পর পর দু’দিন ছুটি দিয়ে সরকারি স্কুলের ভিতর শ্যালিকার বিয়ের অনুষ্ঠান করে বিপাকে পড়েছেন মানিকচক খানপুর ম্যানেজড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সনৎ মিশ্র। স্কুল চত্বরে রান্না করে ক্লাসঘরে অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছিলেন ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও তাঁর আত্মীয়েরা। শ্যালিকার বিয়ে দিতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দিন স্কুল ছুটি দেওয়ায় মানিকচকের ধরমপুরের খানপুর এলাকায় অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, “এ-রকম ঘটনা এখানে প্রায়ই ঘটে। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নেন না।” |
দু’দিন স্কুল ছুটি দিয়ে স্কুলের ভিতর বিয়ের ঘটনা জানার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রামপ্রবেশ মণ্ডল। তিনি বলেন, “ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হবে। মানিকচক সার্কলের এসআইকে এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শুক্রবার দুপুরে মানিকচকের ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের দোতলায় বরযাত্রীরা রয়েছেন। নীচের দু’টি ঘরে খাওয়াদাওয়া চলছে। বৃহস্পতিবার বিয়ে হয়েছে। শুক্রবার মেয়ের বিদায় পর্ব। তাই এ দিনও স্কুল ছুটি। স্কুলের পাশেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সনৎ মিশ্রের বাড়ি। কেন স্কুল ছুটি দিয়ে স্কুলে বিয়ের আসর বসালেন? সনৎবাবু বলেন, “আমার শ্বশুরবাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। শ্যালিকার বিয়ে ঠিক হয়েছিল মালদহের বামনগোলার নালাগোলার বাসিন্দা এক পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে। ছেলের বাড়ির লোকেরা বনগাঁয় বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না। সেই জন্য আমি আমার বাড়ি থেকে শ্যালিকার বিয়ে দিচ্ছিলাম। আমার বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠান করে বরযাত্রী ও অতিথিদের আপ্যায়ন করতে স্কুলে অনুষ্ঠান করেছি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অনুমতি নিইনি। এখন বুঝতে পারছি, স্কুল ছুটি দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করে ঠিক করিনি।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ভুল স্বীকার করলেও তাঁর দাদা সুদিন মিশ্র ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এই স্কুলে যখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মিটিং করে তখন তো কেউ বাধা দেয় না। এখন কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে?” পর পর দু’দিন ছুটি পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা খুশি হলেও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, “এটা নতুন কিছু নয়। এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠান হলে স্কুলটি অনেকেই ব্যবহার করে। এ বারই প্রথম হইচই হল।” |