এজলাসে চড়াও হওয়া ও গালি দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে ইংরেজবাজারের কংগ্রেস বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী এবং সরকারি আইনজীবী অসিতবরণ চৌধুরীর বিবাদ মেটাতে আগামী ২৪ জুন বৈঠক ডাকল মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার গোলমালের সূত্রপাত। সে দিন দলবল নিয়ে কংগ্রেসের বিধায়ক মালদহ জেলা জজ সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে সরকারি আইনজীবীর উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। সরকারি আইনজীবী এই ব্যাপারে জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পালের কাছে অভিযোগ জানিয়ে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছেন। ওই অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়ার পাল্টা অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস বিধায়ক। কৃষ্ণেন্দুবাবু নিজেও একজন আইনজীবী। এই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার থেকে মালদহ আদালতের সরকারি আইনজীবী অসিতবরণবাবুকে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী দিয়েছে জেলা পুলিশ। মালদহ আদালতে আইনজীবীর অফিসে পাঁচজন পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে । মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “সরকারি আইনজীবী লিখিতভাবে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে তাঁকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী দেওয়া হয়েছে। তাঁর অফিসে ৫ জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।” এই ঘটনার পরে বুধবারই কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠক ডাকে মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশন। সেখানে সমস্যার সমাধানসূত্র মেলেনি। আগামী ২৪ জুন বার অ্যসোসিসেশনের সাধারন সভা ডাকা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “যা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। দুজনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।” আদালত সূত্রের খবর, ফাস্ট ট্র্যাক ফার্স্ট কোর্টের বিচারক জীবেশজ্যোতি বিশ্বাসের আদালতে কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলা চলছে। সরকারি আইনজীবীর অভিযোগ, “এজলাসে ঢুকে বিধায়ক আমার জামার কলার ধরেছেন। এজলাসে অন্যান্য আইনজীবীরা আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে না এলে হয়তো আদালতেই মেরে ফেলা হত।” অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষ্ণেন্দুবাবু দাবি করেন, “আমি কেন এজলাসে ঢুকে কাউকে হুমকি দিতে যাব? কেন আমার বিরুদ্ধে আদালতে খুনের মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়ার মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে তা অসিতবাবুর কাছে জানতে গিয়েছিলাম।” অসিতবাবু এজলাসের মধ্যেই তাঁকে গালি দিয়েছেন বলে অভিযোগ কংগ্রেস বিধায়কের। কৃষ্ণেন্দুবাবুর দাবি, আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে এক সময়ে ৪৬টি মামলা ছিল। এখন কমে ৪-৫ টিতে দাঁড়িয়েছে। আদালতে মামলা থাকায় তিনি পাসপোর্ট পাচ্ছেন না। সে জন্য দ্রুত মামলার নিস্পত্তির চেষ্টা করছেন। এ ব্যাপারে বেশ কিছুদিন আগে তাঁর সমস্ত মামলার কাগজপত্র অসিতবাবুর কাছে চেয়ে পাঠান রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। অসিতবাবু ওই সমস্ত কাগজপত্র পাঠাতে গড়িমসি করছিলেন। তিনি এই ব্যাপারে খোঁজ নিতে গেলে অসিতবাবু তাঁর কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগ কৃষ্ণেন্দুবাবুর। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অসিতবাবু। তিনি বলেন, “আমি যে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছি বিধায়ক প্রমাণ করুন। বিধায়কের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেই ৫ লক্ষ টাকার গল্প ফাঁদা হয়েছে। বিধায়ক এত দিন কেন অভিযোগ জানাননি। মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করানোর জন্য তিনি যে চাপ দিচ্ছেন আজকের ঘটনায় ফের প্রমাণ হল।” |