আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস চাঙ্গা করতে প্রয়োজনীয় ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী রাজ্য সরকার।
মঙ্গলবার পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই, আইসিআইসিআই, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া-সহ বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ১২টি ব্যাঙ্কের সঙ্গে বৈঠক শেষে পার্থবাবু জানান ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তাঁর দাবি সংস্থার ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা ব্যাঙ্কগুলির আস্থা অর্জন করেছে। সরকার পরিবর্তনের পরে ব্যাঙ্ক প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে ৪ বার বৈঠক করল রাজ্য।
হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস নিয়ে রাজ্য সরকারের সক্রিয় ভূমিকায় আর্থিক সংস্থাগুলি সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে আরও টাকা ঢালার আগে তারা চায় সংস্থায় নতুন পুঁজি আসুক। সেই পুঁজি প্রধান দুই মালিক পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও চ্যাটার্জি গোষ্ঠী নিজেরা ঢালতে পারে। অথবা নতুন বিনিয়োগকারী এনেও পুঁজি টানার শর্ত পূরণ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে তারা হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর আগামী দু’বছরের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জানতে চায়। অর্থাৎ ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার মতো জায়গায় আসতে সংস্থার পরিকল্পনা জানতে চায় ব্যাঙ্কগুলি। |
এই লক্ষ্যেই খরচ কমানো ও আয় বাড়ানোর নির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করেছে সংস্থা। সংস্থা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ৫০ কোটি টাকা ঋণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। ন্যাপথা কেনার জন্য এখনই প্রয়োজন ৩০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১০০০ কোটি টাকার ঋণ চায় সংস্থা। আপাতত ৪৩০০ কোটি টাকার ঋণের বোঝা রয়েছে। পার্থবাবু জানান এই পরিকল্পনা ঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে লোকসানের বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে না। তিনি বলেন, “কারখানা গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এক বারও বন্ধ হয়নি। বাজার চাঙ্গা হচ্ছে। ন্যাপথা কেনার টাকা পেলে পুরোদস্তুর উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। চলতি মাস থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া চালু হবে।”
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ব্যাঙ্কগুলির কাছে জমা দেওয়া ব্যবসায়িক পরিকল্পনা কার্যকর করা কঠিন কাজ নয়। তার প্রধান কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে ন্যাপথার দাম কমেছে। ফলে উৎপাদন খরচ কমবে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পণ্য উৎপাদন করবে সংস্থা। তাদের পণ্যের দাম কমেনি, তাই মুনাফা বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হবে। সংস্থা সূত্রের খবর, ২০১২ ও ২০১৩ আর্থিক বছরে লাভের জায়গায় থাকবে সংস্থা। অন্তত কর দেওয়ার আগে পর্যন্ত সংস্থা ১৩০০ থেকে ১৪০০ কোটি টাকা লাভ করবে। সে ক্ষেত্রে ঋণ শোধ করার মতো সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি হবে। আইনি বিবাদের জেরে সংস্থায় ইন্ডিয়ান অয়েল বা ওএনজিসি-র শাখা সংস্থা মাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড-এর লগ্নি টানতে এখনও সফল হয়নি রাজ্য।
তবে, ব্যাঙ্ক ঋণ পেতে আগেই সক্রিয় হয়েছে রাজ্য। জুনের গোড়ায় শিল্পমন্ত্রী তথা সংস্থার চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেও সংস্থার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্যের তরফে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন মন্ত্রী। গত ফেব্রুয়ারিতেই পেট্রোকেমিকেমের আর্থিক স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখতে প্রথম বার রাজ্য ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল। |