|
|
|
|
‘সানিয়া যা বলেছে ঠিক বলেছে’ |
অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ঘাসের কোর্টে প্রথম ম্যাচ সহজেই জিতে উঠে আরও খুশি খুশি থাকা উচিত। বুধবার
রাতে লন্ডনে
যোগাযোগ করে দেখা গেল মহেশ ভূপতি ঠিক উল্টো। প্রশান্তির বদলে এখনও
উত্তেজনা ঠিকরে বেরোচ্ছে।
ফোনে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন গৌতম ভট্টাচার্য-কে। |
|
প্রশ্ন: প্রথম রাউন্ডটা খেলে উঠে কেমন লাগল? ৬-০ দিয়ে প্রথম সেটটা শুরু, উইম্বলডন মনে হচ্ছে ভালই যাবে?
মহেশ: রোহন আর আমি দু’জনেই ভাল মুভ করেছি। ভাল গেল প্রথম দিনটা।
প্র: রোহন বোপান্না আর আপনি কি কোর্টের বাইরে অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটান?
মহেশ: কোর্টে খেলা ছাড়াও অনেকক্ষণ একসঙ্গে প্র্যাক্টিস করি। খেতে যাই একসাথে। এদিক ওদিকে বেরোইও অনেক সময় একসাথে।
প্র: পেশাদার ডাবলস জুড়ির কোর্টের বাইরে সময় কাটানোর দরকার আছে?
মহেশ: নিশ্চয়ই দরকার আছে। ডাবলসে সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট হল আন্ডারস্ট্যান্ডিং। কোর্টের মধ্যে ওই যুদ্ধকালীন অবস্থায় বন্ধু বলতে তো শুধু আপনার পার্টনার। তার সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং লাগবে না?
প্র: এবার কি উইম্বলডনে আপনার আর বোপান্নার উপর বাড়তি চাপ? অলিম্পিকে লিয়েন্ডার পেজকে আপনারা সরিয়ে দিয়েছেন...
মহেশ: বাড়তি চাপ আর কী হবে? উইম্বলডন মানেই তো বাড়তি চাপ। এটা তো বিশ্বের আর পাঁচটা টুর্নামেন্ট নয়। তবে আমরা দু’জনেই দু’জনের কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করি। আর লিয়েন্ডারকে আমরা সরিয়ে দিতে যাব কেন? ওর সঙ্গে আমরা খেলতে চাই না।
প্র: সানিয়া মির্জার কাল মাঝরাত্তিরের বিবৃতি তীব্র মেরুকরণ করে দিয়েছে ভারতীয় ক্রীড়া জগতে। এক পক্ষ বিরোধী, এক পক্ষ সমর্থনকারী।
মহেশ: বিরোধী আবার কেন (বিরক্তির সঙ্গে)?
প্র: কেউ কেউ বলছেন, সানিয়ার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল চার দিন আগে। যখন প্রথম এআইটিএ বলে লিয়েন্ডারের সঙ্গে তাঁকে খেলতে হবে। আদর্শগত স্ট্যান্ড নিলে তখনই নেওয়া উচিত ছিল।
মহেশ (প্রচণ্ড বিরক্ত): কারা বলছে এসব কথা? ওয়াইল্ড কার্ড না পাওয়া অবধি ও প্রতিবাদ করবে কী করে?
প্র: জাতীয় টিভি চ্যানেলে সাংবাদিক বা টেনিস কর্তারা বলছেন। এঁরা মনে করেন ওয়াইল্ড কার্ড অবধি অপেক্ষা করা মানে তো সুযোগসন্ধানী মনোভাব।
মহেশ: এদের নিশ্চয়ই কোনও কাজ নেই টিভির সামনে বসা ছাড়া।
প্র: আপনি নিজে সানিয়ার বিবৃতি নিয়ে কী মনে করেন?
মহেশ: ভীষণ ন্যায্য। একদম ঠিক কথা বলেছে। সানিয়া বলতে চেয়েছে ভারতের যখন সেরা মিক্সড ডাবলস টিম আছেই, তখন অন্য কাউকে দিয়ে ওর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে কেন?
প্র: সানিয়া আপনাকেও মৃদু সমালোচনা করেছেন। ওই অংশটা পড়ছি...
মহেশ: মাই ফ্রেন্ড পড়তে হবে না। আমি অক্ষরে অক্ষরে জানি ওটায় কী আছে। স্টেটমেন্টটা এখন আমার সামনেই পড়ে আছে।
প্র: আপনি কালই দেখেছেন?
মহেশ: অবশ্যই দেখেছি।
প্র: তবু আপনার সম্পর্কে মৃদু সমালোচনার কী উত্তর দেবেন?
মহেশ: কোনও উত্তর দেব না। শুধু বলব পুরো লেখাটা পড়তে হবে। তার মধ্যেই উত্তর লুকিয়েই আছে।
প্র: এখনও কি মনে করেন আপনি আর সানিয়া অলিম্পিকে খেলবেন?
মহেশ: অবশ্যই। হোয়াই নট?
প্র: কিন্তু এআইটিএ তো বলছে চূড়ান্ত দল অলিম্পিক কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেটা হল লিয়েন্ডার আর সানিয়া। আর বদলানোও সম্ভব নয়। নাম দেওয়ার শেষ তারিখ কাল চলে গিয়েছে।
মহেশ: (প্রচণ্ড উত্তেজিত) এটা যদি জেনে থাকেন, তা হলে একদম ভুল জানেন। মিক্সড ডাবলসে চূড়ান্ত নাম দেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ জুলাই।
প্র: এআইটিএ তা হলে ডেট চলে গেছে বলছে কেন?
মহেশ: কারণ ওরা মিথ্যাচার করছে। গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করছে। যা এই ইস্যুতে বারবার করে এসেছে। সবাই জানে দেশের সেরা মিক্সড ডাবলস টিম কী। কেউ যদি জেনেও চোখ বুজে থাকে, সেটা তো মেনে নেওয়া যায় না।
প্র: কিন্তু দিনের শেষে টিমটা তো ভারতীয় টেনিস সংস্থার। তারা যদি ভুল মনোনয়নও করে আর সেটা ইচ্ছাকৃত হয়, তা হলেও তো কিছু করার নেই। ভারতীয় ক্রিকেট টিমে যেমন ভুল নির্বাচন হয়েই থাকে। আর সেটা মেনে নিয়েই প্লেয়াররা খেলে।
মহেশ: (এ বার গলা চড়িয়ে) ক্রিকেটের কথা আনবেন না। একদম আনবেন না। ক্রিকেট-ফুটবল এগুলো টিম স্পোর্ট। এগারো জন খেলে। গৌতম গম্ভীর যদি সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে কথা না বলে, বাকি টিমের উপর তার বিশাল প্রভাব পড়ে না। সেই দলে আরও বাকি ন’জন থেকে যায়। কিন্তু যে খেলায় দু’জন একটা টিমের হয়ে যুদ্ধ করছে, সেখানে সাহায্য করারও কেউ থাকে না।
প্র: ক্রিকেট নয়, বলা হচ্ছে ভুল নির্বাচনের কথা।
মহেশ: আমিও ভুল নির্বাচনের কথাই বলছি। যদি ডাবলস টিম বদলাতে পারে, মিক্সড ডাবলস বদলাবে না কেন?
প্র: অনেকে মনে করছেন চূড়ান্ত দল নির্বাচন কী হবে, মিক্সড ডাবলসে আপনাদের উইম্বলডন পারফরম্যান্সের উপর দাঁড়িয়ে আছে।
মহেশ: নট সো সিওর। পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করলে ফরাসি ওপেন জেতাটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল। সেটা তো দেয়নি। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব তাই বলছে। ভারতের জন্য প্রার্থনা করছি। তোদের জন্য প্রার্থনা করছি।
প্র: এই যে টেনিস বিতর্ক গোটা দেশে বিস্ফোরণের মতো দেখা দিয়েছে, এর ফল কী হবে বলে মনে করছেন?
মহেশ: জানি না। প্রচণ্ড বিতর্ক হয়েছে সেটা তো বুঝতেই পারছি।
প্র: প্লেয়ার মহল ছেড়ে দিচ্ছি। সুব্রত রায়ের মতো শিল্পপতি। এল কে আডবাণীর মতো নেতা, এঁরাও জড়িয়ে পড়েছেন বিতর্কে।
মহেশ: সুব্রত রায়টা জানি। আডবাণী আবার কবে?
প্র: আডবাণীর খবর কালকের আনন্দবাজারে আবার বেরোচ্ছে।
মহেশ: তাই বুঝি? লিঙ্কটা আমায় একটু পাঠান না? এটা একেবারেই জানতাম না।
প্র: মনে করা যাক টেনিস সংস্থা আপনাদের খেলাল না। লিয়েন্ডারকেই রেখে দিল। তর্কসাপেক্ষে বলছি।
মহেশ: তর্কসাপেক্ষে তো অনেক কিছুই বলা যায়। বলা যায় আমি বাঁ দিকের কোর্টে খেলি না। লিয়েন্ডার ভলি মারে না। ভারত টেনিস খেলে না। এরকম অদ্ভুত অদ্ভুত তর্কসাপেক্ষে কথা আমাকে বলবেন না।
প্র: ভারতীয় টেনিস নিয়ে আপনার মেজাজ দেখছি সপ্তমে চড়ে রয়েছে। ইউরো কাপ প্রসঙ্গে আসা যাক।
মহেশ: (অনেক প্রশান্ত গলা) হুমম।
প্র: কে চ্যাম্পিয়ন হবে মনে হয়?
মহেশ: টিমটাকে আমি একদমই পছন্দ করি না। তবে মনে হচ্ছে ওরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। জার্মানি।
প্র: জার্মানি-ইতালি ম্যাচে আপনি কার সাপোর্টার?
মহেশ: অবশ্যই ইতালি।
প্র: স্পেন-পর্তুগাল ম্যাচে কী হবে?
মহেশ: মনে হচ্ছে আজ রোনাল্ডো খেলবে। মন বলছে।
প্র: আপনি কি রোনাল্ডোর ফ্যান?
মহেশ: মেসির পরে আমার কাছে রোনাল্ডোই বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা প্লেয়ার।
প্র: আর ভারতীয় টেনিসের কী হবে?
মহেশ: জানি না। নো আইডিয়া। |
|
|
|
|
|