জিয়াবাও-মনমোহন কথা
বাসমতীর সুগন্ধ ভারত-চিন সম্পর্কে
ভারত থেকে সুগন্ধী বাসমতী চাল আমদানি করবে চিন। রিও-য় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে চিনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের বৈঠকের পরে আজ এ কথা ঘোষণা করে চিনের এক কূটনীতিক বলেন, বেজিং চায় যাবতীয় উদ্বেগের অবসান হয়ে বাসমতীর সুগন্ধ ছড়াক দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কে। ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের ক্রমাগত নৌ আধিপত্য বাড়িয়ে চলা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের শেষ নেই। তা নিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে এই প্রথম নৌ কার্যকলাপ সংক্রান্ত আলোচনা প্রক্রিয়া বা ‘মেরিটাইম ডায়লগ’ শুরু করবে দিল্লি। জিয়াবাওয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আজ বিষয়টি চূড়ান্ত করলেন মনমোহন। পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টিও আজ উঠে এল দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায়। স্থির হয়েছে, পণ্য আমদানি বাড়াতে ভারতের বিভিন্ন শহরে বিশেষ বাণিজ্য কেন্দ্র খুলবে বেজিং, বসাবে আমদানি মেলাও।
রিও-য় মনমোহন সিংহের সঙ্গে চিনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও। বৃহস্পতিবার পিটিআইয়ের ছবি।
রিও ২০ সম্মেলনে মনমোহনের পাশাপাশি সফরে এসেছেন চিনা প্রধানমন্ত্রীও। সেই সম্মেলনের ফাঁকে দুই প্রধানমন্ত্রী আজ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন। আর সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই নয়াদিল্লি তুলে আনে ‘মেরিটাইম ডায়লগ’-এর প্রসঙ্গ। ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের বাড়তি সক্রিয়তার নেতিবাচক প্রভাব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও পড়তে শুরু করেছে। সম্প্রতি দক্ষিণ চিন সাগরে ভিয়েতনামের একটি ব্লক থেকে ভারতীয় সংস্থার তেল উত্তোলন নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলে বেজিং। পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় ভারতীয় তেল উত্তোলক সংস্থাটি। এই পরিস্থিতিতেই বেজিংয়ের সঙ্গে ‘মেরিটাইম ডায়লগ’ শুরুর জন্য তৎপরতা বাড়াতে থাকে সাউথ ব্লক। মনমোহন-জিয়াবাও বৈঠকের পর আজ বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই জানান, ‘মেরিটাইম ডায়লগ’-এর জন্য সম্মত হয়েছে দুই দেশ। ভারতের প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও বন্দর মন্ত্রকের অফিসারদের নিয়ে এ জন্য একটি আর্ন্তমন্ত্রক গোষ্ঠী তৈরি করা হবে, যারা চিনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করবেন। পাশাপাশি ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়েও দুই প্রধানমন্ত্রীর কথা হয়েছে।
অভিনব প্রতিবাদ রিওয়। বিশ্বের খাদ্যনীতির প্রতিবাদে। ছবি: এপি
বিদেশ সচিবের কথায়, জি ২০ সম্মেলন ও রিও কুড়ি সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে দু’দেশের মধ্যে এখন ভালো বোঝাপড়া চলছে। এই দুই সম্মেলনে নয়াদিল্লি-বেজিং যৌথ ভাবে একই অবস্থান নিয়ে চলেছে। দুই উন্নয়নশীল দেশের পারস্পরিক এই সহযোগিতার প্রেক্ষাপটেই আজ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার নিয়েও আলোচনা হয়। নয়াদিল্লির মূল উদ্বেগ, চিনের সঙ্গে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি। চিন রফতানি বাড়ালেও, ভারতীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বেজিংয়ের উৎসাহে ঘাটতি রয়েছে। জিয়াবাওয়ের সঙ্গে আলোচনায় সেই বিষয়টিই তুলে ধরে আজ মনমোহন বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১৫ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছে দিতে হবে। সে জন্য ভারতের রফতানিও বাড়াতে হবে। বিদেশসচিব জানান, ভারত থেকে চিনে এ বার চাল রফতানি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত বাসমতী চাল রফতানি করা হবে বিশ্বের বৃহত্তম চাল উৎপাদক দেশ চিনে। ভারতের চাল আমদানির উপরে চিনের তরফে যে সব নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রাখা হয়েছিল, গত এপ্রিলে বেজিং তা তুলে নিয়েছে।
পরিকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের বিষয়েও আজ মনমোহন-জিয়াবাও কথা হয়েছে। ভারতে বৃদ্ধির হার যখন ক্রমশই নিম্নগামী, তখন পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে মনমোহন এখন পাখির চোখের মতোই দেখছেন। বিদেশসচিব জানান, এ ব্যাপারে নয়াদিল্লির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়ে চিনা প্রধানমন্ত্রী আজ জানান, ভারতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগে চিনা সংস্থাগুলির মধ্যে উৎসাহ রয়েছে। সুতরাং এ ব্যাপারে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.