মুর্শিদাবাদে ফের নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। বুধবার বিকেলে বহরমপুর সদর হাসপাতাল লাগোয়া একটি মন্দিরে বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আগাম খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই মন্দির চত্বরে অপেক্ষা করতে থাকেন বহরমপুরের বিডিও অধীর বিশ্বাস। কিছু ক্ষণ পরেই মন্দিরের সামনের রাস্তায় রিকশা দাঁড় করিয়ে পাত্র-পাত্রী ও তাঁদের সঙ্গে থাকা আত্মীয়পরিজন নামতেই পুলিশ তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে পাত্রীর মা সনকা হাজরা মেয়ের ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দিলে তাঁদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
বহরমপুরের বিডিও কৃষ্ণেন্দুকুমার মণ্ডল বলেন, “লালবাগের বাঁশগোলার সন্তোষ হাজরার সঙ্গে কালীতলাদিয়ার হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী বিশাখা হাজরার বিয়ে ঠিক হয়। সেই মতো পাত্র-পাত্রী ও দু’পক্ষের বাড়ির লোকজন বহরমপুরের একটি মন্দিরে হাজির হন। সেখান থেকে তাদের থানায় নিয়ে গিয়ে দু’পক্ষকে বুঝিয়ে ওই নাবালিকার বিয়ে ভেস্তে দেওয়া হয়।” |
বছর দু’য়েক আগে বিশাখার বাবা অজিত হাজরা মারা যান। মা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন পেশায় রিকশাচালক স্বপন হাজরাকে। চালতিয়া এলাকায় ঘর ভাড়া করে থাকেন তাঁরা। বিশাখারা তিন ভাইবোন। দাদা চার মাস আগে রাজমিস্ত্রির কাজে ভিন রাজ্যে গিয়েছে। ছোট ভাই মায়ের কাছেই থাকে। বিশাখা থাকে তার ঠাকুমার কাছে কয়া গ্রামে। বিশাখা জানায়, “লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু মা জোর করে আমার বিয়ে দিতে চাইছে। এমনকী আগে থেকে আমাকে বিয়ের কথাও জানানো হয়নি। সমস্ত আয়োজন ঠিক করে রেখে আমাকে ডেকে পাঠায়। সেই মতো মায়ের কাছে চালতিয়ায় বেড়াতে এলে আমার ইচ্ছে বিরুদ্ধে নিয়ে এসে মন্দিরে বিয়ের ব্যবস্থা করে।” পাত্র সন্তোষ হাজরা পেশায় সর্বাঙ্গপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। তাঁর মা মীরা হাজরা অবশ্য বলেন, “ওই ছেলের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। তার বিয়ের কথাও কিছু জানি না।” বহরমপুর থানার আইসি মোহায়মেনুল হক বলেন, “পাত্রী পক্ষের পরিবারকে বুঝিয়ে বিয়ে ভেস্তে দেওয়া গিয়েছে।” হোমে রেখে নাবালিকার পড়াশোনার বন্দোবস্ত করা যায় কি না, সে ব্যাপারেও প্রশাসন ভাবছে। |