ক্ষুদ্র চা চাষে ৩০০ কোটি ব্যয়ের প্রস্তাব
দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ক্ষুদ্র চা চাষের উন্নয়নে ৩০০ কোটি টাকা খরচের প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় চা পর্ষদ। রবিবার শিলিগুড়িতে নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় এ কথা জানান চা পর্ষদের সহ অধিকর্তা (চা উন্নয়ন) রাকেশ কুমার। দেশে মোট চা উৎপাদনের ২৭ শতাংশ উৎপন্ন হয় ক্ষুদ্র চা বাগানগুলি থেকেই। উত্তরবঙ্গে উৎপন্ন চায়ের (বছরে প্রায় ২৫২ মিলিয়ন কিলোগ্রাম) ৩২ শতাংশ ক্ষুদ্র চা বাগানগুলি থেকে আসে। ক্ষুদ্র চা চাষের উপর তাই গুরুত্ব দেওয়া জরুরি বলে জানান চা পর্ষদের ওই কর্তা। সেই লক্ষ্যে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় পর্ষদের শাখা অফিস খোলার প্রস্তাব রয়েছে। কাঁচা পাতার দাম নির্ধারণ এবং উৎপাদন ইউনিটগুলির চা পাতার গুণমান খতিয়ে দেখতেও গঠন করা হচ্ছে ‘মনিটরিং কমিটি’। চা পর্ষদের সহ-অধিকর্তা বলেন, “শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে ইতিমধ্যেই পর্ষদের চা উন্নয়ন বিভাগের কার্যালয় রয়েছে। উত্তরবঙ্গ এবং লাগোয়া এলাকায় ক্ষুদ্র চা চাষের উন্নয়নে আরও পাঁচ জায়গায় শাখা অফিস খোলার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে এবং কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে অফিস চালু করার কথা। অন্য ৩ টি করার প্রস্তাব রয়েছে বিধাননগর, উত্তর দিনাজপুর এবং কিসানগঞ্জে। দ্বাদশ পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় ৩০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে ক্ষুদ্র চা চাষের উন্নয়নে। তাতে চাষিদের আর্থিক সহায়তা-সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে।” পর্ষদের ওই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনও।
রবিবারের সভায় বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, শঙ্কর মালাকার এবং রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
সংগঠনের সম্পাদক নিতাই মজুমদার বলেন, “ক্ষুদ্র চা চাষের উন্নয়নে ৩০০ কোটি টাকার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাকে সাধুবাদ। পাশাপাশি কাঁচা পাতার দাম ঠিক করা এবং চায়ের গুণমাণ ঠিক রাখতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা গুরুত্বপূর্ণ।” পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষুদ্র চা বাগানগুলির সমস্যা মেটাতে মোট ৫ টি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তার মধ্যে ৩ টি অসমে, ২টি উত্তরবঙ্গে। তার মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক-সহ ৮সদস্যের প্রতিনিধি দল তৈরি হয়েছে ইসলামপুরে। জলপাইগুড়িতেও ওই কমিটি গঠনের কাজ চলছে। এ দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। ক্ষুদ্র চা চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বিধানসভায় দেবপ্রসাদবাবু এবং তিনি সরব বলে দাবি করেন শঙ্করবাবু। চা পর্ষদের দফতর বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রসারণ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী জয়রাম রমেশের উদ্যোগেই শুরু হয় দাবি করে তাঁকে ধন্যবাদ জানান দেবপ্রসাদবাবু। তাঁর কথায়, নব্বইয়ের দশকে গ্রামাঞ্চলে যখন ক্ষুদ্র চা বাগান একটা দুটো করে গড়ে উঠতে শুরু করে তখন বাইরে শহর থেকে অনেক পুঁজিপতি গিয়ে বিনিয়োগ শুরু করেন। পাশাপাশি যে জমিতে অন্য চাষ আবাদ হত সেখানে চা বাগান তৈরিতে জমির চরিত্র বদলে যাচ্ছে বলে প্রশ্ন ওঠে। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ ক্ষুদ্র চা বাগানের মালিক গ্রামেরই বাসিন্দারা। তা ছাড়া জমির চরিত্র বদলের চেয়েও বরং যে জমিতে চাষ করেও চাষি ফসলের ন্যায্য মূল্য পেতেন না সেখানে ক্ষুদ্র চা বাগান তৈরির মধ্য দিয়ে সমস্যা মিটছে।” স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমেই ক্ষুদ্র চা বাগান গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে বলেন তিনি। যেখানে ন্যুনতম ৫০ জনকে নিয়ে ওই গোষ্ঠী গড়ে ওঠে। ক্ষুদ্র চা বাগানগুলি অনেক ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন না মেলায় সমস্যার কথাও জানান। এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান বলেন, “রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার প্রয়োগে চা উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। তাতে ক্ষুদ্র বাগানগুলি থেকে উৎপন্ন চা বিদেশের বাজারে রফতারি সুযোগ বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.