একদিকে চলছে পথনাটিকা। আরেক দিকে দোকানে দোকানে গিয়ে চলছে বোঝানোর পালা। শুরু হয়েছিল জনা কয়েক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের দিয়ে। পরে তা সাধারণ মানুষের মিছিলে পরিণত হয়। যোগ দেন পুরসভার কর্মীরাও। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত শিলিগুড়ির শিরোপা বজায় রাখতে রবিবার সকালে এই দৃশ্য দেখলেন গেটবাজারের বাসিন্দারা। সবশেষে, সাতদিনের মধ্যে সমস্ত প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন গেটবাজারের ব্যবসায়ীরা। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “সামান্য কিছু মানুষ এখনও প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন। ব্যবসায়ীদের একাংশ কিছু গ্রাহকের দাবি মেনে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন। আমরা সকলের কাছে ক্যারিব্যাগের অপকারিতা জানিয়ে তা বর্জনের আহ্বান করেছি। আশা করছি, সকলে আমাদের পাশে থাকবেন। বাজার কমিটির পক্ষ থেকেও সাতদিনের মধ্যে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার সাত দিনের মধ্যে বন্ধ করতে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে।” |
বিক্রেতাদের সচেতন করতে প্রচার। ছবি: কার্তিক দাস। |
এদিন সকালে ন্যাফের অনিমেষবাবু ছাড়াও সুজিত রাহা, প্রদীপ ধর সহ জনা ১৫-এর একটি দল প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বর্জনের ডাক দিয়ে গেটবাজারে প্রচার শুরু করেন। সংগঠনের কয়েকজন তরুণ-তরুণী প্ল্যাকার্ড হাতে দোকানের সামনে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বোঝান। অনেকে লুকিয়ে রাখা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বের করে ন্যাফের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। অন্তত দেড়শোটি দোকানে গিয়ে ওই আবেদন জানান ন্যাফের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সদস্যরাও। ব্যবসায়ীরা বলেন, “আমরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ রাখা বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু অনেক গ্রাহক এসে খোঁজ করেন। বাধ্য হয়ে ফের রাখতে শুরু করেছি। এবারে আর রাখব না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শৈলেন্দ্র স্মৃতি পাঠাগারের পক্ষ থেকে এ দিন বাজারের সামনের রাস্তায় একটি পথনাটিকা পরিবেশন করা হয়। ‘আইনের আয়নায়’-নামে ওই নাটকে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারে সমাজের বিভিন্ন ক্ষতিকারক দিকগুলি তুলে ধরা হয়। নাটকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে তা না ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। এদিন সকালে ওই সংগঠনের পক্ষে মহাবীরস্থানেও পথনাটিকা হয়। সংগঠনের সদস্য কৌশিক দত্ত বলেন, “প্লাস্টিকের ক্যারিবাগ ব্যবহারে কী ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে তা সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। পথনাটিকা হওয়ায় অনেক মানুষ ভিড় করে তা দেখছেন। তারপরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ না ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।” অনিমেষবাবু বলেন, “সবাই মিলে যখন নেমেছি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত শিলিগুড়ির শিরোপা বজায় থাকবে।” |