চিদম্বরম, মমতার সঙ্গে আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’
পাহাড়ে বনধ-আন্দোলন প্রত্যাহার মোর্চার
শ্যামল সেন কমিটির সুপারিশের প্রতিবাদে দার্জিলিং পাহাড়, তরাই-ডুয়ার্সে ডাকা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মোর্চা নেতৃত্ব জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘আলোচনা ফলপ্রসূ’ হওয়ায় তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিলেন।
শুক্রবার কলকাতা থেকে দার্জিলিং ফেরার পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরঙ্গ বলেন, “নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভাল আলোচনা হয়েছে। পরে কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট এবং খুশি। আলোচনা যখন ভাল পথে এগোচ্ছে, তখন বনধ, আন্দোলন করব কেন? আমরা এখন কোনও আন্দোলনে যাব না।” এর পরেই তিনি ফের জানিয়ে দেন, শনিবার দলীয় বৈঠকের পরে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ভোটে অংশ নেওয়ার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
দার্জিলিঙে ফেরার পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: কার্তিক দাস।
জিটিএ ভোট করানো নিয়ে রাজ্য সরকার যে বদ্ধপরিকর, তা বোঝার পর থেকে মোর্চার বড় অংশই সুর নরম করে চলছে। কিন্তু, শ্যামল সেন কমিটির সুপারিশের বিরোধিতায় গুরুঙ্গ লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা করায় পরিস্থিতি কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। কারণ, ওই কমিটির সুপারিশ বাতিলের দাবিতে ২, ৩ ও ৪ জুলাই পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে বনধের ডাক দিয়েছিল মোর্চা। জিটিএ চুক্তির প্রতিলিপি পোড়ানোর কর্মসূচিও ছিল। সেই কারণে বর্ষার মরসুমে পাহাড়বাসী দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা করছিলেন। অবশেষে গুরুঙ্গরা আন্দোলন তুলে নেওয়ায় সাধারণ পাহাড়বাসী ও পর্যটন মহলে এখন স্বস্তির ছাপ। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “এ বার যে পর্যটকেরা পাহাড় ও তরাই-ডুয়ার্সে বর্ষা উপভোগ করতে চান, তাঁরা কোনও সমস্যায় পড়বেন না।”
এ দিন নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছেন, “আমাকে ওঁরা (মোর্চা নেতৃত্ব) জানিয়েছেন যে, মোর্চার একটি অংশ জিটিএ-র ভোটে অংশ নিতে অনিচ্ছুক। কিন্তু আমি বলেছি যে, চুক্তি অনুযায়ী তাঁরা ভোটে অংশ নিতে রাজি হয়েছিলেন। মৌজার বিষয়টি আলাদা ভাবে দেখা হবে। আমি আশা করি ওঁরা ঠিক এবং যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নেবেন।” সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও মোর্চাকে ভোটে অংশগ্রহণ করার স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মোর্চা নেতারা যে জিটিএ ভোট নিয়ে ঘর গুছোতে আসরে নেমে পড়েছেন, তা এ দিন দার্জিলিঙে জেলাশাসক সৌমিত্রমোহনের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে মোর্চা নেতাদের মতামত দেওয়া থেকেও স্পষ্ট।
তবে বৃহস্পতিবার মহাকরণে মোর্চা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং ডিজি অংশ নেওয়ায় রাজ্য সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য। শিলিগুড়িতে এই দিন তিনি বলেন, “জিটিএ নির্বাচন ঘোষণার পরে মুখ্যমন্ত্রী কোনও একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করতেই পারেন। কিন্তু সরকারি আমলারা ওই বৈঠকে থাকলে নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হবেই।”
সেই সঙ্গেই মহাকরণে দাঁড়িয়ে পাহাড়ে ১৩ হাজার জিএলপি নিয়োগের ব্যাপারে গুরুঙ্গ কেন্দ্র-রাজ্যের আশ্বাসের কথা ঘোষণা করায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে বলে অশোকবাবুর দাবি। তিনি বলেন, “ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করে কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা বিধিভঙ্গের সামিল।” মোর্চা নেতারা অবশ্য জানান, তাঁদের দলের তরফে বৈঠকের আলোচ্য বিষয় শুধু জানানো হয়েছে, কোনও প্রতিশ্রুতি গুরুঙ্গ দেননি। উত্তরবঙ্গ মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সূর্যকান্ত মিশ্র জিটিএ ভোটকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি নিরপেক্ষতা বা নির্বাচন বিধি লঙ্ঘনের কোনও প্রশ্ন তোলেননি। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কোনও নেতাও সে সব কথা বলেননি। কিন্তু রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক থাকতে কেউ যদি এমন কথা বলে থাকেন, তা হলে তার কী প্রতিক্রিয়া দেব?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.