ডোনার কার্ড হাতে নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ছাগলবেড গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত দে। ‘বি পজিটিভ’ দুই ইউনিট রক্তের জন্য প্রায় দিশেহারা রঞ্জিতবাবু ব্লাড ব্যাঙ্কে গেলে জানিয়ে দেওয়া হয় কার্ডের বিনিময়ে রক্ত মিলবে না। একজন রক্তদাতা নিয়ে এলে তবে কিছু ব্যবস্থা হতে পারে। অবশেষে একজন দাতাকে জোগার করে আনা হলেও ওই গ্রুপের এক ইউনিটের বেশি রক্ত নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। দিনহাটার ব্যায়াম বিদ্যালয়ের কর্তা বিভুরঞ্জন সাহা কয়েকদিন আগে ডোনার কার্ড দিয়ে এলাকার বাসিন্দা বিশ্বনাথ রায়কে এক ইউনিট ‘ও পজিটিভ’ গ্রুপের রক্তের জন্য পাঠিয়ে দেন। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকেও। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত মজুত না থাকায় রোগীর বাড়ির লোকজনকে এ ভাবেই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রায় দু’মাস ধরে ওই সমস্যা চলছে কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথা বলব।” সুপার কল্যাণ দে বলেন, “চাহিদার তুলনায় রক্ত কম মজুত থাকছে। তাই সমস্যা দেখা দিয়েছে। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “বর্ষার সময় রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কম হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। ওই কারণে ডোনার কার্ড থাকলেও চাহিদামত রক্ত মিলছে না। শিবির না বাড়ালে সমস্যা মেটানো যাবে না।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাস থেকে ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে রক্তের অভাব চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মাসে এক হাজার থেকে ১২০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়। কিন্তু মে মাসে ওই রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ ছিল ৪০০ ইউনিট। এর পর থেকে সমস্যা শুরু হয়। জুন মাসে সমস্যা অনেক বেড়েছে। থ্যালাসেমিয়া ইউনিট চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালকে। কয়েকজন আধিকারিক জানান, দৈনিক ৪০ ইউনিট রক্ত দরকার। মজুত থাকছে সমপরিমাণ রক্ত। বাধ্য হয়ে ডোনার কার্ডের বদলে রক্ত বিনিময়ের ব্যবস্থা চালু করতে হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় রোগীর বাড়ির লোক। |