এ বারের বন্যায় কোচবিহারের দুই মহকুমায় ১০ কোটিরও বেশি টাকার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, রাস্তাঘাট, মাছ চাষ সহ নানা ক্ষেত্রে ওই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুফানগঞ্জ মহকুমায় বেশি। কোচবিহার সদর মহকুমায়ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “প্রাথমিক ভাবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি টাকার বেশি বলে রিপোর্ট মিলেছে। পূর্ণাঙ্গ হিসেব নিকেশ হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। সোমবারের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ করে আমরা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতে চাইছি।” জেলা প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, জুনের শেষ সপ্তাহে জেলার ওই দুই মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার জেরে শতাধিক গ্রাম জলবন্দি হয়ে পড়ে। আবাদী জমি, বীজতলা, রাস্তা, বাঁধ, মাছ চাষ ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তার মধ্যে মাছ চাষ ও রাস্তার মতো কিছু বিষয় ছাড়া সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রাথমিক হিসাব সম্পূর্ণ হয়েছে। তাতেই ওই বিপুল ক্ষতির হিসাব উঠে এসেছে। ওই ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রেই আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষের এলাকার মধ্যে রয়েছে প্রায় ২,৫০০ হেক্টরের আমন ধানের বীজ তলা, ৫০০ হেক্টরের আউশ ধান ক্ষেত, ১,৫০০ হেক্টরের পাট খেত ছাড়াও অনন্ত ১ হাজার হেক্টরের সবজি খেত। জেলার মুখ্য কৃষি আধিকারিক অরুণ রায় বলেছেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ৪ হাজার হেক্টর জমির এলাকা তুফানগঞ্জ মহকুমায়। প্রাথমিক ভাবে ওই আর্থিক ক্ষতির হিসাব হলেও ফের বৃষ্টি শুরু হলে তা বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের বোরো মরসুমে গম, সর্ষের মতো মিনিকিটের দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।’’ কৃষি ছাড়া তুফানগঞ্জের নাককাটি গছে রায়ডাকের বাঁধ ভেঙেছে, নদীর জলের তোড়ে উড়েছে দ্বীপোরপাড়-হরিরহাট যাওয়ায় রাস্তা, ধলপলে শিকদারের খাতায় নির্মীয়মাণ সেতুর একাংশ ভেসে যাওয়ার মতো নানা ঘটনায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “কোচবিহারে আরও কিছু বাঁধও বন্যায় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার সংখ্যাও বেশ কিছু রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা হলে সবই তাতে থাকবে।” সভাধিপতি বলেন, “পুকুর ও জলায় চাষের মাছ বন্যায় ভেসে ওঠায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য দফতরকে ওই ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। ওই তালিকা পেলে তাদের কীভাবে সাহায্য করা যায় তার চেষ্টা হবে। |