আজীবন নির্বাসিত সুধীন্দ্র, শাস্তি বাকি চার ক্রিকেটারকেও |
ওয়াগার ও পারে লর্ডসগেটের প্রধান অভিযুক্ত সলমন বাট হাজতবাস করে বাড়ি ফিরলেন। এ পারে স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে ভারতীয় বোর্ড পাঁচ ক্রিকেটারকে নির্বাসিত করল।
এদের মধ্যে মধ্যপ্রদেশের মিডিয়াম পেসার টি পি সুধীন্দ্রকে আজীবন নির্বাসিত করেছে বোর্ড। ইন্ডিয়া টিভি-র গোপন ক্যামেরা অভিযানে ধরা পড়েছিল, মধ্যপ্রদেশ প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে টাকার বিনিময়ে নো বল করেছেন সুধীন্দ্র। আইপিএল নিয়েও একাধিক প্রলোভনমূলক প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার অভিযোগ ছিল সুধীন্দ্রের বিরুদ্ধে।
মহম্মদ আজহারউদ্দিনের পর সুধীন্দ্রই একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার যিনি গড়াপেটার দায়ে আজীবন নির্বাসিত হলেন। বাকি জীবনে আর কখনও বোর্ড অনুমোদিত কোনও টিমে তো তিনি খেলতে পারবেনই না, বোর্ডের বেনোভোলেন্ট ফান্ড বা বেনিফিট ম্যাচ জাতীয় অনুদান থেকেও বরাবরের জন্য ছাঁটাই হয়ে গেলেন। কিন্তু সুধীন্দ্রর শাস্তি ছাপিয়ে অনেক বেশি করে যে প্রশ্ন উঠে পড়েছে তা হচ্ছে, বোর্ড বা আইসিসি-র দুর্নীতি দমন শাখা কি তা হলে হাত গুটিয়ে বসে থাকছে? লর্ডসেগেট প্রকাশ্যে এনেছিল বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। তাদের মতোই গোপন ক্যামেরা অভিযান চালিয়ে সুধীন্দ্রদের কেলেঙ্কারি ফাঁস করে ইন্ডিয়া টিভি। অথচ আইসিসি-র নিজস্ব দুর্নীতি দমন শাখা রয়েছে। মোটা মাইনে দিয়ে দুঁদে গোয়েন্দা রাখা হয়েছে। আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে দুর্নীতি আটকানোর জন্য পেশাদারদের নেওয়া হয়েছে। তার পরেও আইসিসি বা বোর্ডের গোয়েন্দারা আজ পর্যন্ত একটা দুর্নীতির ঘটনাও নিজেরা ধরতে পারেননি। উল্টে আরও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। |
কঠিন শাস্তি: শ্রীবাস্তব ও সুধীন্দ্র |
উত্তরপ্রদেশের পেসার এবং কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে আইপিএল খেলা সলভ শ্রীবাস্তবকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাসিত করেছে বোর্ড। গোপন ক্যামেরা অভিযানে ধরা পড়েছিল, শ্রীবাস্তব স্পট ফিক্সিং করতে রাজি হচ্ছেন। যদিও সেই গড়াপেটা হয়নি বলে এখন দাবি করা হচ্ছে। তবু অপরাধ করতে রাজি হওয়ার জন্য শ্রীবাস্তবকে কড়া শাস্তি দিয়েছে এন শ্রীনিবাসন, অরুণ জেটলি এবং প্রাক্তন সচিব নিরঞ্জন শাহকে নিয়ে তৈরি বোর্ডের তিন সদস্যের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। মধ্যপ্রদেশের ব্যাটসম্যান মণীশ মিশ্র (যিনি এ বারের আইপিএলে ছিলেন পুণে ওয়ারিয়র্সে), গোয়ার স্পিনার অমিত যাদব এবং হিমাচল প্রদেশের অলরাউন্ডার অভিনব বালিকে এক বছর করে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ক্রিকেটে দুর্নীতি ঠেকানোর জন্য বোর্ড এখন নতুন কোড অব কন্ডাক্ট আনার কথা ভাবছে। যেখানে ধরা পড়লে কঠোরতম শাস্তির কথা বলা থাকবে। অনেকে পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন, আইপিএলে কোন ক্রিকেটার কী করছে সে দিকে লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব সেই তো ছেড়ে রাখা হবে বোর্ড বা আইসিসি গোয়েন্দাদের হাতে। যাঁরা এখন পর্যন্ত একটাও অপরাধের ঘটনা ধরতে পারেননি। ঘরোয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে দুর্নীতি ঠেকাতে সব প্লেয়ারকে নিলামে তোলার কথা বলেছিল বোর্ড। সেটাও সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি মেনে নেবে কি না সেই ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। |