|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
সবুজ হল লাল টুক টুক ছাতা |
বইপোকা |
ছড়ার নাম ‘লাল টুক টুক’।
প্রথম কয়েক লাইন, ‘লাল টুক টুক ছাতাটি
কালো কুচ কুচ মাথাটি
কে যায়? কে যায়?
সোনা রায়।’
ছড়ার উপরে একটি চিত্র, সোনা রায়ের। তাহার ছাতাটি কিন্তু সবুজ। অন্নদাশংকর রায়ের দীর্ঘকাল ধরিয়া প্রচলিত ছড়ার সংকলন হৈরেবাবুই হৈ (আনন্দ)-এর সূচিপত্রের পরে প্রথম পৃষ্ঠাতেই এই বর্ণসংকটের মুখে পড়িতে হইল। চিত্রটি অহিভূষণ মালিকের আঁকা। এই গ্রন্থের প্রচ্ছদ ও অলংকরণ তাঁহারই, সহযোগিতায় বিপুল গুহ। গ্রন্থের সব অলংকরণগুলিই সবুজে আঁকা, প্রচ্ছদটিতে চারিটি বাঘ শুধু হলুদ-কালো। অহিভূষণ মালিকের এই কাজ বাংলা শিশুসাহিত্যের অলংকরণে নিরীক্ষার নূতনত্বে চিরস্মরণীয় হইয়া থাকিবে, একটি প্রশ্নচিহ্ন-সহ। প্রশ্নটি হইল, অলংকরণে বইটির লক্ষ্য-পাঠকের বয়স, গ্রহণক্ষমতা এবং আনুষঙ্গিক বিষয়গুলি অগ্রে বিবেচিত হইবে, না শিল্পীর নিরীক্ষা? সম্ভবত, প্রথমটিই এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অলংকরণ শেষত বিজ্ঞাপনী শিল্পই। পাঠের সহিত ছবি সমান্তরাল সৃষ্টির মর্যাদা পাইতেই পারে, কিন্তু তাহাকে প্রথমত পাঠের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হইতে হইবে। ছোটদের গ্রন্থের ক্ষেত্রে কথাটি বিশেষ ভাবে সত্য হইয়া উঠে। সোনা রায়ের ছাতার রং ছড়ায় লাল, ছড়ার নামের সহিত মিলিয়া ছোটদের মনে যে ছবিটি ভাসিয়া উঠে তাহাতে লালই উচ্ছ্বসিত। কিন্তু ছবির সবুজ সেই ছবির সহিত মেলে না, এই খটকাটিই ইহার নিহিত শিল্পব্যাখ্যা ছাপাইয়া শিশুমনে জাগিয়া থাকিবে। বিষয়টি লইয়া বিদ্বজ্জন বিতর্ক তুলিবেন, আশা করি। করাই উচিত, অন্তত ছড়ার ছবি লইয়া এমন বিতর্ক আশু প্রয়োজন। |
|
|
|
|
|