প্রণব-প্রশ্ন
কারাটের সিদ্ধান্তে জঙ্গিপুরে ‘বিপাকে’ দল
য়াদিল্লির একেজি ভবনে সিদ্ধান্ত নিলেন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। সুদূর জঙ্গিপুরে গেরোয় পড়ে গেল তাঁর দল সিপিএম!
রাষ্ট্রপতি পদে তাঁকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারাটের অধীনস্থ দল। কিন্তু লোকসভা থেকে ইস্তফার পরে আসন্ন উপ নির্বাচনে সিপিএমের মূল প্রতিপক্ষের নামও তো প্রণব মুখোপাধ্যায়! মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে তাই প্রচার শুরু করেও প্রবল ‘অস্বস্তিতে’ সিপিএম।
মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথাতেই তা স্পষ্ট, “দলের শীর্ষ নেতারা রাষ্ট্রপতি পদে তাঁকে সমর্থন করে বসলেন! অথচ উপনির্বাচনের প্রচারে দলের মূল অস্ত্রই তো প্রণববাবুর সাংসদ হিসেবে ব্যর্থতা!” এ অবস্থায় প্রচারে নেমেও কর্মীরা যথেষ্ট ‘দ্বিধায়’। স্বাভাবিক।
সম্প্রতি জঙ্গিপুরের রঘুনাথগঞ্জে কর্মিসভা ডেকে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের আসন্ন উপ নির্বাচনের প্রচার এ সপ্তাহেই শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা নেতাদের নির্দেশ, নিজেদের ভুল-ত্রুটি ‘মাথা পেতে’ মেনে নিতে হবে। কোনও কর্মী-নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলে তা-ও দূর করার দায় কর্মীদেরই। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নৃপেন চৌধুরী সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন। তিনি বলেন, “মানুষ আমাদের ভুল বুঝেছিলেন। ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। সেই বিমুখ মানুষকে যে ভাবেই হোক ফিরিয়ে আনতে হবে। জঙ্গিপুরের উপনির্বাচনই আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ।” ঘুরে দাঁড়াতে নৃপেনবাবুর ‘দাওয়াই’, সাংসদ হিসেবে প্রণববাবুর ‘ব্যর্থতা’কে তুলে ধরা।
কিন্তু তাঁকেই যে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন করছে সিপিএম? এমনকী, সে প্রশ্নে বাম ঐক্য ভেঙে গেলেও!
‘ব্যাখ্যা’ দিচ্ছেন দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য, “রাষ্ট্রপতি দেশের নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। তিনি কোনও নীতি নির্ধারক নন। কাজেই ওই পদে প্রণববাবুকে সমর্থন করতে বাধা নেই। কিন্তু রাজনীতিক হিসেবে তাঁর উদারীকরণ নীতির বিরুদ্ধে আমরা। সাংসদ হিসেবেও তিনি চূড়ান্ত ব্যর্থ। সে কথাই তুলে ধরা হবে প্রচারে।” ঘটনা হল, ঠিক এই কথা বলেই সিপিআই এবং আরএসপি রাষ্ট্রপতি পদে প্রণববাবুর বিরোধিতা করেছে।
জঙ্গিপুরে গত লোকসভা ভোটে প্রণববাবুর বিরুদ্ধে মৃগাঙ্কবাবুই ছিলেন সিপিএম প্রার্থী। প্রায় লক্ষাধিক ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। তবে সে সব তথ্যে দমে না গিয়ে দলীয় কর্মীদের তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, দরিদ্র পরিবারের হাতে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ‘অর্থমন্ত্রী’ প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রায় ৪ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক ন্যূনতম মজুরিও পান না। অথচ এ সবই ‘বদলে’ দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন প্রণববাবু। তিনি বলেন, “নিজের প্রভাব খাটিয়ে জঙ্গিপুরের চেহারাটাই বদলে দিতে পারতেন প্রণববাবু। তিনি কথা রাখেননি।”
সিপিএমের এই প্রচারে অবশ্য আমল দিচ্ছে না জেলা কংগ্রেস। জেলার দুই বিধায়ক আখরুজ্জামান ও ইমানি বিশ্বাস বলেন, “প্রণববাবুর চেষ্টায় মিঞাপুরে রেল সেতু ও সাগরদিঘিতে কলেজ তৈরি হয়েছে। আহিরণে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তবুও উপ নির্বানের আগে অপপ্রচার শুরু করেছে সিপিএম।”
জেলা কংগ্রেসেরও পাল্টা প্রশ্ন, প্রণববাবু যদি কিছুই না করে থাকেন, তবে রাষ্ট্রপতি পদে তাঁকে সমর্থন করছে কেন সিপিএম? সিপিএমের নিচুতলার কর্মীরাও তো এখন এ প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন। প্রচারে বেরিয়ে নেতাদের শিখিয়ে দেওয়া ‘বুলি’ আওড়ালেও ঘুরেফিরে এ প্রশ্নের সামনেই পড়তে হচ্ছে দলীয় কর্মীদের।
সাধে কি জেলা স্তরের এক নেতা আফশোস করছেন, “হবু রাষ্ট্রপতি আমাদের বড় সঙ্কটে ফেলে গেলেন!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.