নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রেকার দোকানে, দু’জনের মৃত্যু
মুম্বই যাওয়ার টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছিল। দিন কয়েক পরেই ওখানে কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। ছেলে কাজ করে টাকা পাঠালে সাংসারের হাল ফেরার স্বপ্ন দেখেছিলেন মা আঞ্জিলা বিবি। কিন্তু বুধবার রাতে দুর্ঘটনা ছেলে হাসান মণ্ডলের (২১) মৃত্যুতে তাঁর সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। ওই দিন রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের রাজাপুর গ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রেকার রাস্তার পাশের দোকানে ঢুকে পড়লে গুরুতর আহত হন সাত জন। স্থানীয় মানুষ আহতদের বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান হাসান মণ্ডল ও রুহুল কুদ্দুস (২৩)।
রাস্তা কেটে বিক্ষোভ।
বুধবার রাতে ওই ঘটনার পরে বেআইনি গাড়ি চলাচলের উপরে নিয়ন্ত্রণ, ট্রেকার চালকে গ্রেফতার, রাস্তায় বাম্পার ও মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে রাজাপুরে এলাকার মানুষ রাস্তা খুঁড়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে বসিরহাট-ন্যাজাট রোড অবরোধ করেন। অবরোধ চলে দুপুর পর্যন্ত। পুলিশ গিয়ে ওই সমস্ত দাবির বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুরারীশা পঞ্চায়েতের রাজাপুর গ্রামে বড় রাস্তার পাশে জিয়াদ সর্দারের পাশাপাশি দু’টি দোকান। বুধবার রাত সানে ৮টা নাগাদ দোকানে ছিলেন তাঁর ছেলে গফ্ফর সর্দার। দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। বলছিলেন তাঁর মুম্বইতে কাজ পাওয়ার কথা। আর কয়েকদিন পরেই চলে যাবেন সেখানে। একটু পরে সেখানে এসে আড্ডায় যোগ দেন রুহুল কুদ্দুস।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই ট্রেকার।
কথাবার্তার মধ্যেই হঠাৎ একটি ট্রেকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হুড়মুড়িয়ে তাঁদের উপরে এসে পড়ে। শেষ মুহূর্তে কয়েকজন সরে যেতে পারলেও হাসান ও রুহুল-সহ সাতজন গুরুতর জখম হন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান দু’জনেই।
দুর্ঘটনার পরে চালক ট্রেকার ছেড়ে পালিয়ে যান। উত্তেজিত জনতা ট্রেকারটি ভাঙচুর করে রাস্তার পাশে পুকুরে ফেলে দেয়। এর পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তা কেটে, গাছের গুঁড়ি ফেলে বসিরহাট-ন্যাজাট রোড অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ। তাঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে ট্রেকার চালককে গ্রেফতার করতে হবে। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় বেআইনি যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রাস্তায় বাম্পার তৈরি করতে হবে। মৃতদের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। সকালে ব্যস্ত সময়ে রাস্তা অবরোধের জেরে কাজে বেরিয়ে সমস্যায় পড়েন। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বেলা একটা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়ে রুহুলের মা রাবেয়া ববি বলেন, “ওর সেলাইয়ের কাজ করার টাকায় কোনওরকমে সংসার চলত। এখন কী হবে জানি না?”
নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.