রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কিত সম্পাদকীয় ‘যে যেখানে’ (২৩-৬) প্রসঙ্গে এই পত্র। পত্রিকার সম্পাদকীয় মন্তব্য “আর এস পি ‘রেভিলিউশনারি’ সোশালিস্ট পার্টি ... নিজেকে সর্বদাই বিশুদ্ধতর ‘বিপ্লবী’ বলিয়া প্রচার করিয়া থাকে। লিয়ন ট্রটস্কির ‘নিরন্তর বিপ্লব’-এর তত্ত্ব বহুকালই অতীতের গর্ভে বিলীন, ভারতে তাহা অনুশীলনের প্রশ্নও নাই, তথাপি বিপ্লবিয়ানা অতি বিষম বস্তু।”
নীতিগত কারণে কংগ্রেসের প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন না-করার বিষয়ে আর এস পি-র সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে আপনারা আর এস পি-র দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অস্বচ্ছতার কারণেই বোধহয় তাকে ‘ট্রটস্কিবাদী’-র ও নিরন্তর বিপ্লবের তত্ত্বে আস্থাশীল বলেছেন, আর এস পি-র মধ্যে বিপ্লবিয়ানাও খুঁজে পেয়েছেন।
আর এস পি আনুগত্যবাদ-বিরোধী মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী দল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিপ্লবী জাতিয়তাবাদী ধারার উৎস থেকে আর এস পি-র জন্ম। আর এস পি কোনও দিনই ট্রটস্কির নিরন্তর বিপ্লবের তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিল না। কারণ, বিপ্লব রফতানি করা যায় না। সমসাময়িক স্তালিনবাদ ও স্তালিনবাদী পার্টি হিসাবে যে বস্তুকে চোখের সামনে দেখছি, সেটা ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে অতীতে একটা মৃতদেহের গলন এবং পচন। কার্যত আর এস পি-র বিরুদ্ধে স্তালিনবাদীরা শারীরিক আক্রমণ ছাড়াও যে ভাষায় রাজনৈতিক আক্রমণ শানিয়ে থাকে পত্রিকার সম্পাদকীয় কলমে সেই সুরই ধ্বনিত। অতীতে শঙ্করদয়াল শর্মাকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের সময়েও আর এস পি-র একই ভূমিকা ছিল।
রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের বিরোধের সুযোগ নেওয়ার জন্য মৌলিক রণকৌশলের পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের মাধ্যমে পার্টি সম্মেলনে গৃহীত অবস্থান থেকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে যাওয়া আর এস পি-র পক্ষে সম্ভব নয়।
অশোক ঘোষ। সাধারণ সম্পাদক, ইউ টি ইউ সি, পঃ বঃ রাজ্য কমিটি
|
তাজুদ্দিন আহমেদের ‘কতটা পথ হাঁটলে পরে চাকরি পাওয়া যায়?’ (২০-৬) প্রশ্নটি আজকের পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, উকিল, ব্যবসা বা শিল্প ম্যানেজার, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট বা কলেজ-ইউনিভার্সিটির প্রফেসর বা নিদেনপক্ষে উচ্চমাধ্যমিক বা মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক হওয়ার মতো পাঠগত যোগ্যতা রাখেন না অথচ সাধারণ (কম নম্বর পাওয়া) স্নাতক, উচ্চমাধ্যমিক বা মাধ্যমিক বা তার কাছাকাছি অবধি পড়াশোনা করেছেন তাঁরা কী চাকরি পেতে বা কাজ করতে পারেন, সেটি একটি বড় সমস্যা।
বিশেষ করে এই স্তরের জন্য যে কোনও রকম সরকারি চাকরি একটি বড় আকর্ষণ। কারণ, আমাদের দেশে এখনও অধস্তন স্তরে সরকারি চাকরির মাইনে, সুবিধা ও চাকরির নিশ্চয়তা সমপর্যায়ের বেসরকারি চাকরির তুলনায় অনেক বেশি। ফলে, ২,০০০ পুরুষ হোম গার্ডের এবং ৫০০ মহিলা হোম গার্ডের পদের জন্য যথাক্রমে ৬,০০,০০০ এবং ১,০০,০০০ দরখাস্ত পড়েছে। ফলে, প্রায় সকলেই নিরাশ হতে বাধ্য। সরকারি চাকরি পাওয়াটা যেন একটি লটারি পাওয়ার মতো। তাই সরকারি চাকরি কোনও সমাধান হতে পারে না।
ড্রাইভার, নিরাপত্তা কর্মী, শপিং মল বা দোকানের বা ছোট অফিসের কর্মচারী, হোটেল-রিসর্ট, হাসপাতাল কর্মচারী, সাইবার কাফে কর্মচারী ইত্যাদি চাকরি আছে। কিন্তু তার সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অল্প। স্বনির্ভর কাজও (চাকরি নয়) আছে। আমি কিছু দিন আগে এক অটোচালকের সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে জানলাম, যে তিনি কেমিস্ট্রি অনার্স স্নাতক। ছোট দোকানে সাপ্লাইয়ে বহু লোক ভাল পয়সা আয় করেন। কোচিং ক্লাস ও টিউশনি তো আছেই।
দেশে বড়, মাঝারি ও ছোট ব্যবসা ও শিল্পের দ্রুত বৃদ্ধি হলে সব রকম চাকরি ও অন্য কাজের সুযোগ দ্রুত বাড়ে। তাই সমস্ত সরকারের এই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া খুবই দরকার।
আলোক সরকার। কলকাতা-২৯
|
কলকাতার কড়চা বিভাগে ‘অভিনেত্রী’ শিরোনামে (১১-৬) এক কালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রয়াত তপতী দেবী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে তাঁর ‘প্রথম ছবি নিউ থিয়েটার্সের মহাপ্রস্থানের পথে’। এই তথ্য ঠিক নয়। তপতী দেবীকে প্রথম বার পর্দায় দেখা যায় সুশীল মজুমদারের পরিচালনায় ‘পাত্রী চাই’ ছবিতে। ছবিটি ১৫-০২-১৯৫২-তে মুক্তি পায় কলকাতার শ্রী, প্রাচী, পূর্ণ ইত্যাদি চিত্রগৃহে।
শুভায়ু সাহা। খাগড়া, মুর্শিদাবাদ
|