|
|
|
|
সোনাখালিতে নতুন থানা হবে, চলছে জমির খোঁজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবে দাসপুরে আরও একটি থানা তৈরির পরিকল্পনা করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এখন দাসপুর-১ ব্লকের দাসপুরে থানা রয়েছে। এ বার দাসপুর-২ ব্লকের সোনাখালিতে নতুন একটি থানা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর ফলে সোনাখালি ও তার আশপাশ এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই নতুন থানার জন্য প্রয়োজনীয় জমির খোঁজ শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “সোনাখালিতে একটি থানা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। জমি পেলে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরুর চেষ্টা করা হবে।”
শুধু দাসপুর নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের আরও কয়েকটি জায়গায় নতুন থানা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বড় এলাকা জুড়ে একটি থানা থাকলে কাজ করতে অসুবিধা হয়। দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। অশান্তির খবর পেয়েও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনো যায় না। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এক সময়ে জেলার কয়েকটি এলাকায় নতুন থানা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই পরিকল্পনা-মতো কাজ তেমন এগোয়নি। জেলা পুলিশের সূত্রই জানাচ্ছে, এক সময়ে সদর-কোতোয়ালি থানা ভেঙেও মেদিনীপুর সদর ব্লকের গুড়গুড়িপালে নতুন থানা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। শালবনি থানা ভেঙেও পিরাকাটায় নতুন থানা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু, পরিকল্পনাই সার। নানা কারণে কাজ এগোয়নি। পিরাকাটায় অবশ্য পুলিশ-ফাঁড়ি তৈরি হয়েছে। এ বার দাসপুরের সোনাখালিতে নতুন থানা তৈরি নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
দাসপুর ১ ও ২---এই দু’টি ব্লকে সব মিলিয়ে ২৪টি অঞ্চল বা গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। দাসপুর-১ ব্লকের সদর দাসপুরেই। অন্য দিকে, দাসপুর-২ ব্লকের সদর সোনাখালিতে। এখানে বিডিও-র কার্যালয় সহ অন্যান্য সরকারি অফিস রয়েছে। সাধারণত, একটি ব্লকে একটি থানা থাকারই কথা। কিন্তু, সর্বত্র তা নেই। বিভিন্ন জায়গায় থানার বদলে ফাঁড়ি তৈরি হয়েছে। যেমন, গড়বেতা থানার অন্তর্গত চন্দ্রকোনা রোডে ফাঁড়ি হয়েছে। খড়্গপুর লোকাল থানা এলাকার সাদাতপুরে ফাঁড়ি হয়েছে। সোনাখালিতে নতুন থানা তৈরিরই প্রয়োজন রয়েছে বলে একমত তৃণমূল ও সিপিএম। জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শ্যাম পাত্র বলেন, “দাসপুর-২ ব্লকে থানা নেই। সোনাখালিতে নতুন থানা তৈরি প্রয়োজন। পুলিশ এ সংক্রান্ত পরিকল্পনা করেছে বলে শুনেছি।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুনীল অধিকারী বলেন, “এখন ২৪টি অঞ্চল জুড়ে একটিই মাত্র থানা রয়েছে। নতুন থানা তৈরি হলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।”
সূত্রের খবর, বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও এক সময়ে সোনাখালিতে নতুন থানা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। তবে, বিষয়টি বেশি দূর এগোয়নি। রাজ্যে পালাবদলের পরে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এ নিয়ে দলীয়-স্তরে আলোচনা শুরু করেন। রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হয়। দাসপুরের উপনির্বাচন-পর্ব মিটতেই নতুন থানা তৈরি নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে পুলিশ। এখন জমি খোঁজার কাজ চলছে। দাসপুরের ২টি ব্লক-সীমানায় ৩টি জেলা রয়েছে। হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর। দাসপুর থানা এলাকার বিভিন্ন এলাকায় মাঝেমধ্যেই অশান্তি হয়। এখানে নতুন থানা তৈরি হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ‘নিয়ন্ত্রণে’ আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “সবদিক খতিয়ে দেখেই নতুন থানা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন জমি খোঁজার কাজ চলছে। জমি পেলে যত দ্রুত সম্ভব থানা-ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর চেষ্টা করা হবে।” পরিকল্পনা-মতো কাজ কতদূর এগোয় তা অবশ্য সময়ই বলবে। |
|
|
|
|
|