সাফাই, ‘আইন জানি না’
কাছিম মেরে পাত পেড়ে খাওয়ালেন উপপ্রধান
মাছ ধরার জালে আটকে পড়েছিল কাছিম। তবে সে আর নিস্তার পায়নি। আত্মীয় পরিজন ডেকে সেই কচ্ছপের মাংসেই এলাহি আয়োজন করলেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান।
মুর্শিদাবাদের মির্জাপুর পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের সেই উপপ্রধান শ্রীকান্ত সরকার অবশ্য কোনও অনুশোচনা নেই। নির্বিকার গলায় তাঁর সাফাই, “বন্যপ্রাণ আইনে যে কাছিমের মাংস কেতেও বাধা তাই তো জানতাম না!”
গ্রামের বহু মানুষই অবশ্য জানতেন। সকালে কচ্ছপটি ধরা পড়ার পরে শ্রীকান্তবাবুকে তাঁরা অনেকেই সতর্কও করেছিলেন। গ্রামের পরিচিতজনের অনেকেই কাছিমটিকে জলায় ছেড়ে দেওয়ার জন্য অমপরামর্শ দেওয়ায় পাল্টা শুনতে হয়েছিল, ‘চুপচাপ ভোজ খেয়ে নে দেখি!’ গ্রামবাসীদের অনেকেরই এমন অভিযোগ। পুলিশ ও বন দফতরের কাছেও এ খবর পৌঁছিয়েছে। তবে সারা দিনে তা নিয়ে বিশেষ হেলদোল চোখে পড়েনি তাদেরও। রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকের গণকর গ্রামের ওই জলাশয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বহু দিন ধরেই মাছ ধরেন। কিন্তু সেখানে যে কাছিম রয়েছে তা টের পাননি তাঁরা। বড় জলাশয়। শ্যাওলা আর দলের আড়ালে সেখানে ওয়েট ল্যান্ড প্রজাতির কাছিম থাকতেই পারে। তাদের আকার আয়তনও বেশ বড়। এ দিন যে কাছিমটি ধরা পড়ে সেটিও প্রায় ২০ কেজি ওজনের।
রঘুনাথগঞ্জ বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার কাশীনাথ অধিকারী বলেন, “আইনত কচ্ছপ ধরা নিষিদ্ধ। সোমবার দুপুরেই ওই উপপ্রধানের কাছিম ধরার কথা কানে এসেছে।” বন দফতর এ ব্যাপারে তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সে ব্যাপারে গ্রামবাসীদের তেমন ভরসা নেই। তাঁরা স্পষ্টই জানান, ‘‘ও সব মুখের কথা।”
পঞ্চায়েত প্রধান নীলিমা দাসও তাঁর সহকর্মীর কাছিম মারার কথা শুনেছেন। তিনি কবুল করেন, “গ্রামাঞ্চলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তবে উপপ্রধান অজান্তেই এই অপরাধ করে ফেলেছেন বলে মনে হয়।” পঞ্চায়েতের তরফে এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি? আমতা আমতা করতে থাকেন নীলিমাদেবী।
স্থানীয় বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “আইন জানি না বলে অজুহাত খাড়া করলে তো চলবে না, সংস্লিষ্ট দফতরকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। ওই পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে আমার এ ব্যাপারে কথা হয়েছে।”
ব্লক কংগ্রেস সভাপতি দিলীপ সিংহ ঘটনাটি শুনেছেন। তবে উপপ্রধানের পাশে দাণড়িয়ে তিনিও এ ব্যাপারে দোষ দেখছেন বন দফতরের। দিলীপ বলেন, “আইন করলেই তো হবে না। মানুষকে সচেতন করতে এ ব্যাপারে প্রচার করতে হবে। তা বন দফতর করে না।” গ্রামবাসীদের অনকেই তো ওই উপপ্রধানকে কাছিম-শিকারে নিষেধ করেছিলেন?
দিলীপবাবুর কাছে উত্তর মেলেনি।
পরস্পরের উপরে দোষারোপ না করে আমরা সচেতন হব কবে?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.