কর্মীদের ধর্মঘটে ফের বন্ধ বাস।
হাজার অনুনয়-বিনয়ের পরে বুধবার একটি বাস কয়েক জন পরীক্ষার্থীকে নিয়ে যেতে রাজি হলেও মাঝ রাস্তায় বন্ধ-সমর্থকদের হাতে প্রহৃত হতে হয় বাস চালককে। বুধবার থেকে কৃষ্ণনগর থেকে চাপড়া ও মাজদিয়া হয়ে শিমুলিয়া, ভজনঘটি, কাঁদিপুর, খলিবোয়ালিয়া ও গেদে রুটের বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবারও দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নিত্যযাত্রীদের।
বাসকর্মীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে চাপড়ার শিমুলিয়ার জনা কয়েক যুবক এক বাসকর্মীর মোবাইল ছিনতাই করে। বুধবার চাপড়া থানায় একটি অভিযোগও হয়। তাঁদের দাবি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত এই রুটে বাস চালাবেন না তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। এ দিন আসাননগর মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজে প্রথমবর্ষের পরীক্ষা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় পড়ুয়াদের। মাজদিয়ার সুধীররঞ্জন লাহিড়ি কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁঁছতে গলদঘর্ম হতে হয় পড়ুয়াদের। পরীক্ষার্থীদের অনুরোধে সকাল ৯টা নাগাদ একটি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেন বাস মালিকেরা। অভিযোগ, কৃষ্ণগঞ্জের কাছে বাস থামিয়ে বন্ধের সমর্থক এক দল বাসকর্মী বেধড়ক মারধর করে চালককে। মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তৃণমূলের শান্তনু বিশ্বাস বলেন, “অনেক অনুরোধে একটি বাস চলে। কিন্তু চালককে মারধরের পরে আর বাস চালাতে রাজি হননি বাস মালিকেরা। ছোট গাড়ি জোগাড় করে কোনও রকমে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হয়।” বাসচালক অশোক ঘোষের অভিযোগ, “আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এর প্রতিকার চাই।” কখনও নিরাপত্তার দাবি নিয়ে কখনও আবার লছিমন বন্ধের দাবিতে এর আগেও বহুবার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাসকর্মীরা। সম্প্রতি টানা ১৫ দিন কৃষ্ণনগর থেকে রানাঘাট-আরংঘাটার বাস বন্ধ ছিল। নবদ্বীপের বিভিন্ন রুটের ২৩টি বাসও কর্মীবিক্ষোভের বন্ধ হয়ে যায় দীর্ঘদিন ধরে। কর্মীদের ধর্মঘটের জেরেই বন্ধ ছিল কৃষ্ণনগর থেকে মুরাগাছা-ধর্মদা বাস চলাচল।
নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির কার্যকরী সমিতির সদস্য অসীম দত্ত বলেন, “কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি। কিন্তু ওরা তো কোনও কথা শুনতেই রাজি নয়।” বাসকর্মীদের এই আন্দোলনে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের উদ্যোগ নিয়েও। জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক মলয় রায় বলেন, “আগাম ঘোষণা ছাড়া দিনের পর দিন বাস বন্ধ করা যায় না। এ রকম চলতে থাকলে আমরা পারমিট বাতিল করতে বাধ্য হব। সে বিষয়ে আলোচনাও শুরু করেছি।” |