আইআইটি-তে ভর্তির ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত রফা সূত্র মিলল। ২০১৩ থেকে ওই নতুন নিয়মেই পড়ুয়া ভর্তি করা হবে বলে বুধবার দিল্লিতে এক বৈঠকের পরে জানিয়েছেন আইআইটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এম এম শর্মা।
নয়া ফর্মুলায় আইআইটি-তে ভর্তির জন্য দু’টি পরীক্ষায় উতরোতে হবে। প্রথমটি অভিন্ন প্রবেশিকা, যার ভিত্তিতে তৈরি হবে দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থীর নামের তালিকা। তাঁরা পরের পর্বের পরীক্ষায় বসবেন। ওই পরীক্ষাটির দায়িত্ব থাকবে পুরোপুরি আইআইটিগুলোর উপরে। তারাই পরীক্ষাটি নেবে ও পরের পর্বের বাছাই-তালিকা বানাবে। আইআইটি-তে ঢোকার জন্য পড়ুয়াদের এর পরেও অবশ্য পূরণ করতে হবে আর একটা শর্ত ঠাঁই পেতে হবে নিজের বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের প্রথম ২০ শতাংশের মধ্যে।
গত ২৮ মে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী কপিল সিব্বল আইআইটি প্রবেশিকার ‘নতুন প্রক্রিয়া’ ঘোষণা করেছিলেন। তাতে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরকে অনেকখানি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কানপুর-দিল্লি-মুম্বইয়ের আইআইটিগুলো আপত্তি জানায়। আইআইটি শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যা সমাধানে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন, তাড়াহুড়ো করে কিছু করা হবে না।
এবং সেই মতো মন্ত্রক আজ আইআইটি কাউন্সিলের বিশেষ বৈঠক ডেকেছিল। বৈঠকের পরে কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, “আলোচনায় যে সমীকরণ উঠে এসেছে, সব আইআইটি তা মেনে নিয়েছে। আগামী বছর থেকে নয়া পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সিদ্ধান্ত হয়েছে।” আইআইটি শিক্ষক সংগঠনের সম্পাদক এ কে মিত্তলও জানিয়েছেন, তাঁদের পেশ করা অধিকাংশ সুপারিশ গ্রাহ্য হয়েছে। তাই নতুন পদ্ধতিকে সংগঠন স্বাগত জানাচ্ছে।
কী সেই নতুন পদ্ধতি? কাউন্সিল জানিয়েছে, পরীক্ষা হবে দু’টো জেইই মেন এবং জেইই অ্যাডভান্সড। মেন-এ সকলে বসতে পারবেন। উত্তীর্ণদের থেকে প্রথম দেড় লক্ষকে বেছে নেওয়া হবে। অ্যাডভান্সড-এ বসার সুযোগ পাবেন তাঁরাই। আগে বলা হয়েছিল, দু’টো পরীক্ষা একই দিনে হবে। কিন্তু নতুন নিয়মে দু’টির মধ্যে এক-দেড় মাসের ব্যবধান রাখা হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় সফল যে সব পড়ুয়া নিজেদের বোর্ডের পরীক্ষায় মোট নম্বরের ভিত্তিতে প্রথম ২০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে থাকবেন, আইআইটি’র কাউন্সেলিংয়ে তাঁরা ডাক পাবেন। তবে এর সুবাদে অ্যাডভান্সড পরীক্ষায় সফল হয়েও যাঁরা আইআইটির জন্য বিবেচিত হবেন না, তাঁরা এনআইটি’র কাউন্সেলিংয়ে বসতে পারবেন বলে মন্ত্রক জানিয়েছে। মন্ত্রকের দাবি, আইআইটি প্রবেশিকার নতুন পদ্ধতিতে বিভিন্ন বোর্ডে মূল্যায়নের ফারাক দূর হবে, পাশাপাশি বোর্ডের পরীক্ষাও গুরুত্ব পাবে। উল্লেখ্য, মানবসম্পদ উন্নয়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই অভিন্ন প্রবেশিকার পক্ষে সওয়াল করছিলেন সিব্বল। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় আজকের বৈঠকে অবশ্য তিনি উপস্থিত ছিলেন না। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বশাসনে যে তিনি হস্তক্ষেপ করতে চান না, সিব্বলের অনুপস্থিতি এ দিন সেই বার্তাও দিয়েছে। |