গ্রন্থাগার উন্নয়নে ২ সিপিআই সাংসদ দিলেন ৩৮ লক্ষ টাকা
‘অবহেলিত’ গ্রন্থাগারগুলির উন্নয়নে অনেক আগেই সাংসদ-তহবিল থেকে অর্থ সাহায্যের দাবি উঠেছিল। কিন্তু এত দিন সে ভাবে কোনও সাহায্যই মেলেনি। তবে চলতি বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দুই সিপিআই সাংসদের সাহায্য মিলেছে। ভবিষ্যতে যাতে আরও সাহায্য মেলে বা প্রতিটি সাংসদই এ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সে জন্য গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষও আবেদন জানাবেন। মেদিনীপুরের জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎ পান বলেন, “রাজ্য সরকার গ্রন্থাগার উন্নয়নে টাকা দিয়েছে। আরও অর্থ দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে। তারই সঙ্গে দুই সাংসদও সাহায্য করেছেন। অন্য সাংসদেরাও যাতে সাহায্য করেন সেই আবেদনও জানানো হয়েছে।”
গত আর্থিক বছরে গ্রন্থাগার উন্নয়নে প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। আর রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন থেকে জেলা প্রশাসন পেয়েছিল আরও সাড়ে ৬৩ লক্ষের মতো। সব মিলিয়ে, গত আর্থিক বছরে জেলায় গ্রন্থাগার উন্নয়নে ১ কোটি ৪৭ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা মিলেছিল। তবে ওই টাকা আসে অর্থবর্ষের পরের দিকে। তাই এখনও সেই টাকায় উল্লেখযোগ্য কাজ হয়নি। এমনকী সমস্ত গ্রন্থাগারকে ওই টাকা ভাগ করে দেওয়াও সম্ভব হয়নি। যদিও দ্রুত গতিতে সেই টাকা গ্রন্থাগারগুলিকে দেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে জেলা গ্রন্থাগার দফতরের দাবি। কিন্তু বর্তমানে জেলার গ্রন্থাগারগুলি এতটাই বেহাল, তাতে ওই পরিমাণ টাকাও সামান্যই। দীর্ঘদিন অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকা গ্রন্থাগারগুলিতে আসবাবপত্রের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নেই পর্যাপ্ত বই। এমনকী বই-রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে বর্তমানে প্রতিযোগিতা-মূলক পরীক্ষার বিভিন্ন উপকরণ রাখাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেক গ্রন্থাগার-ভবনেরও চূড়ান্ত দুরবস্থা। সংস্কার জরুরি। আবার কোথাও রিডিং-রুম নেই। সম্প্রসারণ প্রয়োজন। এ রকম নানা সমস্যায় জর্জরিত জেলার গ্রন্থাগারগুলি। দরকার অর্থের। তাই, ২০১২-১৩ আর্থিক বছরের জন্য ২ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা প্রয়োজন বলে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জেলা গ্রন্থাগারিক বলেন, “চলতি আর্থিক বছরের জন্য ২ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা পাওয়া গেলে গ্রন্থাগারগুলিকে একটা মোটামুটি জায়গায় পৌঁছনো সম্ভব। তারপর ধীরে ধীরে সরকারি সাহায্যে বাকি কাজ করা সম্ভব হবে।”
এর বাইরে অবশ্য সাংসদদের সাহায্যের উপরেও ভরসা করে রয়েছেন গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছুদিন ধরেই দেশ জুড়েই দাবি উঠেছিল সাংসদেরাও গ্রন্থাগার-উন্নয়নে নিয়মিত সাহায্য করুন। সাংসদ তহবিল থেকে পানীয় জল-প্রকল্প, কালভার্ট তৈরি, স্কুলভবন নির্মাণ, নিকাশির উন্নয়ন-সহ বিভিন্ন কাজে অর্থ দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রন্থাগার উন্নয়নে তেমন কোনও প্রকল্প বা তহবিল নেই। সাংসদ-তহবিল থেকেও যাতে গ্রন্থাগার উন্নয়নে অর্থ দেওয়া হয়, সেই দাবি উঠেছিল। এই বছরই মেদিনীপুরের সাংসদ প্রবোধ পণ্ডা গ্রন্থাগার-উন্নয়নে ২২ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। মেদিনীপুর শহরে থাকা জেলা-গ্রন্থাগার ও ঋষি রাজনারায়ণ বসু স্মৃতি পাঠাগারকে বই ও আসবাবপত্র কেনার জন্য ৩ লক্ষ করে ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এর বাইরেও দাঁতনের অগ্নিবীণা গোষ্ঠী লাইব্রেরি, মোহনপুরের মোহনপুর গ্রামীণ গ্রন্থাগার, কেশিয়াড়ির শহিদ স্মৃতি পাঠাগার-সহ ১৬টি পাঠাগারকে এক লক্ষ টাকা করে অর্থ সাহায্য করেছেন।
ঘাটালের সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্তও ঘাটাল, দাসপুর, ডেবরা, পিংলা, সবং-সহ নিজের সাংসদ এলাকার ১৬টি গ্রন্থাগারকে ১ লক্ষ টাকা করে ১৬ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করেছেন। ঝাড়গ্রামের সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও জেলার চন্দ্রকোনা-১ ব্লকটি পড়ে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। যাতে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদও ওই এলাকার গ্রন্থাগারের জন্য অর্থ সাহায্য করেন, সেই আবেদন জানাবেন গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ।
জেলা গ্রন্থাগারিকের কথায়, “যদি প্রতি বছরই সাংসদেরা এ ভাবে সাহায্য করেন, তা হলে প্রতিটি গ্রন্থাগারই উপকৃত হবে।” প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সরকারি অনুদান পাওয়া গ্রন্থাগারের সংখ্যা ১৫৮টি। এর বাইরেও অবশ্য অসংখ্য ছোটখাটো গ্রন্থাগার জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.