রাস্তা সারানোর জন্য গাছ কাটার প্রতিবাদ করায় এক দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ও কর্মীদের বিরুদ্ধে। হুগলির দাদপুর থানার ঝাউবাদ গ্রামের ঘটনা। জখম শেখ মোজাম্মেল হক ও তাঁর স্ত্রী আখতার নেক নবিকে শুক্রবার ভর্তি করা হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের উদ্যোগে গ্রামের একটি রাস্তা চওড়া করার জন্য মাটি ফেলার কাজ চলছে। বুধবার দুপুরে পেশায় ধান ব্যবসায়ী মোজাম্মেলের বাড়ির সামনে সাত-আটটি নারকেল, আম, তাল গাছ কেটে ফেলা হয়। ব্যবসায়ীর দাবি, তা দেখে তিনি প্রতিবাদ করলেও একশো দিনের কাজের শ্রমিক ও পঞ্চায়েতের লোকজন কান দেননি। গাছ কেটে ফেলা হয়।
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে মোজ্জামেল দাবি করেছেন, বৃহস্পতিবার সকালে এক দল লোক বাঁশ-লাঠি নিয়ে চড়াও হয় তাঁর বাড়িতে। নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় মাকালপুর পঞ্চায়েতের কয়েক জন সদস্য ও কর্মী। তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে এনে বেধড়ক মারধর করা হয়। স্ত্রীকেও রেয়াত করেনি আক্রমণকারীরা। পরে দু’জনকে একটি ঘরে আটকে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। মোজাম্মেলের দুই ছেলে তখন বাড়িতে ছিলেন না। পরে তাঁরা এসে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাবা-মাকে ভর্তি করান। শুক্রবার চুঁচুড়া হাসপাতালে শুয়ে ওই ধান ব্যবসায়ী বলেন, “আমার একটাই অপরাধ, বড় বড় গাছগুলো চোখের সামনে কেটে ফেলা সহ্য করতে পারিনি। ওদের বারণ করে বলি, এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়। গাছ না কেটে বরং রাস্তার নকশা একটু পরিবর্তন করা হোক। কিন্তু ওরা ভুল বুঝে মারধর করল।” |
জখম মোজাম্মেল। ছবি: তাপস ঘোষ |
ওই গাছগুলি কাটার ব্যাপারে তাদের আগাম অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেই বনদফতরের চুঁচুড়া শাখা সূত্রের খবর। পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের গুরুচরণ সিংহ বলেন, “রাস্তার কাজ নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রকল্পের শ্রমিকদের কিছু ঝামেলা বেধেছিল। তবে গাছ কাটাকে ঘিরেই ওই ঘটনা কি না, জানি না।” পোলবা-দাদপুর ব্লকের তৃণমূল নেতা তথা হুগলি জেলা পরিষদ সদস্য মনোজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, “গাছ কাটার প্রতিবাদ করায় কাউকে মারধর করা হয়ে থাকলে খুবই অন্যায় হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” ঘটনায় দলের কেউ জড়িত থাকলে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। |