|
ছবি: অভিজিৎ সিংহ। |
ক’দিন পরেই ছিল বিয়ে। নিমন্ত্রণ-পর্বও প্রায় শেষ। খবর পেয়ে বুধবার সেই নাবালিকার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের লোকেদের নিরস্ত করল প্রশাসন। ঘটনাচক্রে বাঁকুড়া ১ ব্লকের পাথরচাল গ্রামের ১২ বছরের এই মমতা সরেন বিয়ে রুখে রাষ্ট্রপতির কাছে পুরস্কার পাওয়া অষ্টমী সরেনের খুড়তুতো বোন। বাঁকুড়া জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক নীলিমা দাসচৌধুরী খবর পেয়ে এ দিন ওই গ্রামে গিয়ে মধুবন গোয়েঙ্কা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মমতা, তার মা চূড়ামনি সরেন ও দিদিমা বদনী মাণ্ডিকে বাল্য বিবাহ কেন দেওয়া উচিত নয়, তা বোঝান। চূড়ামনিদেবী জানান, আগামী রবিবার মেয়ের বিয়ের দিন ধরেছেন। কেনা-সহ নানা কাজে টাকাও খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন পেছনো মুশকিল। বাল্যবিবাহ মেয়েদের শরীরের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর নীলিমাদেবী তা বোঝানোর পরে মমতার মা-দিদা বলেন, “প্রাপ্তবয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেব না বলেই ভাবছি।” নীলিমাদেবী বলেন, “পাত্র একটি সরকারি অফিসের অস্থায়ী কর্মী। মমতা প্রাপ্তবয়ষ্ক না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছি।”
|
বাড়ি থেকে ‘উৎখাত’ হওয়া জন্মান্ধ এক প্রৌঢ়াকে হোমে পাঠাল প্রশাসন। পুরুলিয়া শহরের সাবিত্রী বিশ্বাস নামের ওই মহিলাকে বুধবার পুরুলিয়ার (সদর) মহকুমাশাসকের নির্দেশে শহরের আনন্দমঠ হোমে পাঠানো হয়েছে। স্থায়ী ভাবে বাসস্থানের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত প্রৌঢ়াকে ওই হোমেই থাকবেন। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রের খবর, সাবিত্রীদেবীর আদি বাড়ি বিষ্ণুপুরে। বহু বছর আগে তাঁদের পরিবার পুরুলিয়ায় চলে এসেছিল। বাবার মৃত্যু হওয়ার পরে সাবিত্রীদেবী শহরের বিভিন্ন ভাড়া বাড়িতে থেকে গান শেখাতেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে সেই ভাড়া বাড়ি থেকেও কার্যত ‘উৎখাত’ হয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়া। ঠাঁই হয়েছিল পুরসভার একটি মার্কেট কমপ্লেক্সের সিঁড়ি ঘরের তলায়। মহকুমাশাসক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, মঙ্গলবার জে কে কলেজের শিক্ষক আবু সুফিয়ান-সহ কয়েক জন তাঁকে ওই প্রৌঢ়ার দুরবস্থার কথা জানান। এ দিন সাবিত্রীদেবীকে নিজের কার্যালয়েও নিয়ে এসেছিলেন মহকুমাশাসক। সুদীপ্তবাবুর কথায়, “নিরাশ্রয় ও জন্মান্ধ ওই মহিলার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা একান্তই জরুরি ছিল। তা ছাড়া উনি ভাল গান জানেন। এ দিন আমি ওঁর গান শুনেছি। ওই হোমে থেকে সেখানকার আবাসিকদের গান শেখাতেও পারবেন উনি।” হোম কর্তৃপক্ষকে সাবিত্রীদেবীর সঙ্গীতের দক্ষতাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ লিখিত ভাবেই দিয়েছেন মহকুমাশাসক। আশ্রয় পেয়ে অভিভূত সাবিত্রীদেবী বলেন, “এত দিন পরে আশ্রয় পেলাম। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আরও ভালো লাগছে মেয়েদের গান শেখাতে পারব বলে।”
|
ডাইনি অপবাদে সবু বাউরি নামে এক প্রৌঢ়াকে মারধর করা হয়েছে। পুঞ্চার বারমেশিয়া গ্রামের বাসিন্দা, বিধবা সবুদেবী গত শনিবার রাত থেকে পুঞ্চা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি। রবিবার তিনি পড়শি ফটিক বাউরি ও মধুসূদন বাউরির নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার ওই গ্রামে পুলিশ গেলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। বুধবার বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া শাখার কয়েক জন সদস্য সবুদেবীর সঙ্গে দেখাও করেন। নিঃসন্তান ওই মহিলার অভিযোগ, “আমার দূর সম্পর্কের ভাইপো ফটিক আর মধুসূদন বিভিন্ন অজুহাতে আমার সাথে ঝামেলা পাকায়। কয়েক বার মারধরও করেছে। শনিবার দুপুরে ওরা বাড়িতে এসে বলে, আমি ডাইনি। ওরা আমাকে জুতো দিয়ে পেটায়। ঘুঁষি-লাথিও মারে। আমি জ্ঞান হারাই।” যুক্তিবাদী সমিতির জেলা কমিটির সদস্য বঙ্কিম মুর্মু বলেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ফটিক বাউরির বছর দুয়েকের নাতি জন্মের পর থেকেই নানা অসুখে ভোগে। এর আগেও কুনজরের অভিযোগে সবুদেবীকে ওরা মারধর করেছে। প্রয়োজনে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হব।” মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব বলেন, “বারমেশিয়া গ্রামের ঘটনা সম্পর্কে বিশদে জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।” ফটিক ও মধু বাউরি ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি।
|
নিজস্ব চিত্র |
মা বকাঝকা করায় বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল দশম শ্রেণির এক ছাত্র। তিন দিন ধরে পালিয়ে বেড়ানো পাঁশকুড়ার সেই ছেলের সন্ধান মঙ্গলবার মিলল পুরুলিয়ার আদ্রায়। হাওড়া থেকে আসা শিরোমণি প্যাসেঞ্জার থেকে আরপিএফ কর্মী চন্দ্রদীপ পাণ্ডে অনির্বাণ প্রামাণিককে উদ্ধার করেন। আরপিএফের আদ্রা থানার ওসি রমেশ হাজরা বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার মোহনপুর গ্রামে অনির্বানের বাড়ি। মঙ্গলবার রাতেই তার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। এ দিন সকালে তার বাবা এসে ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে যান।” ময়না ব্লকের চঙরাচক জগদীশ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের ছাত্র অনির্বান স্কুলের ছাত্রাবাসেই থাকে। সে বলেছে, “শনিবার ছাত্রাবাস থেকে বাড়ি ফিরতেই মা বকাঝকা করে। অভিমানে বাড়ি থেকে পালাই। মঙ্গলবার হাওড়া থেকে ট্রেনে চেপেছিলাম। রাগ ভেঙেছে। এ বার বাড়ি ফিরব।” তার বাবা তপন প্রামাণিক ব্রজবল্লভপুর শ্রী হরি নিম্নবুনিয়াদি স্কুলের শিক্ষক ও চৈতন্যপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। তিনি বলেন, “দুঃশ্চিন্তা দূর হল।” |