বেড়াচাঁপার শহীদুল্লাহ ও বসিরহাট কলেজে গণ্ডগোল ‘অনভিপ্রেত’ হলেও এর সঙ্গে ‘রাজনীতির যোগ নেই’ বলে মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক দলের সদস্য অরুণাশিস গোস্বামী। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ছোট ঘটনা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব।”
সোমবার বেড়াচাঁপার শহীদুল্লাহ স্মৃতি মহাবিদ্যালয় এবং বসিরহাট কলেজে যান পরিদর্শক দলের দুই সদস্য। ‘ইন্সপেক্টর অব কলেজেস’ (আইসি) অরুণাশিসবাবু ছাড়াও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য। অরুণাশিসবাবু বলেন, “দু’দল ছাত্রের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এসেছি। উভয় পক্ষের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি।” পরিদর্শক দলের রিপোর্ট পাওয়ার পরে আজ, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল বৈঠকে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য কৌশিক গুপ্ত।
গত শুক্রবার দুই কলেজেই দু’দল ছাত্রের মধ্যে মারামারি বাধে। বসিরহাট কলেজের প্রথম বর্ষের (পাস কোর্স) পরীক্ষার আসন পড়েছিল শহীদুল্লাহ কলেজে। অভিযোগ, নকল করতে বাধা দেওয়ায় ওই দিন বসিরহাটের ছাত্রেরা মারধর করে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। ভাঙচুর চলে কলেজে। পাল্টা প্রহৃত হয় বসিরহাট কলেজের ছাত্রেরাও। জখম হন দু’পক্ষের কয়েক জন। গণ্ডগোলের খবর বসিরহাট কলেজে পৌঁছয়। সেখানে আবার পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন শহীদুল্লাহ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদেরও কয়েক জনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শহীদুল্লাহ কলেজের এক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে ভর্তি করা হয় নার্সিংহোমে। বসিরহাট কলেজের ছাত্র অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি। |
এ দিন পরিদর্শক দলের দুই সদস্য কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাড়াও কথা বলেন অধ্যক্ষ, শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে। আহত ছাত্রদের সঙ্গেও দেখা করেন। অভিজিতের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলবেন বলে জানান। এ দিন তদন্তে যায় পুলিশও। ডিএসপি (সদর) পিনাকী দত্ত বলেন, “তদন্ত চলছে। তবে এখনও কেউ ধরা পড়েনি।”
শহীদুল্লাহ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা সুদেষ্ণা বিশ্বাস বলেন, “সে দিন বসিরহাট কলেজ থেকে মোটরবাইকে করেও প্রচুর ছাত্র আমাদের কলেজে ঢুকে তাণ্ডব করেছিল। সব ঘটনা জানিয়েছি। বসিরহাট কলেজের পরীক্ষা যেন আর কখনও আমাদের কলেজে না পড়ে। আমাদের পড়ুয়াদের যেন ওখানে পরীক্ষা দিতে যেতে না হয়, সেই আর্জিও করেছি।” বসিরহাট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ তলাপাত্র বলেন, “শহীদুল্লাহ কলেজের শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নেই। আমাদের ছাত্ররা মার খেয়েছে, সে কথাই পুলিশকে বলা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বহিরাগত তো দূরের কথা, পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থী বাদে অন্য ছাত্রদেরও কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না।”
এর আগে বারাসত ও মধ্যমগ্রাম কলেজেও পরীক্ষা দিতে গিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিল বসিরহাট কলেজের ছাত্রেরা। বারবার কেন গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠছে এই কলেজের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে? অধ্যক্ষ বলেন, “আমাদের ছাত্র সংখ্যা বেশি বলে কিছু সমস্যা হয়। তবে এটা বিছিন্ন ঘটনা। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, তা দেখা হবে।” অরুণাশিসবাবুর কথায়, “শুধু ওই কলেজই (বসিরহাট) নয়, এই সমস্যা অনেক জায়গায় হচ্ছে।”
এ দিকে, বারাসত সান্ধ্য কলেজে শনিবার প্রথম বর্ষে ভর্তি নিয়ে গণ্ডগোল বাধে। কিছু বহিরাগত কলেজে ঢুকে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। ‘হেনস্থা’ করা হয় শিক্ষাকর্মীদের। তার জেরে এ দিন কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। |