সই জাল-বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন খোদ প্রণব মুখোপাধ্যায়। বিজেপি ও প্রতিদ্বন্দ্বী পূর্ণ সাংমার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ইউপিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী আজ বলেন, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিকাল ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার চিঠিতে তিনিই সই করেছিলেন। একই দিনে বিজেপির কড়া সমালোচনায় নামল কংগ্রেস। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতি ভোটকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পর্যায়ে নামিয়ে কুৎসা ছড়াচ্ছে বিজেপি। এর পরেও অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব এবং সাংমা নিজেদের অবস্থানে অনড়। প্রয়োজনে প্রণবের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তাঁরা।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেও ‘লাভজনক’ পদে রয়েছেন, প্রণবের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবি তুলেছিলেন সাংমা ও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। মঙ্গলবার রিটার্নিং অফিসার তা খারিজ করে দেন। এর পরেই সাংমা ও বিজেপি নেতারা দাবি করেন, আইএসআই-এর চেয়ারম্যান পদ থেকে প্রণববাবুর ইস্তফাপত্রে তাঁর সই জাল করা হয়েছে।
প্রণব আজ তিরুঅনন্তপুরমে। তাঁর কথায়, “এইসব অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন। আমার সই জাল হলে তো আমি অভিযোগ করব! আমার হয়ে অন্য কারও অভিযোগ করার কোনও অধিকারই নেই। সই দুটি আমার করা বলে আমিই যখন বলছি, তখন কার কী বলার থাকতে পারে?”
বিজেপি-র সমালোচনায় নেমেছে কংগ্রেসও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছেন, “বিজেপি কুৎসা প্রচারে নেমেছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের আচরণ নিন্দনীয়।” কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি ভোটের মর্যাদা ভুলে সেটিকে ছাত্র সংগঠনের নির্বাচনের স্তরে নামিয়ে আনতে চাইছে বিজেপি। যদিও বিজেপি নেতা অনন্ত কুমার বলেন, “শালীনতা রেখেই রাষ্ট্রপতি ভোটে লড়ছি। কোনওরকম অপশব্দ ব্যবহার করছি না। আশা করব শাসক দলও শালীনতা বজায় রাখবে।”
সই জাল-বিতর্কে আদালতে যাওয়ারও হুমকি দিচ্ছে বিজেপি। আজ লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজের বাড়িতে সাংমার সঙ্গে বৈঠক হয়। কিছু বিশিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গেও বিজেপি নেতারা কথা বলছেন। দলের এক নেতার কথায়, এখন যা পরিস্থিতি তাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষের পরেই সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন সাংমা। তবু বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায় বিজেপি, যাতে প্রণববাবুর নির্বাচন নিষ্কণ্টক না হয়।
আজ সাংমা ও বিজেপি নেতারা দিনভর প্রণববাবুর মনোনয়ন গ্রহণের পক্ষে রিটার্নিং অফিসার তথা রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেলের দেওয়া রায়ের প্রতিলিপি চান। সেক্রেটারি জেনারেল ওই রায় নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেন। সাংমা এর পর ওই প্রতিলিপি চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লেখেন। শেষ পর্যন্ত কমিশন সাংমাকে ওই রায়ের প্রতিলিপি দেওয়ার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেয়। |