এক টানা ৫৮ দিন চলার পরে অবশেষে মঙ্গলবার রাতে উঠে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের ধর্মঘট। এ দিনই দিল্লি হাইকোর্ট এক নির্দেশে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে এয়ার ইন্ডিয়া কতৃর্পক্ষকেও আদালত নির্দেশ দেয়, তাঁরা যেন পাইলটদের সুবিধা-অসুবিধা, অভিযোগগুলি সহানুভূতির সঙ্গে দেখেন। ধর্মঘটী পাইলটদের কথা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ। রাতেই মুম্বইয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে ইন্ডিয়ান পাইলটস গিল্ডের (আইপিজি) তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ধর্মঘট তুলে নেওয়া হচ্ছে। |
দিল্লি হাইকোর্টে দেখা করে গত কালই ধর্মঘটী পাইলটরা জানিয়েছিলেন, যদি তাঁদের বরখাস্ত হওয়া সহকর্মীদের কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাঁদের ইউনিয়নের হারানো স্বীকৃতি ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তবে তাঁরা কাজে যোগ দিতে প্রস্তুত। হাইকোর্ট এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে, ওই ১০১ জনকে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে দেখতে। সমস্যা সমাধানে আজ হাইকোর্ট যে ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছে, তাতে তাঁরা খুশি বলে জানিয়েছেন আইপিজি-র যুগ্ম সম্পাদক তৌসিফ মুকাদম। ধর্মঘটী পাইলট এবং এয়ার ইন্ডিয়ার কর্তাদের ৫ জুলাই বিকেল সাড়ে চারটেয় মুখ্য শ্রম কমিশনার এন কে প্রসাদের সঙ্গে দেখা করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকে অন্তর্দেশীয় উড়ান সংস্থা ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। এতে এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটরা মনে করতে থাকেন তাঁদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রতি সুবিচার করেননি কর্তৃপক্ষ। ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স থেকে আসা পাইলটদের বোয়িং ড্রিমলাইনার চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারেও আপত্তি ছিল তাঁদের। ছিল আরও কিছু দাবি-দাওয়াও। বার বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে না আসায় পাইলটরা আইপিজি-র নেতৃত্বে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন। ৭ মে থেকে ধর্মঘটে শামিল হন ৪৩৪ জন পাইলট। ২৪ জুন থেকে দিল্লি ও মুম্বইয়ে অনির্দিষ্ট কালের অনশন ধর্মঘটে বসেন ২০ জন পাইলট। ৫৮ দিনের ধর্মঘটে সরকারের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। এরই মধ্যে কিংফিশার এয়ারলাইন্সের পাইলট ও কর্মীদের একাংশ বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট শুরু করেছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, তা পুরোপুরি ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ওই সংস্থার কর্তৃপক্ষ। কিংফিশার এয়ারলাইন্সের তরফে বলা হয়েছে, তাঁদের কোনও কর্মী ধর্মঘট করছেন না এবং তাঁদের সমস্ত উড়ান নির্দিষ্ট সূচি মেনেই চলছে। |