|
|
|
|
বালি পুরসভা |
দু’বালতি জল চান, তবে চেয়ারম্যানের খোঁজ দিন |
শান্তনু ঘোষ • কলকাতা |
পুরসভার গেটে নিরুদ্দেশ সংক্রান্ত পোস্টার ঝোলানো। তাতে এক ব্যক্তির ছবি। বলা হয়েছে, ‘যিনি খোঁজ দিতে পারবেন, তাঁকে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে দু’বালতি জল’। পোস্টারের নীচে সন্ধান জানানোর জন্য রয়েছে একটি মোবাইল নম্বর। ঘটনাস্থল: বালি পুরসভা।
কোনও আম-আদমি নয়। নিরুদ্দেশ সংক্রান্ত ওই পোস্টারে যে ব্যক্তির ছবি সাঁটা, তিনি সিপিএম পরিচালিত বালি পুরসভার চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ী। ফৌজদারি মামলায় নাম জড়ানোয় যিনি গত ৪ জুন থেকে পুরসভায় আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। আর সন্ধান জানানোর নম্বরটি বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের রেয়াজ আহমেদের।
চেয়ারম্যান ইচ্ছাকৃত ভাবে পুরসভায় আসছেন না, এই দাবি তুলে শুক্রবার সকালে পুরসভার গেটে ওই পোস্টার ঝুলিয়ে দেন বিরোধীরা। এমনকী, না এসেও একটি নথিতে চেয়ারম্যান কী ভাবে সই করলেন, তা নিয়ে অভিযোগ তুলে পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিকের ঘরে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন রেয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, “ইচ্ছে করেই আমরা এমন মজার একটি পোস্টার তৈরি করেছি।” |
|
পুরসভার প্রবেশদ্বারে পড়েছে এই পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র |
বিরোধীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান না আসায় সব রকমের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নাগরিক পরিষেবা কার্যত শিকেয়। কিন্তু, আগামী ৩০ জুন পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ের আমন্ত্রণের চিঠিতে সই রয়েছে চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ীর। এটা কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। রেয়াজ এ দিন বলেন, “চেয়ারম্যান ইচ্ছে করেই পুরসভায় আসছেন না। উনি যদি নিজেকে এলাকাছাড়া বলেই দাবি করছেন, তা হলে সই করলেন কী ভাবে? যদি মামলায় নাম থাকে, তবে আগাম জামিন নিয়ে তিনি তো পুরসভায় আসতেই পারেন।” বোর্ড মিটিংয়ের আমন্ত্রণের চিঠিতে সইয়ের বিষয়টি স্বীকার করে অরুণাভবাবু বলেন, “আমিই চিঠিতে সই করেছি। তবে এখনও জামিন পাইনি বলে পুরসভায় যাচ্ছি না। পুরসভায় না গিয়ে সই করা যাবে না, এমন কোনও নিয়ম নেই।” তাঁর দাবি, গ্রেফতারি এড়াতেই তিনি পুরসভায় আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।
কিন্তু, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে জামিন না পেলে মিটিংয়ের কী হবে? অরুণাভবাবু বলেন, “তখন দেখা যাবে। আশা করছি তত দিনে জামিন পেয়ে যাব।” পাশাপাশি, একটি অবৈধ নির্মাণ সংক্রান্ত নোটিসে চেয়ারম্যানের নামের জায়গায় এক চেয়ারম্যান-পারিষদ সই করেছেন বলেও অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। এ বিষয়ে ওই চেয়ারম্যান পারিষদ, সিপিএমের প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এক কর্মীর ভুলেই এই ঘটনা ঘটেছে। সই করার পরে বিষয়টি নজরে আসে। তখনই ওটা পাল্টে নতুন নোটিস তৈরির নির্দেশ দিই। পুরনো নোটিসটি আর জারি করা হয়নি।” এ দিকে, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান না আসায় পুরসভার কাজ প্রায় বন্ধ হতে চলেছে বলে ‘ডিরেক্টরেট অফ লোকাল বডিজ’ (ডিএলবি)-এর কাছে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। তার পরেই ডিএলবি বালি পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিকের কাছে একটি সামগ্রিক রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। ডিএলবি-র অধিকর্তা গৌতম ঘোষ বলেন, “কার্যনির্বাহী আধিকারিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, কী ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এ ছাড়া অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়টি চালু রাখার জন্য কী করা দরকার, আরও কিছু দিন অপেক্ষা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|