ভয়াল বন্যায় বিপর্যস্ত বরাক উপত্যকা
সমে শুধু ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা নয়, বরাক উপত্যকাও চলতি বন্যায় বিপর্যস্ত। উত্তর-পূর্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী বরাক ও তার শাখানদীগুলি বিপদসীমা ছাড়ানোয় কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ আট বছর পরে বন্যাকবলিত হল। খোদ গুয়াহাটিতে ভূমিধস কেড়ে নিয়েছে আরও তিনটি প্রাণ। সব মিলিয়ে অসমের ২৩টি জেলাকে বন্যা কবলিত ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যাজনিত কারণে অন্তত দশজনের মৃত্যু ঘটেছে অসমে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০। পাশাপাশি, পড়শি রাজ্য মেঘালয়ের জয়ন্তিয়া পাহাড়ে এক রাতের মধ্যে তিরিশটি জায়গায় ধস নামায় ব্রহ্মপুত্র উপত্যাকার সঙ্গে বরাক উপত্যকা, মণিপুর, ত্রিপুরা, মিজোরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে আছে শয়ে শয়ে গাড়ি। অরুণাচলেও বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যা ও ধসের কবলে। সব মিলিয়ে বড় রকমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে উত্তর-পূর্বাঞ্চল।
প্লাবিত করিমগঞ্জ-শিলচর জাতীয় সড়ক। ছবি: উত্তম মুহরি।
শেষবার ২০০৪ সালে, এমন বন্যা দেখেছিল বরাক উপত্যকা। কাছাড় জেলার বরখোলা, কাহিগোড়া, উধারবন্দ ও লখিপুর ব্লক বানভাসি। জাটিঙ্গায় ১৪ বছরের এক বালক-সহ দু’জন বানের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। বরাকের সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগও বন্ধ। করিমগঞ্জ-শিলচর জাতীয় সড়ক জলের তলায়। সেখানে এখন নৌকাই একমাত্র বাহন। মেঘালয়ের পাহাড়ে ধস নামায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বিচ্ছিন্ন। লামডিং অবধি ১৮৮ কিলোমিটার পাহাড়লাইনে ট্রেনও চলছে না। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে খবর, বান্দেরখাল ও হাতিখালির মধ্যে অন্তত ৫১টি স্থানে লাইন ঘেঁষা পাহাড়ে ধস নেমেছে। কবে ফের ট্রেন চলবে তা একেবারেই অনিশ্চিত। বন্ধ হাফলং যাওয়ার রাস্তাও। উধারবন্দে মধুরা নদী বিপদসীমা পেরিয়েছে। জেলাপুর, কুরকুরি, জাটিঙ্গা ও কালাইন চা বাগান সুর্মা ও বরাকের অন্যান্য উপনদীগুলির তোড়ে জলমগ্ন।
উজানি অসমে, শিবসাগর, যোরহাট, ধেমাজি, তিনসুকিয়াতে বন্যার প্রকোপ কমেনি। জলসম্পদ মন্ত্রী রাজীবলোচন পেগু আজ বিপন্ন মাজুলি নদীদ্বীপ সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। শদিয়ায় বানভাসি গ্রাম থেকে এক প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বানের তোড়ে ভেসে যাচ্ছিল একটি জল-অ্যাম্বুলেন্স। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। ব্রহ্মপুত্রের বন্যায় কার্যত দ্বিখণ্ডিত মাজুলিতে আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধারে কলকাতা থেকে এনডিআরএফ-এর একটি দল গুয়াহাটি আসছে। কাল রাতে ফের গুয়াহাটিতে ধস নামে। ধীরেনপাড়া এলাকায় ধস নামায় মর্জিনা বেগম (৪০), তাঁর মেয়ে জেবিনা ইসলাম (১৬) ও মাইনু ইসলামের (৮) মৃত্যু ঘটেছে। এই নিয়ে মহানগরে ধসের মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭। মেঘালয়ের জয়ন্তিয়া পাহাড়েও কাল তিরিশটির বেশি এলাকায় ধস নেমেছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও গত চার দশকের মধ্যে সর্বাধিক। গত তিন দিনে এই এলাকায় ১০৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি পড়েছে। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে মিজোরাম, শিলচর, ত্রিপুরা ও মণিপুরগামী অন্তত ৫০০ যানবাহন আটকে পড়েছে। মিনক্রে জাতীয় সড়ক বন্যার জলে অগম্য। লেসকা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে এক নিরাপত্তারক্ষী ধসে মারা গিয়েছেন। লুমস্নং-এ একটি সিমেন্ট কারখানাও এখন জলের তলায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.