জলা থেকে জাল বেয়ে ঝাঁপ ঝোপে
নকর্মী ও চা বাগান কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় হাঁসখোওয়া চা বাগানের সেচের জল রাখার চৌবাচ্চা থেকে উদ্ধার করা হল পূর্ণবয়স্ক একটি পুরুষ চিতাবাঘকে। বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ শ্রমিকেরা স্প্রে করতে বার হয়ে চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশনে দুটি চৌবাচ্চার একটি জলে হাবুডুবু খেতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় বন দফতরের সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডে। সকাল ৯টা নাগাদ সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের কর্মীরা সেখানে পৌঁছন। বনকর্মীরা চৌবাচ্চায় নাইলনের জাল ফেলে দিতেই চিতাবাঘটি সেটি ধরে বার হয়ে চা বাগানের ঝোপে লুকিয়ে পড়ে।
দার্জিলিং বন বিভাগের ডিএফও সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “সম্ভবত ভোরবেলা জল খেতে নেমে চিতাবাঘটি চৌবাচ্চায় আটকে পড়ে। প্রায় ১০ ফুট গভীর চৌবাচ্চায় ৩-৩.৫ ফুট মতো জল আছে। ওই পরিস্থিতিতে চিতাবাঘটি নিজে থেকে লাফ দিয়ে বার হতে পারেনি।” গত কয়েকদিন ধরেই চিতাবাঘটি ওই চা বাগানে ঘোরাফেরা করছিল। মঙ্গলবার বিকালেও চিতাবাঘটিকে চা বাগানের ৭ নম্বর সেকশনের একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের উপরে বসে থাকতে দেখেন শ্রমিকেরা। চিতাবাঘটি প্রায়ই শ্রমিক বস্তিতে ঢুকে গরু অছবা ছাগল মেরে ফেলছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। তার মধ্যে এদিন চিতাবাঘটিকে বনকর্মীরা চা বাগানেই ছেড়ে দেওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকদের মতে, চিতাবাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে অচেতন করার পরে কোনও গভীর জঙ্গলে ছাড়া উচিত ছিল। চা বাগানে ছেড়ে দেওয়ায় চিতাবাঘটি ফের উৎপাত করবে। ডিএফও’র বক্তব্য, “চৌবাচ্চায় আটকে থাকা চিতাবাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করা হলে অচেতন হয়ে সেটি জলে ডুবে মারা যেতে পারত। চিতাবাঘটি যাতে চা বাগানে নতুন করে উদ্বেগ ছড়াতে না-পারে সেটা দেখা হবে।” গত মাসে হাঁসখোওয়া চা বাগান লাগোয়া সঙ্গতরাম চা বাগানের জলাধারে মই নামিয়ে বনকর্মীরা একটি বছর ছয়েকের চিতাবাঘকে উদ্ধার করেন। সেটিও চা বাগানেও ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই চা বাগানের মালিক আশিস পালের অভিযোগ, চিতাবাঘটি এখনও সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার ফলে শ্রমিকেরা পাতা তোলার কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন। কাঁচা পাতা তোলার কাজ মার খাচ্ছে। সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এদিন দুটি চা বাগানেই খাঁচা পাতার আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতি বা শুক্রবারের মধ্যেই সঙ্গতরাম ও হাঁসখোওয়া চা বাগানে খাঁচা পাতা হবে।” চিতাবাঘ উদ্ধারে গিয়ে বন কর্মীদের বেগ পেতে হয়। বাগানের ৮ নম্বর সেকশনে ১০ বাই ১৫ ফুটের দুটি জলাধার রয়েছে। তারই একটি জলাধারে চিতাবাঘটি পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে আশপাশের এলাকা থেকে কয়েকশো লোক জমা হয়। যে কোনও মুহুর্তে চিতাবাঘটি চৌবাচ্চা থেকে বার হয়ে লোকজনের উপরে হামলা চালাতে পারে আশঙ্কা করে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশদের আনা হয়। ভিড় সামাল দেওয়া যায়নি। নাইলনের জাল পেয়ে চিতাবাঘটি চা বাগানের নির্জন দিকে ছুটে যাওয়ায় স্বস্তির শ্বাস ফেলেন বনকর্মীরা। চা বাগানের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার দেবজিৎ করগুপ্ত বলেন, “বেশ কয়েকটি চিতাবাঘ রয়েছে এই এলাকায়। শ্রমিক বস্তিতে অত্যাচার করছে। হাতের সামনে চিতাবাঘ পেয়ে শ্রমিকেরা হামলা করতে পারে আশঙ্কা করে বন দফতরে খবর দিই। দ্রুত চিতাবাঘগুলিকে সরানোর জন্য বন দফতরের কর্তাদের বলেছি।”
ছবি: বিশ্বরূপ বসাক


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.