অঞ্জন দত্ত আবার মঞ্চে
গালিলেও
কিস্যু না করেই বড় বেশি পেয়ে যাচ্ছে সিনেমার লোকজন। কী প্রচারের আলো তাদের মুখে! বানাচ্ছে তো এক-একটা মামুলি বায়োস্কোপ, অথচ ভাবখানা যেন ‘পথের পাঁচালী’বানাচ্ছে।” অঞ্জন দত্তের গলায় বিরক্তি। ‘‘আমিও আছি এই দলে। পর পর ছবি বানিয়ে আমি ক্লান্ত। একঘেয়ে রুটিনের মতো দাঁড়াচ্ছে গোটা ব্যাপারটা। এতে ‘সাকসেস’ আছে ঠিকই, কিন্তু ‘মিডিয়োক্রিটি’ এড়ানো যাচ্ছে না।’’ এ থেকে বাঁচার জন্যেই অঞ্জন খুঁজছেন নিজস্ব সৃষ্টির পরিসর। আর সেটাই তাঁকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ব্রেশটের ‘গালিলেও’-য়। কুড়ি বছর পর ফের তাঁর প্রথম প্রেম থিয়েটার-এ ফিরছেন। যৌবনের ঝোড়ো দিনগুলিতে চুটিয়ে নাটক করতেন। ’৭৭-এ শুরু নাটক, সার্ত্র বা ব্রেশটের নাটকই করতেন বেশি। পিটার ভাইসের ‘মারা-সাদ’ অ্যাকাডেমিতে করার সময় সেটি বিপ্লব-বিরোধী এই অজুহাতে হুজ্জুতি করে বন্ধ করে দেন বামপন্থী কিছু নাট্যকর্মী, আশির দশকে। শেষ থিয়েটার ’৯২-এ, জার্মান নাটক ‘কর্ডলাইন’। অঞ্জন গ্রুপ থিয়েটারের কাঠামোয় বিশ্বাসী নন।
‘শুধু দলের লোকই অভিনয় করবেন কেন? এ তো ভাল অভিনেতার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া।’ তিনি শুধু শিল্প ও শিল্পীর সর্বাত্মক প্রকাশের জন্যই থিয়েটার করতে চান। ইতিমধ্যেই শংকর চক্রবর্তী রজতাভ দত্ত পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় নীল মুখোপাধ্যায় কুণাল পাধি তথাগত চৌধুরী সুদীপা বসু এমন অনেককেই বেছে ফেলেছেন। নিজে করবেন গালিলেও, আর সর্বকনিষ্ঠ ঋদ্ধি (কৌশিক সেনের পুত্র) আন্দ্রেয়া গালিলেওর ছাত্র (সঙ্গে দু’জনের ওয়ার্কশপের ছবি)। জুলাই থেকে তিন মাস রিহার্সালের পর অক্টোবরে জ্ঞানমঞ্চে ছ’টা শো করেই বন্ধ হবে গালিলেও, ‘নান্দনিক আনন্দ ছাড়া কোনও স্থায়িত্বের অভিলাষ নেই। টিকিট হবে বেশি দামের, বাঙালি যদি মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখতে পারে, তবে বাংলা থিয়েটারও দাম দিয়ে দেখবে।’ আরও যোগ করেন অঞ্জন “এই অস্থির সময়ে আমার বা আমাদের মতো ভিতু ‘ভালনারেবল’ মানুষজনও যাতে ব্যক্তি হিসেবে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে, তাই আমার ‘গালিলেও’ করা।”

নীরবে
এ শহর ভুলেই থাকল তাঁকে। কীর্তন বলতেই যে মুষ্টিমেয় শিল্পীর নাম মনে পড়ে, চলে গেলেন তাঁদেরই এক জন, ছবি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন নিতান্ত প্রচারবিমুখ, মৃত্যুর পরেও কোনও স্মরণ দেখল না কলকাতা। অথচ এই সে দিন দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধায় তাঁর শিষ্যা সীমা আচার্য চৌধুরী গাইলেন সেই মনোহরশাহি কীর্তন, মূলত যে ধারার শিল্পী ছিলেন ছবি। ১৯২৬-এ জন্ম, পিতা নলিনীমোহন ছিলেন ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস সভাপতি। বাড়িতে আনাগোনা ছিল সুভাষচন্দ্র বসু, বিধানচন্দ্র রায়ের। মা অমলা দেবী গান গাইতেন। গানের সেই পারিবারিক স্মৃতি রেকর্ডে প্রথম ধরা পড়ল ছবি-র গলায় দুটি বাংলা ভজনে (ভারত রেকর্ড কোম্পানি)। তখন বয়স মাত্র বারো। কীর্তনে আসা মূলত নবদ্বীপচন্দ্র ব্রজবাসীর শিক্ষকতায়, ক্রমে হয়ে উঠলেন এক কীর্তন-প্রতিষ্ঠান। সুরের সেই সাধনায় ছেদ পড়ল নীরবে, শহরের নিত্য উদ্যাপনের আলোকবৃত্তটির বাইরেই।

ফিরে দেখা
‘আমাকে যদি যোগ্য মনে করেন, তবেই সরমার রোলটা আমায় দেবেন।’ অসিত সেনকে চিঠি লিখেছিলেন অরুন্ধতী দেবী ‘চলাচল’-এ অভিনয়ের জন্য, চিত্রনাট্য চেয়ে নিয়ে পড়েছিলেন। ‘দীপ জ্বেলে যাই’-তে সুচিত্রা সেনের প্রস্তাবে ছবিতে তাঁর প্রেমিক দেবাশিসের চরিত্রে অভিনয় করতে বাধ্য হয়েছিলেন অসিত সেন। আর নিজের জীবনের যন্ত্রণাময় অতীতের কথা তাঁকে শুনিয়েছিলেন লতা মঙ্গেশকর, ‘জীবনতৃষ্ণা’-র গান রেকর্ডিংয়ের সময়।... এ রকম আরও কত ফেলে-আসা গল্প অসিত সেনের স্মৃতির সোনালি রেখা-য় (দে’জ, ২৫০.০০)। বিশিষ্ট আলোকচিত্রী রামানন্দ সেনগুপ্তের হাত ধরেই ক্যামেরার কাজ, ’৫৬-য় শুরু পরিচালনা। পঞ্চতপা, স্বয়ম্বরা, স্বরলিপি, আগুন, উত্তর ফাল্গুনী, হিন্দিতে সফর, মমতা, খামোশি তাঁর অন্যান্য সাড়া-তোলা ছবি। সম্মানার্থেই তাঁর ছবির রেট্রো নন্দনে ২৮-৩০ জুন, জানালেন অধিকর্তা যাদব মণ্ডল।

নবপর্যায়
‘‘এই পরিশীলনেরই আরেক কাঠি সরেস সংস্করণ চাপ দিচ্ছে, ‘আমরা’ যেন এর চেয়েও বেশি উন্নত হতে পারবার জন্যেই ইতর, অভদ্র, নিম্নবর্গীয় রুচিকে জাতে তুলবার জন্যে উঠে পড়ে লাগি। নইলে আমরা এ বিষয়ে সাম্প্রতিকতম আন্তর্জাতিক প্রগতিশীল চিন্তার সঙ্গে তাল রাখতে পারব না যে।’’ প্রবাল দাশগুপ্তের এই ধারালো রচনাটির সঙ্গে একগুচ্ছ চিন্তা-উসকানো প্রবন্ধ এ বারের অনুষ্টুপ-এ। রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে যেমন লিখেছেন সৌরীন ভট্টাচার্য মীনাক্ষী সেন, তেমনই শর্বরী রায়চৌধুরী কল্যাণ সান্যাল শৈবাল মিত্র ঋতু গুহকে নিয়ে রমন শিবকুমার পার্থ চট্টোপাধ্যায় অসীম চট্টোপাধ্যায় আলপনা রায়ের প্রয়াণলেখ। সমাজ-অর্থনীতি নিয়ে স্বাতী ভট্টাচার্যের সঙ্গে নাটক-চলচ্চিত্র নিয়ে দেবাশিস মজুমদার শান্তনু চক্রবর্তীর জরুরি নিবন্ধ। ‘এই সংখ্যাটি থেকে আবার শুরু হল অনুষ্টুপের আরেক পর্যায়’, জানিয়েছেন সম্পাদক অনিল আচার্য, আর তা নির্বাহী সম্পাদক অম্লান দত্তের হাতযশেই।

উদ্যোগী
স্কুলে পড়তে পড়তেই বিভিন্ন যন্ত্রপাতির প্রতি আকর্ষণ। পঞ্চাশ পেরিয়েও ‘নবীন’ এই বাঙালির নাম অনুপম বড়াল। বাতিল সৌর কোষ দিয়ে তৈরি খেলনার জন্যই এ বছর জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হওয়ার পর কল্যাণী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌর কোষ নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। সৌর প্যানেল তৈরির সময় বেশ কিছু সৌর কোষ ভেঙে বাতিল হয়। কিন্তু তা দিয়ে বড় কোনও যন্ত্র চালানো সম্ভব নয়। তাই সেগুলি ব্যবহার করে ২০০৩-এ খেলনা তৈরি করেন অনুপমবাবু। তার পেটেন্টও পেয়েছেন। সেই জন্যই এ বারের পুরস্কার। ১৯৯৩, ২০০৪-এও জাতীয় পর্যায়ে সরকারি পুরস্কার পান তিনি। সফল হয়েছেন ব্যবসাতেও। ১৯৮৪-তে ১০ হাজার টাকা নিয়ে সৌর কোষ তৈরি শুরু, সৌর শক্তির ক্ষেত্রে তিনিই প্রথম বেসরকারি সংস্থা খোলেন। আজ ব্যবসার বার্ষিক আয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।

অর্ধেক আকাশ
রবীন্দ্রসৃষ্টির অর্ধেক আকাশ শিল্পীদের ক্যানভাসে। ‘রবীন্দ্রসৃষ্টির নারী’ শীর্ষকে চিত্র-কর্মশালার আয়োজন করেছে অ্যান আর্টিজন, ২৫ জুন, দক্ষিণ কলকাতা সংসদ-এর লনে। কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পীরা মেলে ধরবেন তাঁদের নিজস্ব ভাবনা, ঠিক যে ভাবে তিনি রবীন্দ্রসৃষ্টির নারীকে অনুভব করেছেন। থাকবেন রবীন মণ্ডল, আদিত্য বসাক, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত চৌধুরী, শেখর রায় প্রমুখের সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের শিল্পীরাও। কর্মশালার শেষে থাকছে আলোচনা, বক্তা মনসিজ মজুমদার, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণতি ঠাকুর। অনুষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে তরুণ কবি ও প্রাবন্ধিক সুশান্ত দাস।

গণিতের জগৎ
গণিত কি শুধু মানুষের মনের কল্পনা? যদি কল্পনা হয়, তবে তা কতখানি নির্ভরযোগ্য? না কি তা চেয়ার-টেবিল বাড়ি-ঘরের মতোই রীতিমত ব্যস্ত একটা আলাদা জগৎ? আর, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নিয়মকানুনগুলি কেন সাংঘাতিক মাত্রায় গণিত-নির্ভর? একখানি বই ঘিরে আলোচনাসভায় উঠে এল প্রশ্নগুলি। তুললেন কবি, সাহিত্যিক, অধ্যাপক, অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানীরা। লিটল ম্যাগাজিন ‘কানাকড়ি’, নান্দীমুখ সংসদ এবং কলকাতা লজিক সার্কল যে বইখানিকে মর্যাদা দিতে ডেকেছিলেন সভা, তার শিরোনাম ‘গ্যেডেলের অসম্পূর্ণতা তত্ত্ব’। লেখক গণিতের অধ্যাপক মিহির চক্রবর্তী। যিনি বইটিতে ব্যাখ্যা করেছেন ১৯৩১-এ প্রকাশিত অস্ট্রিয়ার গণিতজ্ঞ কুর্ট গ্যেডেলের দুই বিখ্যাত তত্ত্ব। যার পর থেকে, কিছুটা হলেও, মানহানি ঘটেছে গণিতের। গৃহীত হয়েছে, যুক্তিতর্কের পরাকাষ্ঠা হলেও গণিত নিশ্ছিদ্র নয়।

মাসিক বসুমতী
‘প্রকৃতিকে অতিক্রমণ কিছুদূর পর্যন্ত সয়, তার পরে আসে বিনাশের পালা।’ রবীন্দ্রনাথকে মনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মাসে ‘মাসিক বসুমতী’ প্রকাশ করল বিশেষ পরিবেশ সংখ্যা। সুন্দরবন, বিপন্ন প্রাণী, আর্সেনিক প্রভৃতি জরুরি বিষয়ে নানা লেখা। পাশাপাশি আছে পুরাতনী, পুরনো পত্রিকার লেখালেখির সংকলন-বিভাগ। আগের সংখ্যায় পুরোটা জুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। শুরুতেই শ্রীরামকৃষ্ণ-রবীন্দ্র সংবাদ। শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মবার্ষিকীতে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে বিশেষ সভায় সভাপতিত্বের আমন্ত্রণ শুনে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘জলে চললেও চলা যায় এবং ডাঙায় চললেও চলা যায়। জলে যানবাহন আছে, ডাঙাতেও যানবাহন আছে, কিন্তু জল ও ডাঙা তার মধ্যে যে কাদা সেখান দিয়ে চলা যায় না। শরীর ভালো থাকলে কাজকর্ম করি। খারাপ থাকলে বিশ্রাম নিই, কিন্তু শরীরের খারাপ ও ভালোর মাঝামাঝি যে অবস্থা তা ভয়ংকর।’ স্বামী পুণ্যানন্দের স্মৃতিসূত্রে রবীন্দ্রনাথের এই ‘অপ্রকাশিত’ কথাটি লিখেছেন স্বামী নিত্যানন্দ। সঙ্গে যোগেন চৌধুরীর আঁকা পত্রিকার বিশেষ সংখ্যাটির প্রচ্ছদ।

স্মরণে মননে
তাঁর প্রয়াণের পর একশো ছাব্বিশ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। দিনের পর দিন তিনি আরও বেশি করে বিশ্বসংসারে ছড়িয়ে পড়ছেন। ভবানীপুরের রামকৃষ্ণ মঠ (গদাধর আশ্রম) শ্রীরামকৃষ্ণদেবের ১৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন ভাবনায় রামকৃষ্ণদেবকে দেখার চেষ্টা করেছে। বিশিষ্ট সন্ন্যাসী ও গবেষকদের নিরন্তর গবেষণার প্রয়াসে ধরা পড়েছে তাঁর জীবন ও দর্শনের নানা দিক। ইংরেজি ও বাংলায় চল্লিশটি নিবন্ধের মাধ্যমে গাঁথা হয়েছে নিটোল একটি মালা। দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র সহ ৪০০ পাতার স্মরণে-মননে শ্রীরামকৃষ্ণ এক উজ্জ্বল প্রাপ্তি।

গদ্যের গল্প
নিছক সাহিত্য মূল্যায়নের কচকচি নয়, বঙ্কিমকে ছুঁয়ে এই সময়ের কথাসাহিত্যিকদের সৃষ্টির অন্দরমহলে ঢুকে পড়তে চায় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি। তাঁদের নিয়েই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৭৫তম জন্মবর্ষ উদ্যাপন শুরু করছে তারা। আগামিকাল, মঙ্গলবার বাংলা আকাদেমি সভাঘরে সূচনা হচ্ছে একটি অনুষ্ঠানমালার, নাম ‘গদ্যের গল্পসল্প’। বাংলা কথাসাহিত্যের গদ্যের জন্ম দিয়েছিলেন বঙ্কিম, সে কথা মনে রেখে অনুষ্ঠানে তিন কথাসাহিত্যিক অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, কমল চক্রবর্তী এবং রবিশংকর বল বলবেন তাঁদের উপন্যাস নিয়ে। সমন্বয়ে চিন্ময় গুহ।

দ্বিজেন্দ্রসংগীত
দ্বিজেন্দ্রলাল রায় সার্ধশতজন্মবর্ষেও খানিকটা অবহেলিত। তাই তাঁকে ঘিরে ঋকের উদ্যোগে উপস্থাপিত হচ্ছে ‘দ্বিজেন্দ্র-সংগীত’। শিল্পী ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। সুশীল চট্টোপাধ্যায় ও কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের কাছের ছাত্রী ঋদ্ধি ইতিমধ্যেই দ্বিজেন্দ্রলালকে ঘিরে নানা ভাবনা ও রূপায়ণে মন জয় করেছেন সংগীতপিপাসুদের। এই অনুষ্ঠানে সূত্র গড়ে দেবেন সৌমিলি বিশ্বাস। মঞ্চ ও আলোর দায়িত্বে সমীর আইচ ও সৌমেন্দু রায়। পিয়ানোতে দেবাশিস সাহা। অনুষ্ঠানের প্রাক্কথনে সুখেন্দুশেখর রায়। আসর বসবে ২৯ জুন জি ডি বিড়লা সভাগারে, সন্ধে ৭টায়।

সেই সব ছবি
কোন গোঁসাই? হিম গোঁসাই, ছবি তোলে। হাতে-কলমে অক্ষর সাজাতে কিংবা হিম-স্বাক্ষরিত উষ্ণ কার্টুন আঁকতে সিদ্ধহস্ত হিমানীশ গোস্বামী যে শুধু তাতেই থেমে না থেকে ক্যামেরা দিয়েও ছবি আঁকবেন, এ যেন পূর্বনির্ধারিত। আর কী আশ্চর্য সে-সব ছবি! তাঁর পান-প্রসন্ন গদ্য কিংবা বক্ররেখ কার্টুনের মতোই নিজস্ব ঘরানার ছাপে অনন্য। পঞ্চাশের দশকের মধ্যবিত্ত লন্ডন, সেনেট হল ভাঙা, অদ্ভুত সব ভাবের মুহূর্ত জ্যান্ত হয়ে উঠত তাঁর আলোছায়ার কারিকুরিতে। তাঁর রেখে-যাওয়া ফোটোগ্রাফিক সম্ভারের সামান্য এক অংশ নিয়ে তাঁর কন্যা হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিন তলায় বই-চিত্র সভাঘরে ২৫-৩০ জুন (রোজ ৪-৭.৩০) পর্যন্ত চলবে এক প্রদর্শনী। ২৫ তারিখ সন্ধে ৬ টায় সেই প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন হিমানীশ-সুহৃদ, করুণাসাগর-কবি অরবিন্দ গুহ।


ভল্লু সর্দার
গোড়াতেই স্বীকার করিতে হইবে যে, ভল্লুর বয়ঃক্রম ছয় বৎসর।’ ভল্লুর বৈচিত্রহীন জীবনে হঠাৎই আসে অ্যাডভেঞ্চার। সে নিজেকে বায়োস্কোপের নায়কের মতো দুর্দান্ত ডাকাত সর্দার ভেবে বসে। যার নীতি দুষ্টের দমন। নবপরিণীতা কাকিমার দুঃখ দেখে কাকাই ভল্লুর টার্গেট হয়। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘ভল্লু সর্দার’ এ বার বড় পর্দায়। পরিচালনায় দেবদূত ঘোষ। স্কুল জীবনে নাটকে হাতেখড়ি। পরে বিমল চক্রবতীর হাত ধরে কলকাতার মঞ্চে। বিভাস চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসু, কৌশিক সেন, অর্পিতা ঘোষের পরিচালনায় অভিনয়। শ্বেত সন্ত্রাস, তীর্থযাত্রা, মৃত্যু না হত্যা, অগ্নিজল, চতুরঙ্গ, সেই সুমৌলি, ঘরে বাইরে পঁচিশ বছরের নাট্যজীবনে তালিকাটা কম নয়। এই মুহূর্তে ব্যস্ত বড় পর্দায়। পাশাপাশি পরিচালকের ভূমিকায় নতুন অধ্যায়। ‘ভল্লু সর্দার’ কেন? ‘আগেকার ছোটবেলাটা আজকের ছোটরা পায় না। আমার মেয়েকে দেখে এই অভাবটা আরও বেশি বোধ করেছি। বাচ্চাদের মধ্যে ছেলেমানুষি দেখতে আর বাংলা ছবির সঙ্গে সাহিত্যকে মেশাতেই এই গল্প।’ গল্পে তাঁর ছোটবেলার ছোঁয়াও। ‘তখনকার অনেক বাবাই সপ্তাহান্তে বাড়ি আসতেন। ভল্লুর বাবা কোনও সপ্তাহে এক দিন আগেই ফিরেছিলেন। সেই মওকায় বায়োস্কোপ দেখা, যা ভল্লুর কল্পনাকে ইন্ধন জোগায়। এখান থেকে গল্প শুরু।’ ২৯ জুন মুক্তি পাবে ভল্লু সর্দার ।

পরিচালক
মধ্যদুপুরের নির্জনতায় মন দিয়ে গল্পের বই পড়ছিলেন, আরও কিছু ছড়ানো-ছিটনো কন্নড় সাহিত্যের বই টেবিলের ওপর। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের গেস্ট হাউস। তাদেরই সমাবর্তন উৎসব উপলক্ষে সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন ষাট-পেরনো গিরিশ কাসারাভল্লি (জ. ১৯৫০)। কর্নাটকের এই বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার বরাবরই পছন্দ করেন সাহিত্য থেকে ছবি করতে। বললেন ‘সব সময় চেষ্টা করি হালফিল গল্প-উপন্যাস পড়ে ফেলতে। সে সবে নতুন শতকের সমাজ-অর্থনীতি সম্পর্কের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব ভাঙচুর বদল আনছে তা খুঁজতে থাকি। ভাল কোনও গল্প মনে ধরলেই আমার চিত্রনাট্য লেখা শুরু। বছর খানেক, কখনও বছর দু’য়েকও লেগে যায় চিত্রনাট্য শেষ করতে। তার পর ছবি করার কথা ভাবি।’ সেই ’৭৭-এ প্রথম ছবি ঘাটশ্রাদ্ধ থেকে তাবারানা কথে, তাইসাহেবা, দ্বীপ, গুলাবি টকিজ ইত্যাদি মোট তেরোটি ছবি করে তিনি মন ভরিয়ে রেখেছেন ভারতীয় দর্শকের। কিন্তু যে ধরনের ছবি করেন তার প্রচার বা বাণিজ্যের দিকটা তো ক্রমশই কমজোরি হয়ে পড়ছে, এ-প্রসঙ্গ উঠতেই জানালেন ‘আমরা এত কম বাজেটে ছবি করি যে তাতে কোনও সমস্যা হয় না। হয়তো এত কমে ছবি করা সত্যিই মুশকিল, কিন্তু ওটুকু সমঝোতা করতেই হয়, যেহেতু আমাদের ছবি করে যেতেই হবে। যত ছোটই হোক পুঁজি, যত বাধাই আসুক, ছবি করে যেতেই হবে, না হলে যে শিল্পভাবনা থেকে আমরা ছবি করতে এসেছিলাম তার আর অস্তিত্বই থাকবে না।’ নতুন ছবি কূর্ম অবতার এখনও দেখেননি এখানকার দর্শক, নভেম্বরে কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে সম্ভবত দেখতে পাবেন, তাঁর ছবির রেট্রো করা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। ‘কলকাতায় ছবি দেখাতে আমি খুব উৎসাহী, কারণ ভারতীয় সমাজবাস্তবতা চিনেইছি সত্যজিৎ রায়-ঋত্বিক ঘটক-মৃণাল সেনের ছবি থেকে,’ মন্তব্য গিরিশের।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.