|
|
|
|
অধ্যক্ষকে হেনস্থা, নাড়াজোল কলেজে অভিযুক্ত টিএমসিপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
ফের অধ্যক্ষ হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের নাড়াজোল রাজ কলেজে।
ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে শুক্রবার বহিরাগত কয়েক জনের হাতে হেনস্থা হতে হয় কলেজের অধ্যক্ষ দেবব্রত পাহাড়িকে। অভিযোগ, তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর কর্মী-সমর্থকেরা অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। কলার ধরে মারতে যায় অধ্যক্ষকে। দেবব্রতবাবু বলেন, “সহকর্মীদের বাধায় মার খেতে খেতে বেঁচে গিয়েছি। গোটা ঘটনায় আমি অত্যন্ত অপমানিত।”
রায়গঞ্জ, নদিয়া, রামপুরহাট, মাজদিয়াসাম্প্রতিক সময়ে কলেজে কলেজে অধ্যক্ষ হেনস্থার তালিকা দীর্ঘতর হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির রাজ্যের বর্তমান শাসকদল বা তার ছাত্র সংগঠনের দিকে। মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী এ-সব বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও আদপে যে কাজের কাজ বিশেষ হচ্ছে না, নাড়াজোল রাজ কলেজের ঘটনা তার প্রমাণ।
কলেজের ছাত্র সংসদের ক্ষমতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের পদে কৃষ্ণেন্দু পড়্যা থাকলেও ‘সর্বেসর্বা’ হলেন সদ্য নির্বাচিত স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মমতা ভুঁইয়ার ছেলে কুমারেশ। মমতাদেবী কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতিও বটে। কলেজে কুমারেশ অনুগামী এবং আর এক টিএমসিপি নেতা মতিন আনসারির অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিলই। এ দিন তার জেরেই গোলমাল বাধে।
এখন প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। মতিন গোষ্ঠীর অভিযোগ, ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও অনেক ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারেনি। এর জবাবদিহি চাইতেই এ দিন দুপুরে মতিন আনসারির নেতৃত্বে টিএমসিপি-র ছেলেরা অধ্যক্ষের ঘরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মতিন অবশ্য বলেন, “এক ছাত্রের নাম ভূগোল অনার্সের তালিকায় থাকা সত্ত্বেও তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। ঘটনাটি অধ্যক্ষকে জানাতে গিয়েছিলাম। তখন কথা কাটাকাটি হয়। হেনস্থা বা ভাঙচুরের মতো কিছু ঘটেনি।” কুমারেশের বক্তব্য, “নিয়ম মেনেই ভর্তি চলছে। দলের ছাত্র সংগঠনের কিছু কর্মী-সমর্থক কলেজের সুনাম নষ্ট করতে চাইছে। এ দিনের ঘটনার কথা দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছি। দোষীদের শাস্তির আবেদনও করেছি।” কুমারেশ এবং মতিন আনসারি দু’জনেই বহিরাগত। তাঁরা কেন কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাবেন, সে প্রশ্ন কিন্তু উঠছে। এসএফআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সৌগত পন্ডার অভিযোগ, “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে কলেজে কলেজে লেখাপড়া শিকেয় উঠেছে। বহিরাগতদের এনে নৈরাজ্য চালানো হচ্ছে। আমরা ছাত্রছাত্রীদের একজোট করে আন্দোলন গড়ে তুলব।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি লোকেশ করের বক্তব্য, “কলেজে কলেজে বহিরাগতদের প্রভাব রয়েছে, এ কথা ঠিক। এই প্রবণতা আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|