত্যক্ত খনি গহ্বরে নেমেছিল ১৬ জন। খনির পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে নদী। কয়লার লোভে খনির সেই দেওয়ালেই হাতুড়ি-গাঁইতি চালাচ্ছিল ওই কয়লা অন্বেষীরা। সেই আঘাতেই ভেঙে পড়ে দেওয়াল। মুহূর্তে নদীর জল ভরে যায় খনি-গহ্বর। আটকে পড়া শ্রমিকরা বের হওয়ার সময় বা পথ, কোনওটাই পায়নি। তার পর প্রায় ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও অবৈধ খনি থেকে কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।
গত রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে মেঘালয়ের গারো পাহাড়ে। নাঙারবিবরা এলাকার নেংকুলের খনি এলাকায় পরিত্যক্ত গহ্বরে কয়েকজন্য কয়লা সংগ্রহকারী প্রবেশ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁরা সংখ্যায় ছিল ১৬ জন। নদীর জল গহ্বরে এত প্রবল বেগে প্রবেশ করে যে ভিতরে থাকা শ্রমিকরা খনিমুখ খুঁজে পাননি। ঘটনার পরে, শাস্তির ভয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পুলিশে খবর না দিয়ে পালায়। পরে পুলিশ এসেও জলে ভরা গহ্বরে প্রবেশ করতে পারেনি। আজ উদ্ধার কাজ শুরু করেছে আসাম রাইফেল্স। তবে স্থানীয় সূত্রে বলা হয়েছে, কারও বাঁচার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নাঙালবিবরার অন্য এক ঘটনায়, একটি খনি থেকে কয়লা তোলার সময় ক্রেন ছিড়ে ভারী যন্ত্রপাতি খনিগর্ভে আছড়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। জখম ৮ জন।
মেঘালয়ে কোনও নির্দিষ্ট খনি নীতি নেই। কয়লা সমৃদ্ধ মেঘালয়ের জয়ন্তি, গারো, খাসি পাহাড়ে বিজ্ঞানভিত্তিক কয়লা উত্তোলন হয় না বললেই চলে। খনি এলাকার যে কোনও স্থানে গর্ত খুঁড়ে কয়লা তোলা হয়। পরিত্যক্ত খনির গর্তে নেমেও স্থানীয় বাসিন্দারা বেঁচে যাওয়া কয়লার সন্ধান করে। এক গর্ত থেকে সুড়ঙ্গ করে অন্য গহ্বরে যাওয়া হয়। এই ‘র্যাট হোল মাইনিং’-এর ফলে মাটিতে খনিজের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে নদীর জলের রং। প্রতি বছরই অবৈধ খনিতে দম আটকে বা জল ঢুকে একাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। গত বছর অগস্ট মাসে, দক্ষিণ গারো পাহাড়ের সিজুতে, খনি গহ্বরে বিষাক্ত গ্যাসে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তাও এই পদ্ধতিতে রাশ টানা যায়নি। |