একের পর এক আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থার হুঁশিয়ারির মধ্যেই ভারতের শেয়ার বাজারের রেটিং বাড়িয়ে দিল আমেরিকার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক জে পি মর্গ্যান। তাদের মতে, বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমা এবং টাকার দামের পতন শেয়ার বাজারের পক্ষে কার্যত শুভ ইঙ্গিত বহন করছে। প্রকৃতপক্ষে এর জন্যই ভারতের শেয়ার বাজারে এখন লগ্নি করলে ভাল মুনাফা করার সুযোগ রয়েছে। এই মূল্যায়নের জেরে সেনসেক্স বৃহস্পতিবার ফের ঢুকে পড়ল ১৭ হাজারের ঘরে। তবে এ দিনও পতনে ফের নতুন নজির গড়েছে টাকা। বাজার বন্ধের সময়ে ডলারে টাকা ১৫ পয়সা পড়ে দাঁড়ায় ৫৬.৩০। যা গত ৩০ মে টাকার সর্বনিম্ন দরের (প্রতি ডলারে ৫৬.২৩ টাকা) থেকেও নীচে।
জেপি মর্গ্যানের এই মূল্যায়ন ছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমার জের এ দিন চাঙ্গা করে তুলেছে শেয়ার বাজারকে। আমেরিকার আর্থিক বৃদ্ধি কমই থাকবে বলে সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের পূর্বাভাস এবং চিনে পরপর আট মাস শিল্পোৎপাদন কমার প্রভাবেই বিশ্ব বাজারে চাহিদা পড়ার আশঙ্কায় পড়েছে তেলের দাম। ইউরোপে তা নেমে আসে ব্যারেলে ৯৯ ডলারে, আমেরিকায় প্রায় ৮১ ডলারে। যা গত ১৮ মাসে সর্বনিম্ন। সেনসেক্স এ দিন এক লাফে উঠে গিয়েছে ১৩৫.৯৩ পয়েন্ট। এবং বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ছিল ১৭০৩২.৫৬ অঙ্কে। তবে দাম কমার কারণেই আমদানিকারী সংস্থাগুলি তেল কেনার জন্য বিপুল পরিমাণ ডলার কিনতে থাকে। যার জেরে পড়তে থাকে টাকার দাম। এক সময়ে তা নেমে যায় ৫৬.৫৭ টাকায়। এমনকী রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও ডলার বিক্রির মাধ্যমে বাজারে হস্তক্ষেপ করতে হয়। সেই কারণেই দিনের শেষে কিছুটা বাড়ে টাকা।
তবে টাকার দামের পতন শেয়ার বাজারের পক্ষে শুভ কেন? এর ফলে এখন ভারতের বাজারে কম ডলার বিনিয়োগ করে তুলনায় আগের থেকে বেশি পরিমাণ শেয়ার কেনা যাবে। বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “এর ফলে বিশেষ করে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি শেয়ারে লগ্নি করতে উৎসাহিত হবে।” অজিতবাবুর মতো বিশেষজ্ঞদের মতে, জে পি মর্গ্যানের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার এই মূল্যায়নের সুযোগ গ্রহণ করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। এই সময়ে বকেয়া আর্থিক সংস্কার রূপায়ণে কেন্দ্র এগোতে শুরু করলে তার প্রভাবে শেয়ার বাজার দ্রুত চাঙ্গা হতে বাধ্য। |