আবাসন-কেলেঙ্কারি
অরূপের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি গৌতমের
বিধায়ক না-হওয়া সত্ত্বেও তাঁর এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম নিয়ে বিধানসভায় বিবৃতি দেওয়ায় আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করছেন তাঁর পূর্বসূরি সিপিএম নেতা গৌতম দেব। শুক্রবার আলিমুদ্দিনে এক সাংবাদিক বৈঠকে গৌতমবাবু এ কথা জানিয়ে বলেন, “আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছি।”
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বুদ্ধবাবু ও গৌতমবাবু-সহ একাধিক সিপিএম নেতার নামে বিবৃতি দিয়ে অরূপবাবু অভিযোগ করেন, তাঁরা ভাড়ার সরকারি ফ্ল্যাট বাজারদরের থেকে অনেক কম টাকায় কিনেছেন। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার তদন্ত করবে বলেও তিনি জানান। বর্তমান মন্ত্রী অরূপবাবু ওই ঘটনাকে বাম-জমানার ‘আবাসন কেলেঙ্কারি’ বলে উল্লেখ করেন বিধানসভায়। অরূপবাবুর তালিকায় অধুনা বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখের নামও রয়েছে।
ওই নেতারা যে সব সরকারি ভাড়ার ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেগুলি তাঁরা কিনে নিয়েছেন। বস্তুত, আবাসিকদের কাছে ফ্ল্যাটগুলি বিক্রির ব্যাপারে সরকারি নির্দেশ জারির পরে আবেদনের ভিত্তিতেই তাঁরা ফ্ল্যাটগুলি কিনে নেন। বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু বলেন, “যদি তদন্ত হয়, তা হলে যথাযোগ্য জায়গায় আমি আমার বক্তব্য জানাব।” প্রদীপবাবু বলেছিলেন, রাজ্য সরকারই তাঁকে এবং তাঁর মতো অনেককে ভাড়ার ফ্ল্যাট কেনার ব্যাপারে প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই টাকা তিনি মিটিয়েও দিয়েছেন। এর মধ্যে ‘অস্বচ্ছতা’ নেই। রাজ্যে প্রায় ১৬ হাজার সরকারি ফ্ল্যাট এ ভাবে আবাসিকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী গৌতমবাবু জানান। ক্রেতাদের মধ্যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীই আছেন জানিয়ে গৌতমবাবু বলেন, “বিধানসভায় যিনি নেই, তাঁর নাম করে কোনও অভিযোগ আনা যায় না। যদি কেউ অভিযোগ করেও থাকেন, বিধানসভার অধ্যক্ষ তা কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেন। সেই নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া হবে।”
ফ্ল্যাট বিক্রি নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করে গৌতমবাবু বলেন, “যে কোনও তদন্তের জন্য প্রস্তুত।” আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি বর্তমান আবাসন মন্ত্রীকেও আক্রমণ করেছেন তাঁর পূর্বসূরি। অরূপবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। গৌতমবাবু বলেন, “আমরা এ সব করতে চাই না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জ্ঞাতসারে যে ভাবে রোজ মিথ্যা কুৎসা করা হচ্ছে, একের পর এক তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দু’দিক থেকেই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হচ্ছি!”
গৌতমবাবু আবাসন মন্ত্রী থাকাকালীন ওই ফ্ল্যাটগুলি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন নথিপত্র পেশ করে গৌতমবাবু বলেন, “সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী থাকার আগে থেকেই রাজ্য সরকার এই ফ্ল্যাটগুলি বিক্রির কথা ভাবছে। কারণ, পাঁচ ও ছয়ের দশকে নির্মিত এই ফ্ল্যাটগুলি রক্ষণাক্ষেণের জন্য রাজ্য সরকারকে প্রচুর টাকা ভর্তুকি দিতে হত।” ফ্ল্যাটগুলি আবাসিকদের কাছে বিক্রির ব্যাপারে বিধানসভায় আলোচনা হয়েছিল। তখন তৃণমূল বা কংগ্রেসের কোনও নেতা আপত্তি করেননি। বরং তাঁরা সহমত হয়ে দ্রুত বিক্রির কথা বলেছিলেন বলেও গৌতমবাবুর দাবি। তিনি বলেন, “তৎকালীন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান বর্তমানে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও এ ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন তোলেননি। সিএজি-ও প্রশ্ন করেনি।”
তৃণমূলের সাংসদ রত্না দে নাগ-সহ একাধিক তৃণমূল নেতানেত্রী তাঁদের ভাড়ার আবাসন কিনে নিয়েছেন জানিয়ে গৌতমবাবু বলেন, “দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে জমির বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে অত্যন্ত পুরনো ফ্ল্যাটগুলির ব্যবহার জনিত ক্ষয়মূল্যও (ডেপ্রিসিয়েশন ভ্যালু) দেখা হয়েছে। তার পরেই দাম ঠিক করা হয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.