শাস্তির মেয়াদ ফুরিয়েছে আগেই। তবু শাস্তি ভোগ করছেন ১৪ জন বাংলাদেশি। আটকে রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত হয়নি।
আট জন নাবালকও এখন প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। বয়স পরীক্ষা করে তাদের কোনও জুভেনাইল হোমে পাঠানোটাই নিয়ম। কিন্তু সেই পরীক্ষাটাই হয়নি। প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গেই তাদের থাকতে হচ্ছে জেলে।
বিচারাধীন বন্দিদের অনেকে ছ’সাত বছর ধরে জেলে রয়েছেন। তাঁদের বিচার কিছুতেই এগোচ্ছে না। আদালত এক বার করে তাঁদের ডেকে পাঠায় আর নতুন একটা তারিখ নিয়ে ফিরে আসতে হয়। বিচার এগোয় না।
বুধবার প্রেসিডেন্সি জেল পরিদর্শনে গিয়ে এই সব তথ্য জেনে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্যেরা একই সঙ্গে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। এই ভাবে বহু বন্দির মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কমিশনের চেয়্যারম্যান অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি। |
এমনটা ঘটছে কেন?
আইজি (কারা) রণবীর কুমারের মন্তব্য, “আমাদের কিছু করার নেই। বিচার বিভাগ জানে।”
এ দিন প্রেসিডেন্সি জেলের খাবার, বন্দিদের আয়ের ব্যবস্থা, তাঁদের নাটকের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও কয়েকটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অশোকবাবু। তিনি বলেন, “বেশ কিছু বিচারাধীন বন্দির বিচারের কাজ বছরের পর বছর প্রায় থমকে রয়েছে। তাঁরা আদালতে যাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। শাস্তির মেয়াদ ফুরোনোর পরেও আটকে থাকতে হচ্ছে অনেককে। নাবালক বন্দিদের হোমে পাঠানো হচ্ছে না। বিচার বিভাগের উদাসীনতাতেই এ-সব হচ্ছে।” আগামী সোমবারের মধ্যে এই সব ব্যাপারে জেল-কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। এ দিন জেলের ভগ্ন অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন অশোকবাবু। তিনি জানান, নিরাপত্তার কথা ভেবেই জেল ভবনের সংস্কারে গতি আনা উচিত। |