দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল
শেষ হয়নি নির্মাণ, নতুন বিভাগ চালু হতে দেরি
থাসময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ চালু পিছিয়ে গিয়েছে মাস ছয়েক। হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাসের অভিযোগ, পূর্ত দফতর কাজে গড়িমসি করাতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পূর্ত দফতর অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বছরখানেক আগে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ চালুর পরিকল্পনা নেয়। প্রাথমিক ভাবে তারা ৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় দেড় কোটি টাকায়। হাসপাতালের মূল ভবনের পাশে নতুন ভবন গড়ে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ চালুর সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সরকারি নিয়মে নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় রাজ্য পূর্ত দফতর। তারা দরপত্র ডেকে ঠিকাদার নির্দিষ্টও করে ফেলে। এ দিকে যে জায়গায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিটের ভবন গড়ার সিদ্ধান্ত নেন সেখানে কয়েকটি গাছ থাকায় প্রাথমিক ভাবে নির্মাণ কাজ শুরু করতে সমস্যায় পড়ে পূর্ত দফতর। তারা জানায়, গাছ কাটার দায়িত্ব তাদের নয়। গাছগুলির মালিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই যা করার করতে হবে তাদেরই। এ দিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অনড় থাকায় নির্মাণ কাজ শুরু হতে দেরি হতে থাকে।
এই ভবনেই হবে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’। ছবি: বিকাশ মশান।
দু’পক্ষের টানাপোড়েনে গুরুত্বপূর্ণ এই পরিষেবা চালুর সময়সীমা পিছিয়ে যাবে বুঝতে পেরে আসরে নামেন দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি মেটানোর পরামর্শ দেন। গাছ কাটার পরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। হাসপাতাল সুপার দেবব্রতবাবু বলেন, “প্রথমে পূর্ত দফতর বলেছিল, ৩১ মার্চ কাজ শেষ হয়ে যাবে। পরে তারা জানায়, ১ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।” সুপার জানান, এখনও ছাদ ঢালাই হয়নি। ছাদ ঢালাইয়ের পরে তিন সপ্তাহ ওই অবস্থায় রাখার নিয়ম। সব মিলিয়ে কাজ শেষ হতে হতে এখনও মাস দুয়েকের বেশি লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “পূর্ত দফতর কাজে ঢিলেমি করায় নির্দিষ্ট সময়ে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ চালু করা যাচ্ছে না। দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছি ওদের।”
জেলা ও কলকাতার কিছু হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনার পরে মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলিতে সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট চালু করার পরিকল্পনা নেয় রাজ্য সরকার। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ হলেও শুধু নির্মাণ কাজ সময়ে শেষ না হওয়ার জন্য পরিষেবা চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগী ও পরিজনেরা। তাঁদের দাবি, এই পরিষেবা চালু হলে জেলা ও কলকাতার হাসপাতালের উপরে চাপ কমবে। তাতে সার্বিক ভাবে চিকিৎসা পরিষেবার মান বাড়বে। উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি সাংসদ তথা চিকিৎসক রত্না দে নাগের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ দল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসে। রোগীরা বিষয়টি রত্নাদেবীকে জানান। পরে রত্নাদেবী বলেন, “যে ভাবে হোক সেপ্টেম্বরের আগেই কাজ শেষ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
পূর্ত দফতর অবশ্য নির্মাণ কাজে দেরিতে তাদের গাফিলতির অভিযোগ মানতে চায়নি। দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, হাসপাতালে একই সঙ্গে দু’টি কাজ শুরু করার কথা ছিল। ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ ভবনের পাশাপাশি বহির্বিভাগের সম্প্রসারণ কাজ। দ্বিতীয় কাজটি যথাসময়ে শুরু করতে পারায় তা এখন সমাপ্তির পথে। কিন্তু প্রথম কাজটি গাছ কাটা নিয়ে সমস্যার কারণে পিছিয়ে গিয়েছিল মাসখানেক। স্বাভাবিক ভাবেই কাজ শেষ হতেও দেরি হচ্ছে। পূর্ত দফতরের আসানসোল ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার মহম্মদ রাকিব অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গাছ কাটা নিয়ে সমস্যার কারণে নির্মাণ কাজ পিছিয়ে যাওয়ায় পূর্ত দফতরের বক্তব্যের সঙ্গে একমত মহকুমাশাসক। তিনি বলেন, “সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হতেই বিলম্ব হয়েছিল। তবে দিন কয়েকের মধ্যেই ছাদ ঢালাই হবে। ভিতরের বাকি কাজ দ্রুত সেরে ফেলা হবে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এনে রাখা হয়েছে। কাজেই পরিষেবা চালু হতে খুব একটা দেরি হবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.