|
|
|
|
গাছ কাটা নিয়ে ‘টালবাহানা’ আরামবাগের পঞ্চায়েতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল সংগ্রহে বাধাদানের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি আরামবাগের সিপিএম পরিচালিত তিরোল পঞ্চায়েতের। পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রের খবর, স্থানীয় মইগ্রাম ক্যানাল পাড় ও গোলডাঙায় হাজার তিনেক পরিণত সোনাঝুরি গাছ কেটে বিক্রি করার কথা। যা থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা আয় হওয়ার কথা পঞ্চায়েতের। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, বন দফতরের অনুমতি নিয়ে, যাবতীয় নিয়ম মেনেই গাছ কাটা শুরু হয়েছিল। প্রায় চল্লিশ শতাংশ গাছ কাটা হয়ে যাওয়ার পরে হঠাৎ আপত্তি তোলে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, গাছগুলি অপরিণত। তৃণমূলের বক্তব্য, বিডিও কিছু দিন আগেই ওই গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে কাটা গাছ রাস্তায় পড়ে আছে। বিডিও মৃণালকান্তি গুঁইয়ের কথায়, “বিষয়টি বন দফতরকে জানানো হয়েছে। তারাই তদন্ত করে বলবে, গাছগুলি অপরিণত কিনা।” বন দফতরের আরামবাগ শাখার রেঞ্জ অফিসার চন্দ্রশেখর মাহাতো বলেন, “চিহ্নিত করা গাছ পরিণত। কিন্তু সেগুলি ছাড়া আর কোনও গাছ কাটা হচ্ছে কিনা, তার তদন্ত হবে।”
প্রধান স্বান্তনা বাগের অভিযোগ, তৃণমূল সরকার এক দিকে যখন পঞ্চায়েতগুলিকে স্বনির্ভর হতে বলছে, তখন তাদের দলের এই বাধাদান মোটেই কাম্য নয়। এই টাকা পেলে পঞ্চায়েতরই উন্নয়ন হত। এ বিষয়ে তৃণমূলের তিরোল অঞ্চল সভাপতি সুদীপ্ত চক্রবর্তী জানান, গাছগুলির বয়স মাত্র সাত-আট বছর। বর্ষার আগে ক্যানালের ধারের গাছগুলি কাটা হলে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও আছে। এ সব কারণেই গাছ কাটা বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
তবে এই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের দুই ‘গোষ্ঠীর কোন্দল’ থাকতে পারে বলে মনে করেন দলেরই একাংশ। গাছ কেনার বরাত পেতে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা মারপিটও হয়েছে। দুই গোষ্ঠীর লোকজনই একে অন্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অবশ্য সরাসরি মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
চন্দ্রশেখরবাবু জানান, সোনাঝুরি গাছ ৮-১০ বছর হলেই পরিণত বলা চলে। সেই মতোই গাছগুলি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। গত ৩ জুন নিলামে ৩ হাজার গাছের দাম ওঠে ৭ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। পর দিন থেকেই গাছ কাটা শুরু করে স্থানীয় ঠিকাদার।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল।
তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে ছোটখাট সংঘর্ষ বাধে। তৃতীয় দিন তৃণমূলেরই এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে গাছ কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন বিডিও। যদিও সেই নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতিতে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বিডিও পদাধিকারবলে নিজেই ওই সমিতির সদস্য। তাঁর উপস্থিতিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বিডিও অবশ্য বলেন, “গাছ অপরিণত কিনা, সেই তদন্তের জন্যই গাছকাটা আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|