নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল রোগীর। আর সেই রক্ত জামায় লেগে যাওয়ায় রোগীকে মারধরের অভিযোগ উঠল চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ঘটনা। ওই রোগীর বাড়ির লোকেরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। চিকিৎসক গোপাল ঘোষের বিরুদ্ধে হাসপাতাল সুপার ও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। হাসপাতাল সুপার দেবব্রতবাবু বলেন, “এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসকের সুসম্পর্ক ভীষণ জরুরি। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, নাক দিয়ে রক্ত পড়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ঝান্ডাবাগের বাসিন্দা কানাইলাল মান্নাকে। সন্ধ্যায় তাঁকে দেখতে আসেন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গোপালবাবু। তখন কানাইলালবাবুর পাশে ছিলেন তাঁর ভাইপো গৌতমবাবু। তাঁর অভিযোগ, “কাকার নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। ডাক্তারবাবু কাকাকে ধরে ঘুরিয়ে দিতেই কিছুটা রক্ত তাঁর জামায় লাগে। ক্ষুব্ধ ডাক্তারবাবু কাকাকে কিল, চড় মারেন। কাকা জ্ঞান হারান।” গৌতমবাবুর দাবি, শুধু মারধর নয় গালিগালাজও করছিলেন ওই চিকিৎসক। তিনি ও হাসপাতালের অন্য রোগীর পরিজনেরা প্রতিবাদ করায় পালিয়ে যান ওই চিকিৎসক। |
কানাইলাল মান্না। —নিজস্ব চিত্র। |
খবর পেয়ে সুপার ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসককে ডেকে পাঠান। সুপারের ঘরে পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলার পরে গোপালবাবু ওই রোগীর আত্মীয়দের কাছে অনুতাপ প্রকাশ করেন। তবে মারধরের অভিযোগ স্বীকার করেননি তিনি। তিনি বলেন, “আমি মারিনি। ধাক্কা দিয়েছি। তবে সেটাও উচিত হয়নি।”
ঘটনার নিন্দা করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার মিহির নন্দী জানান, এক জন রোগী চিকিৎসকের গায়ে বমি করে দিতে পারে। চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগীর মলমূত্রও গায়ে লেগে যেতে পারে। কিন্তু সে জন্য কোনও রোগীর উপরে চিকিৎসক চড়াও হবেন, তা কল্পনাতীত। মিহিরবাবুর বলেন, “যা হয়েছে তা নিন্দনীয়। কোনও পরিস্থিতিতেই রোগীর গায়ে চিকিৎসক হাত তুলতে পারেন না”
গোপালবাবুর বিরুদ্ধে আগেও রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মাস কয়েক আগে যখন দিন কয়েকের জন্য তিনি ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্বে ছিলেন, তখন একটি পাখা ছাদ থেকে ভেঙে এক রোগীর উপরে পড়ে। জখম হন ওই রোগী। কিন্তু গোপালবাবু তাঁর খোঁজ নিতে যাননি বলে অভিযোগ। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে তিনি হাসপাতালে আসেন না বলে অভিযোগ অনেক রোগীর। সুপার দেবব্রতবাবু জানান, ওঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। |