উত্তরের চিঠি

অবিলম্বে খাঁড়ি সংস্কার জরুরি
সেচ ব্যবস্থার উন্নতিতে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-দিঘি, খাঁড়ির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচীনকালের প্রজা হিতৈষী রাজারা এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে বহু জলাশয় তৈরি করেছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরে কাশিয়া খাঁড়ি এমন এক জলাধার। মনে করা হয়, পাল রাজাদের আমলে এটি খনন হয়েছিল।
এখন আর এ রকম জলাধার খনন তো হয়ই না, উল্টে যে সব জলাধার আছে সেগুলিও সংস্কারের অভাবে জল ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। বর্তমানে মাটির নীচ থেকে জল তুলে কৃষিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে, এটি অবৈজ্ঞানিক। এতে ভূগর্ভের সঞ্চিত জল ভাণ্ডারের অপচয় হচ্ছে, সঙ্গে জমির উর্বরা শক্তিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অর্থ ও সম্পদের অপচয় হচ্ছে মারাত্মক ভাবে। কৃষিকে বাঁচাতে এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নতিতে অবিলম্বে বৃষ্টির জলকে নদী-নালা-খাল-বিল-খাঁড়িতে ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এই উদ্দেশ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের কাশিয়া খাঁড়িকে সংস্কার করা বিশেষ জরুরি। এটি জেলার দীর্ঘতম খাঁড়ি। গঙ্গারামপুর থানার পুনর্ভবা নদীর উজান অংশ থেকে খাঁড়িটি উৎপন্ন হয়ে জেলার চারটি ব্লকের মধ্য দিয়ে পূর্ব- দক্ষিণে বিয়াল্লিশ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে আত্রেয়ী নদীতে পড়েছে। কাশিয়া খাঁড়িটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কৃষি-সেচ ব্যবস্থায় এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে সংস্কারের অভাবে খাঁড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের দীর্ঘতম কাশিয়া খাঁড়ি।
সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কৃষিভূক্তি খাঁড়িটি সংস্কার করে তা সেচ প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথম ধাপে থাকছে দৈর্ঘ্য অনুযায়ী এর নিচু তলার লেভেল ঠিক করা। দ্বিতীয় ধাপে খাঁড়ির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তৃতীয় ধাপে এই জলাধারের উপর নির্ভর করে ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প তৈরি হবে। চতুর্থ ধাপে জলাশয়গুলিতে মৎস্য চাষ এবং খাঁড়ির দুই ধারের উঁচু পাড়ে বনসৃজন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। খাঁড়িটি সংস্কারে সময় লাগবে পাঁচ বছর। ব্যয় হবে এক হাজার সাতশো চুয়াল্লিশ লক্ষ টাকা।
এই প্রকল্পটি ঠিক মতো কার্যকরী হলে জেলায় অতিরিক্ত দুই হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। সংলগ্ন এলাকার মানুষদের কৃষিকাজের সুবিধে হবে। ফসল উৎপাদন বাড়বে। খাঁড়ির অতিরিক্ত জল নদীতে প্রবাহিত করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
কৃষি নির্ভর দক্ষিণ দিনাজপুরের মধ্য দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে প্রবাহিত কাশিয়া খাঁড়ি গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জ, তপন ও বালুরঘাট ব্লককে সেচ সুবিধে দিয়ে আত্রেয়ী নদীতে মিশেছে। এই চারটি ব্লকের ভাগ্যলক্ষ্মী হতে পারে কশিয়া খাঁড়ি। পঞ্চায়েতের টালবাহানায় কাজ আটকে আছে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে দ্রুত এর সংস্কার প্রয়োজন।
সুকুমার সরকার। দক্ষিণ দিনাজপুর গত মে মাসে প্রশাসনের তরফ থেকে কয়েক দিন মাইক বাজিয়ে ঘোষণা করা হয় যে, ঝলঝলিয়ে কানির মোড় থেকে কোতুয়ালী পর্যন্ত রাস্তাটি আরও চওড়া করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য রাস্তার দুই পাশের বেআইনি দখলদাররা যেন তাঁদের তৈরি করা ঘরগুলো সরিয়ে নেন, অন্যথায় প্রশাসন রাস্তার দুই ধার পরিষ্কার করে দেবে।
সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষই এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। এই কাজ আরও আগেই শুরু করা উচিত ছিল। অঞ্চলে যানবাহনের চাপ এত বেড়ে গিয়েছে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা হয়েছে। প্রাণহানী হয়েছে। এ ছাড়া ছোটখাট দুর্ঘটনা তো নিত্যসঙ্গী।
তবে রাজনৈতিক চাপে কাজটি কত দিনে সম্পন্ন হবে সেটাই দেখার। ইতিমধ্যে ওই রাস্তার দখলদারদের ভবিষ্যত নিয়ে বিভিন্ন মহলে চিন্তাভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বলা বাহুল্য, যার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্য। ওই সব দখলদারদের প্রতি সহানুভূতি, সহমর্মিতা সকলেরই রয়েছে। কিন্তু এদের অনেকেই এটাকে তাদের ন্যায্য অধিকার বলে মনে করছে। এ সবের ফলে গোটা পরিকল্পনাটি যদি হিমঘরে চলে যায়, তাহলে প্রশাসনই এর জন্য দায়ী থাকবে। কারণ দখলকারীরা স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনে এ ভাবে দখল করে বসেছে। সে দিন প্রশাসনের কর্তারা নির্বিকার ছিলেন।


এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
উত্তরের চিঠি,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি- ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.