ইনফোসিসকে রাখতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ রাজ্য
নফোসিসকে এ রাজ্যে ধরে রাখার জন্য সফ্টওয়্যার টেকনোলজি পার্ক অফ ইন্ডিয়াকে (এসটিপিআই) যে আয়কর-ছাড় দেওয়া হত, তা ফের চালু করা যায় কি না, সে বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলছে রাজ্য। বুধবার বিধানসভায় এ কথা জানান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরকারের ঘোষিত নীতি অনুযায়ীই তাঁরা যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) করতে দিতে পারবেন না, সে কথা ফের উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী জানান, ইনফোসিস বা এই ধরনের বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে ধরে রাখতে রাজ্য খুবই আগ্রহী। তাই এসইজেড না হলেও অন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই যে বিশেষ আর্থিক অঞ্চলগুলি রয়েছে, তার মধ্যে ইনফোসিস জায়গা করে নিতে পারে কি না, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী। ইনফোসিসকে ইতিমধ্যেই ৫০ একর জমি দেওয়া হয়েছে। জমির দাম হিসেবে তারা ৭৫ কোটি টাকা দিয়েও দিয়েছে। তবে কি এই জমির পরিবর্তে ইনফোসিসকে অন্য কোথাও জমি দেওয়া হতে পারে? শিল্পমন্ত্রী অবশ্য তার কোনও ব্যাখ্যা দেননি।
এ দিন প্রশ্নোত্তর পর্বে শিল্পমন্ত্রী জানান, ২০১১-র জুন থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যে প্রস্তাবিত শিল্প প্রকল্পের সংখ্যা ১২৮। তার মধ্যে ১০০টি বৃহৎ প্রকল্প। ওই সময়সীমার মধ্যে বিনিয়োগের পরিমাণ ৮০ হাজার কোটি টাকা। ২০১১-১২ আর্থিক বছরে সরকার অধিগৃহীত শিল্পগুলির পুনরুজ্জীবনের জন্য কত অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, এ দিন তা-ও জানতে চাওয়া হয় শিল্পমন্ত্রীর কাছে। তিনি জানান, দুর্গাপুর কেমিক্যালস্কে ৭ কোটি ৯৯ লক্ষ ৯৫ হাজার, ওয়েস্টিংহাউস স্যাক্সবি ফার্নারকে ১ কোটি ৫৭ লক্ষ, ব্রিটানিয়া ইঞ্জিনিয়ারিংকে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ, গ্লুকোনেট হেল্থকে ৩ কোটি এবং শালিমার ওয়ার্কসকে ৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষে ওই সংস্থাগুলির জন্য বরাদ্দ হয়েছে যথাক্রমে ১১ কোটি, ৮ কোটি, ৭ কোটি, ৮ কোটি ৩০ লক্ষ এবং ৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।
এ ছাড়া আরও ছ’টি রুগ্ণ সংস্থার পুনরুজ্জীবনের বিষয়টিও শিল্পে পারদর্শী সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে স্থির হবে বলে জানান পার্থবাবু। শ্রমিকদের চাকরি বজায় রেখে সংস্থাগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টাই করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাদের সঙ্গেও আলোচনা করব।” এই প্রস্তাবে তাঁকে ধন্যবাদ জানান সূর্যকান্তবাবু। দুর্গাপুর এমএএমসি খোলার ব্যপারেও তাঁরা নানা ভাবে উদ্যোগী বলে দাবি করেন শিল্পমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই সেখানে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
সিপিএম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা শিল্পগুলির রুগ্ণতার কারণ জানতে চান। তাঁর কথায়, “দোষটা কার? কর্মীদের না কর্তৃপক্ষের? আমরা না হয় ৩৪ বছরে সব ডুবিয়েছি, আপনারা কত বছরে সে সব ভাসাবেন, সেটা জানতে চাই?” পার্থবাবু বলেন, “কর্তৃপক্ষের অপদার্থতার পাশাপাশি কিছু ক্ষেত্রে জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলন ও অন্যান্য সমস্যাও দায়ী। এ ছাড়া উৎপন্ন সামগ্রী বিপণনে গাফিলতির শিকারও হয়েছে অনেক সংস্থা।” শিল্পের জমিতে শিল্প না হয়ে অন্য কিছু হলে তাঁরা মেনে নেবেন না বলেও এ দিন বিধানসভায় জানান শিল্পমন্ত্রী। বলেন, “জমি নিয়ে ফেলে রাখা চলবে না। জমি পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে।”
সরকার যতই শিল্পের কথা বলুক, শাসক দলের কিছু নেতা-নেত্রীই এর অন্তরায় হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ তোলেন পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন। দিল্লি রোড বরাবর হুগলি শিল্পাঞ্চলে একটি সংস্থা প্যাকেজ্ড ড্রিঙ্কিং ওয়াটার তৈরির একটি ছোট কারখানা গড়তে চাইলেও তৃণমূলের কিছু নেতার তোলাবাজিতে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, “প্রশাসন এই সব বিষয়ে সক্রিয় আছে। যারা এই কাজ করবে তাদের সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.