চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল গোবিন্দ শিকদার (৩৫) নামে এক যুবকের।
মঙ্গলবার রাতে হাঁসখালির বেতনা-ভুরের ঘাট গ্রামে দু’টি বাড়িতে সিঁদ কেটে চুরি হয়। চুরির খবর টের পেয়ে গ্রামবাসীরা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে। গ্রামেরই একটি মাঠের ভিতর থেকে গোবিন্দবাবুকে চোর সন্দেহে ধরেন গ্রামবাসীরা।
বাঁশ, লাঠি দিয়ে গ্রামের শ’খানেক লোকের উপস্থিতিতেই সারারাত মারধর করা হয় গোবিন্দকে। বুধবার ভোরে হাঁসখালি থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “চোর সন্দেহে ওই যুবককে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, গোবিন্দর বাড়ি নবদ্বীপের প্রফুল্ল নগরে। বুধবার দেহ শনাক্ত করতে মর্গে আসেন তাঁর দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বীথিকা শিকদার। তিনি বলেন, “আমার স্বামী দিন মজুরের কাজ করত। সোমবার রাতে বাড়ি থেকে মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। ওখানে কেন গিয়েছিল জানি না। যারা এ ভাবে পিটিয়ে আমার স্বামীকে মেরে ফেলল তারা যেন শাস্তি পায়।”
গ্রামবাসীরা জানান, সোমবার রাতে গ্রামের দু’টি বাড়িতে সিঁদ কেটে দু’টি মোটরবাইক চুরি হয়েছে। শ্যামল ঘোষ নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়িতে সিঁদ কেটে চুরির চেষ্টা হয়। তাঁর পড়শি অমিত ঘোষ বলেন, “ওঁর চিৎকারে আমরা বেরিয়ে আসি। ওই যুবককে ছুটে পালাতে দেখে গ্রামের সকলে তাড়া করে তাকে মাঠ থেকে ধরে নিয়ে আসে।” ওই রাতেই গ্রামের অন্য দুই বাসিন্দা যাদব ঘোষ ও সুশীল ঘোষের বাড়িতে সিঁদ কেটে কয়েক হাজার টাকা ও সোনা-রূপোর গয়না চুরি হয়েছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, গোবিন্দর কাছ থেকে টাকা বা গয়না কিছুই মেলেনি।
বেতনা-গোবিন্দপুর পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই। মারধর বন্ধ করতে বলে পুলিশকে খবর দিই।” পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। |