পুজোর বার্তা দিল পেটকাটি
পুজো আসার বার্তা দিল পেটকাটি!
ঢোল, কাঁসির বাদ্যে গদাইপুরে পেটকাটি দুর্গার নতুন কাঠানো গড়ে সাঙ্গ হল পুজো। বৃহস্পতিবার বর্ষণ সিক্ত রথের দিনে। এই সঙ্গে শুরু হয়ে গেল জঙ্গিপুরে দুর্গাপুজোর কাউন্ট ডাউন। এর পরই পাশেই আখিরা নদী থেকে মাটি এনে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করবেন গ্রামেরই মৃৎশিল্পী অজয় দাস। প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এই দুর্গামূর্তিতে মাটি পড়লেই জঙ্গিপুরে সর্বত্রই শুরু হয়ে যায় প্রতিমা তৈরির কাজ। এটাই পরম্পরা।
প্রায় এক হাজার পরিবারের বাস গদাইপুর গ্রামে। সেখানেই এই পারিবারিক পুজো এখন পরিবারের গণ্ডি ছাড়িয়ে রূপ নিয়েছে সর্বজনীনের।
পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রতি বছর রথের দিন থেকেই শুরু হয় পেটকাটির কাঠামো তৈরি। তার পর বিভিন্ন শরিকের সুবিধে মত সেই কাঠামোটিতে মাটি দেওয়ার কাজ শুরু হয় কোনও এক শুভ নির্ঘন্টে।” তার ব্যাখ্যা, “এটা কোনও শাস্ত্রীয় বিধান নয়, পারিবারিক পরম্পরা। প্রায় ৬০ বছর আগে দুর্গাপুজো এখানে শুরু হত বোধনের দিন থেকে। দেওয়া হত বলিদান। বহু শরিকে পুজো ভাগ হয়ে যাওয়ায় সব সময় সে পরম্পরা মেনে চলা যায় না। তবে শাস্ত্রীয় বিধান মেনে এখনও পেটকাটিতে পুজো শুরু হয় জীতাষ্ঠমি থেকে। দু-বেলা ঢাক, ঢোল, সানাই, বাজিয়ে ষষ্ঠীর দিন সকাল পর্যন্ত চলে বিশেষ পুজো।”
গদাইপুরে প্রতিমার কাঠামো পুজো। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
দীর্ঘ দিন থেকেই পেটকাটি দুর্গার এক চালা দেবীমূর্তি তৈরি করে আসছেন গ্রামেরই মিস্ত্রী পরিবার। পেশায় রাজমিস্ত্রী হলেও মৃৎশিল্পী হিসেবে নাম-ডাক রয়েছে অজয় দাসের। প্রায় ২৫ বছর ধরে তৈরি করছেন পেটকাটি মূর্তি নিজের হাতে। তার আগে সে মূর্তি গড়েছেন তার বাবা বন্যেশ্বর মিস্ত্রী। তার আগে ঠাকুরদা।
অজয়বাবু বলেন, “পয়সার জন্য নয়। পেটকাটি মূর্তি তৈরি করার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটা বিশেষ মর্যাদা এ আনন্দের বিষয়। তা ছাড়া এই মূর্তি তৈরির সময় কিছু বিশেষ লোকাচারও মেনে চলতে হয়।” এই পুজো নিয়ে ছড়িয়ে আছে নানান জনশ্রুতি। শোনা যায়, মালদহের জনৈক ক্ষুদিরাম রায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই দুর্গাপুজোর গদাইপুর গ্রামে। এক দিন সন্ধ্যাপ্রদীপ দিতে এসে নিখোঁজ হন ওই পরিবারেরই এক কিশোরী। পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই কিশোরীকে উদ্ধার কর হয় দেবীদুর্গার পেট চিরে। সেই থেকেই দেবীদুর্গা এখানে পরিচিত হয় পেটকাটি দুর্গা হিসেবে।
অজয়বাবু বলেন, “এই জনশ্রুতি মেনেই প্রতিমা তৈরির সময়ে একটি শুভ দিন দেখে প্রতীকী হিসেবে চিরে দেওয়া হয় দেবীমৃন্ময়ী মূর্তির পেট।” পুরুষানুক্রমে অজয়বাবুরা গড়ে আসছেন এই মূর্তি। কিন্তু এর পরে কে? অজয়বাবুর কথায়, “হয়ত পরম্পরা ভেঙেই আসবেন অন্য কোনও কারিগর।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.