অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েই প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে ব্যাঙ্ক, মিউচুয়াল ফান্ডের মতো আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্যা মেটাতেই হবে। কারণ নতুন বিনিয়োগ, বিশেষ করে বিদেশি পুঁজি আনতে এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আজ সেই অনুযায়ীই ব্যাঙ্ক, বিমা ও মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাগুলির শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রঙ্গরাজন। কোথায় সমস্যা, তা জানার চেষ্টা করেন তিনি। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছন্দা কোচার বলেন, “কী ভাবে বিনিয়োগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়, সেটাই ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তার জন্য কী করা উচিত, কী ভাবে বিদেশি বিনিয়োগ টানা যায়, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।”
গত কালই রঙ্গরাজন বেশ কয়েক জন শিল্পপতির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। চড়া সুদের হারই যে শিল্পে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা, তা জানিয়ে দেন শিল্পপতিরা। আজকের বৈঠকে অবশ্য সুদের হার নিয়ে আলোচনা হয়নি বলেই রঙ্গরাজনের দাবি। তবে ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া-র সিএমডি তথা ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক’স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অলোক মিশ্র বলেন, “নতুন প্রকল্প আসছে না। বিনিয়োগ টানতে গেলে ঋণের খরচও কমাতে হবে। প্রকল্পের ছাড়পত্রও দ্রুত দিতে হবে।” সরকারি সূত্রের বক্তব্য, সুদের হার না কমলে ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে বেশি পরিমাণে ঋণ দেওয়া সম্ভব হবে না। ঋণের উপর সুদের বোঝা বেশি হলে, যাঁরা ঋণ নিচ্ছেন তাঁরা তা শোধ করতে পারবেন কি না, সে প্রশ্নও তৈরি হবে। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এজেন্টদের কমিশন প্রথা তুলে দেওয়ায় যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা নিয়েও আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়।
রঙ্গরাজন যেমন আর্থিক ক্ষেত্রের সমস্যা মেটাতে সক্রিয়, তেমনই মন্টেক পরিকাঠামো ক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখছেন। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি দ্রুত পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়ণেও জোর দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই ঠিক হয়েছে, প্রতি তিন মাস অন্তর পরিকাঠামো সংক্রান্ত সাতটি মন্ত্রকের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা হবে। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসের কাজের খতিয়ান এই মাসের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মন্টেক বলেন, “২০ জুলাইয়ের মধ্যে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেব।”
কিন্তু এত সব প্রচেষ্টার সুফল কবে থেকে দেখা যাবে?
মন্টেকের আর্জি, “অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিন। আগামী তিন মাসে অনেকটাই কাজ এগিয়ে যাবে।” তবে আর্থিক বৃদ্ধির হার খুব সহজে ৯ শতাংশে ফেরানো যাবে না বলেই তিনি মনে করেন। দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০১২-’১৭) তৈরির সময় আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল ৯%। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তা যে বাস্তবসম্মত নয়, সেটা মন্টেক নিজেই মানছেন। তবে এই পাঁচ বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮ থেকে ৮.৫ শতাংশ থাকবে বলেই তাঁর আশা। |